Monday, 5 June 2017

200 Best movie list of all time

কথা দিয়েছিলাম ২০০ মুভির লিস্ট নিয়ে হাজির হবো৷ কিন্তুু খেয়াল করে দেখলাম টোটাল মুভি লিস্ট হলো ২৯০ টা এবং ফেইসবুকে বোধহয় এটাই প্রথম পোস্ট যেখানে ক্যাটাগরি করে সেরা ২৯০ টা মুভির লিস্ট দেওয়া আছে৷
ধন্যবাদ যারা হেল্প করেছেন৷
*রোমান্টিক*
1) A Moment to Remember
2) My Girl and I
3) Marriage Is a Crazy Thing
4) Always
5) My Sassy Girl
6) Once in a Summer
7) Christmas in August
8) Deiji
9) Oasis
10) ...ing
11) More Than Blue
12) Pairan
13) The Classic
14) Premam
15)Bangalore Days
16) Ohm Shanthi Oshaana
17) 100 Days of Love
18) Ennu Ninte Moideen
19) Ok kanmoni
20) love story
21) Me Before You
22) Titanic
23) Romeo Juliet
24) The Notebook
25) You have got mail
26) The Princess Bride
27) Singin' in the Rain
28) Before Midnight
29) Rabne banadi jodi
30) Dilwale Dulhania Le Jayenge
31) Veer-Zaara
32) Devdas
33) Arya 1,2
34) Roman Holiday
*থ্রিলার/সাইকো/রহস্য ধাঁচের*
35) আয়নাবাজি
36) বোমকেশ সিরিজের মুভি
37) ফেলুদা সিরিজের মুভি
38) ঈগলের চোখ
39) বেডরুম

Tuesday, 23 May 2017

মিশরীয় পুরানের আদি গ্রন্থ সমূহ





বুক অফ দ্য ডেড
 

মৃতের বই নামটি প্রাচীন মিশরীয়দের দেওয়া নাম। মিশরীয় এই বইটিতে জাদু, সম্মোহন এবং প্রচলিত বিধিবদ্ধ উপাসনার নির্দেশাবলী সংগৃহিত করা হয়েছে, যা মৃত ব্যক্তির মৃত্যর পরবর্তী জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজন হবে। এইটি সাধারণভাবে সূর্য এবং সূর্য দেবতার রাতে যাত্রা গল্পতে মনোনয়ন দেয় এর বিভিন্ন আবির্ভাবে এবং খারাপ শক্তিসমূহের সঙ্গে সাপ আপোফিস সহ তার লড়াই, যারা তাকে রাত্রিতে থামতে চেষ্টা করে, যাতে প্রভাতে উদয় করতে না পারে। মৃতের বই সাধারনত একটি প্যাপিরাস (মিশর দেশীয় নলখাগড়া দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি গোটানো কাগজ) এ লেখা হত এবং মৃত ব্যক্তির কফিনে অথবা কবরে লাশের কাধে রাখা হত। এটি মধ্যরাজ্যের কফিনে লেখার মধ্য দিয়ে প্রাচীন রাজ্যের পিরামিডে লেখার সঙ্গে বিবর্তন আরম্ভ করার একটি দীর্ঘ পদ্ধতির সৃষ্টি করে ছিল। বইয়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিচ্ছেদ কফিনে লেখার আগে থেকে এর উৎপত্তি হয়। 



বিশেষভাবে, বইটি প্রয়োজন হবে তার জীবযাপনের নৈতিক আচরণের সাহ্মী প্রস্তুত করতে, যা মৃত ব্যক্তি বিচারক ওসিরিস এর সামনে পেশ করবে। পরে পাপাইরেস কাগজটি মৃত ব্যক্তির কফিনে অথবা কবরের কহ্মে রাখা হত তার ধন-সম্পদের সাথে এবং সাজসজ্জা প্রয়োজনীয় গণ্য করা হতো আত্মা ভ্রমণের জন্য। 



প্রাথমিকভাবে লেখাগুলো কবর কক্ষের দেয়ালে আঁকা হয়েছিল। মধ্য রাজ্যেতে ব্যবহার করা হয়েছিল সারকোফাগুসের উপরে হাইআরাগ্লিফ রং করার জন্য এবং অষ্টদশ রাজবংশ থেকে কেবল পাপাইরেসে লিখা শুরু হয়। এই ভাবে, মিশরীয় প্রত্নতত্ত্বরা অনেক সাহ্মী পেয়েছে মমি করণের এবং অনেক রাজবংশের সাধারণ মৃত্যর। 



বুক অফ গেটস 

বুক অফ গেটস বা দরজারগুলোর বই হল নতুন রাজ্যের সময়কালীন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন মিশরীয় অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার গ্রন্থ। গ্রন্থটিতে সাধারণভাবে, একটি সম্প্রতিক মৃত আত্মার পরবর্তী জীবনের যাত্রার কথা, কিছু নিয়ম, রাত্রিতে সূর্য দেবতার পাতাল অতিক্রম এবং সেখানে খারাপ শক্তিসমূহ তার মধ্যে রয়েছে আপোপিস সাপ তাকে সকালে উঠে বাধা দেয়, এর বিরুদ্ধে তার লড়াইের কথা বর্ণনা করে। 



মৃত আত্মাকে যাত্রাপথে অনেকগুলো দরজা অতিক্রম করতে হয়। প্রত্যেক দরজা একটি ভিন্ন দেবীর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, এবং মৃত আত্মাকে সেই বিশেষ চরিত্রের দেবীকে চিনতে হবে। গ্রন্থে ইঙ্গিত করে যে, কিছু লোকেরা এই যাত্রায় সহ্মম হয়, কিন্তু যারা সহ্মম না হয় তাদেরকে একটি অগ্নির হ্রদে ফালানো হয়, যেখানে তারা দৈহিক তীব্র যন্ত্রণায় ভুগবে। 



আজ "বুক অফ গেটসের" সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত প্রসঙ্গটি হচ্ছে মিশরীয়দের মনুষ্যত্বের জাতি ভেদ করণ, তারা রীতিসম্মত চারটি শ্রেণীতে ভাগ করেছে "মিশরীয়", "এশিয়াটিক", "লিবিয়ান" এবং "নুবিয়ান"। এ গুলো ফুটিয়ে তুলে ধরে পরবর্তী জীবনে ঢুকতে। 



নতুন রাজ্যের অনেক কবরসহ, হোরেমহেব থেকে রামসেস ফেরাউনদের কবর গুলোতেও গ্রন্থটি এবং চিত্রটি দেখতে পাওয়া যায়। এগুলো সেননেডজেম এর কবরেও দেখতে পাওয়া যায়। সে ছিল দেইর এল-মেদিনা গ্রামের একজন শ্রমিক, চিত্রশিল্পি এবং কারিগর, যে নতুন রাজ্যের ফেরাউনদের কবর গুলো তৈরি করেছে। 



বুক অফ দ্য আর্থ
 

বুক অফ দ্য আর্থ হল নতুন রাজ্য এবং পরের রাজবংশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন মিশরীয় অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার গ্রন্থ।এই অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া গ্রন্থটির নাম রাখে ছিল প্রাচীন মিশরীয় লোকেরা। বিভিন্ন গবেষকের মাধ্যমে এটি অনেক নামে পরিচিত হয়েছে। হার্টওয়েক আল্টেনম্যালার একে "বুক ডেজ আকার", পিয়নকাফ একে সূর্য গোলকের সৃষ্টি, এরিক হোরনিং একে পৃথিবীর বই বলে পরিচয় দিয়েছেন। 



বুক অফ ব্রেথিং 

বুক অফ ব্রেথিং বা শ্বাসপ্রশ্বাসের বই পরবর্তী যুগ এবং রোমান যুগের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন মিশরীয় অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ার গ্রন্থ। প্রত্নতত্ত্ববিদরা দুটি বই সনাক্ত করেছে: একটি "বুক অফ রেসপরেইশনস", এটি ইসিস তার ভাই ওসিরিস এর জন্য সম্পাদনা করে এবং এর আরও বেশি আধুনিক সংস্করণ "বুক অফ ব্রেথস" এটি থোথ সম্পাদনা করে। এই বইগুলো পাপিরিতে হায়রাটিক লিপি এবং ডেমোটিক লিপিতে লিখা হয়েছে কিন্তু এটি ওসত্রাকেনেও লিখা খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। 



শ্বাসপ্রশ্বাসের বই বলা হয় কারণ বইটি শুরু হয় এই ভাবেঃ 
"শ্বাস‌প্রশ্বাসের বইয়ের শুরুতেই ইসিস তার ভাই ওসিরিসকে পুনোর জীবিত করার চেষ্ঠা করে, আপনার দেহ জ্যোতিময় করা জন্য, পুনরায় আপনার সারবত্তা পুনর্যৌবনতে ..." 
এবং আরোঃ 
"আপনার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব স্থায়ী, আপনার দেহ দীর্ঘস্থায়ী, আপনার মমি উন্মেষিত ... " 
একে "শ্বাস‌প্রশ্বাসের অনুমতি" ও বলা হয়ে থাকে। জোসেফ স্মিথ পাপিরি তে, এটি করেছে আম্মোনের যাজক, হোর। 

ভয়নিখের রহস্যময় প্রাচীন পান্ডুলিপি, এখনও রহস্যের জন্ম দিচ্ছে


পান্ডুলিপি কথাটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ঊঠে ধুলিধুসর কত গুলো কাগজের সমষ্টি – যা একজন লেখকের বহু সাধনার ফসল, একজন প্রাকাশকের কাঙ্খিত জিনিস অথবা একজন পাঠকের কৌতুহল, প্রচীন পান্ডুলিপি সংগ্রহ করা বা সংরক্ষন করা অনেকের পেশা। পান্ডুলিপি কিনে চড়া দামে বিক্রি করা এক লাভজনক ব্যাবসাও বটে ।কিছু কিছু পান্ডুলিপি ঘিরে তৈরী হয়েছে অনেক অনেক রহস্যময়তা, গল্প গাথা 

তেমনি এক পান্ডুলিপি “ভয়নিখের পান্ডুলিপি। এই পান্ডুলিপি রহস্যময়তার শেষ নেই। ভয়নিখের পান্ডুলিপি পাওয়া যায় আজ থকে ৮৫ বছর আগে। ভয়নিখ ছিলেন নিউ ইয়র্ক শহরের এক পুরানো বই ব্যাবসায়ী। তার নেশা আর পেশা ছিল পুরানো পান্ডুলিপি সংগ্রহ করে পরে সুযোগ মত চড়া দামে বিক্রি করা।এ ভাবেই পুরানো বইর মধ্যে থেকে হঠাৎ করেই ভয়নিখ পেয়ে যান আলোচ্য পান্ডুলিপি। প্রথমে তিনি বুজে উঠতে পারেননি যে ওটা এত আলোচার বিষয় হবে। বিক্রি করে দিলেন। কিন্তূ হাতছাড়া হবার পর বুজতে পারেন এর মূল্য। কিন্তূ ততদিনে রাগে দঃখে মাথার চুল ছেড়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা। 

তবে ভয়নিখে লাভের মধ্যে লাভ হয়েছে একটাই পান্ডুলিপির সাথে তার নাম চিরদিনের জন্য জড়িয়ে গেছে। রহস্যময় এই পান্ডুলিপি নিয়ে এত গবেষনা আলোচনা হয়েছে যা বলার মত না। কিন্তূ এত গবেষনা করেও এর মূল রহস্য আজ পর্যন্ত কেউ বের করতে পারেনি। সম্ভব হয়নি এর মুল রহস্য উদ্বার করার। সৃষ্টি হয়েছে নানা গুজব। 

গুজবের একটিহ হল – পান্ডুলিপিটি সে সব রহস্যময় আলকেমিদের কোন একজনের যারা অপরসায়নের মাধ্যমে সোনা তৈরীর চেষ্টা করতেন, এবং পান্ডুলিপিতে সেই সোনা তৈরীর গোপন কথা বলে দেয়া হয়েছে। আবার কেঊ কেঊ মনে করতেন পান্ডুলিপিতে জোতিবিদ্যার কথা লেখা আছে- মহাকাশ বিদ্যার গো্পন রহস্য এই পান্ডুলিপিতে লেখা আছে বলে কেঊ কেউ নিঃসন্দেহ। আবার একদল মনে করেন পৃথিবী তৈরীর গুপ্ত কথা এখানে লেখা আছে।যারা আত্না পরোলৌকিক তা নিয়ে নাড়াচাড়া করেন তাদের জোড় দাবী এই পান্ডুলিতে আত্নার গোপন রহস্য, মৃত্যুর ওপারের কথা বলা হয়েছে, আরো লেখা আছে কিভাবে আত্নাকে ডেকা আনা যায় তার পূরো গোপন প্রক্রিয়া। 

রহস্য আরো ঘনীভূত হল যখন গবেষনার পর মোটামুটি জানা গেল পান্ডুলিপিটি সত্তরের দশকের বিখ্যাত মধ্যযুগের ইংরেজ রজার বেকনের। বেকন যেহেতু নিজেই রহস্যময় ব্যাক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন আর নিজেও অনেক রহস্যময়তার জন্ম দিয়েছেন। মধ্যযুগের এই পন্ডিত নাড়াচাড়া করেননি এমন কোন শাখা নেই। পদার্থবিজ্ঞান, গনিত, অপরসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, জোতিষশাস্ত্র সর্বোপরি আধুনিক বিজ্ঞানের এমন কোন শাখা নেই যা নিয়ে তিনি ভাবেননি। বিজ্ঞানের বর্তমান অনেক আবিসস্কার তিনি সেই সত্তর দশকে লিখে রেখে গেছেন তার “মিরাবিলিস” নামক বইয়ে। যেগুলোর অনেকগুলোই পরবর্তিকালে সত্যি বলে প্রমানিত হয়েছে। অনেক ভবিষ্যত বানী করছে নস্ত্রাদামুর মত যা মিলে গেছে। তিনি যে আত্নার সাথে কথা বলতেন এবং তাদের কাছ থেকে ভবিষ্যতের কথা শুনতেন এ কথাও সমসাময়িক অনেকের লেখায় আসছে। আলকেমিষ্টদের সোনা তৈরীর কথা তিনি বিশ্বাস করতেন। 

নানারকম বিস্ময়কর ক্ষমতার অধিকরী রজার বেকনের পান্ডুলিপি পাওয়া গেছে শুনে নড়েচড়ে বসলেন গবেষকরা এর অর্থোদ্বারের জন্য। কিন্ত হাজার চেষ্টা করেও তারা “ক” অক্ষর ও বুজতে পারলেন না। কেননা পান্ডুলিপিতে ব্যাবহার করা হয়নি এমন কোন বিষয় নেই। সংখ্যা, ফুল, ফল, জ্যামিতিক নকশা, গ্রহ নক্ষত্র ছবি থেকে পদার্থ, আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের এ হেন বিষয় নাই যা তিনি ওই পান্ডুলিপিতে লিখে যাননি। এক মহাদূর্বোধ্য ধাধা। 

কিন্তু এই ধাধা দেখেও থেমে থাকলেন না গবেষ্করা, অনেক চেষ্টা চরিত্রর পর যা জানা গেল পান্ডুলিপিটির মূল মালিক ছিলেন রোমান সম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট রুডলফ। রুডলফ জানতেন এটি রজার বেকনের লেখা। তাই তিনি তা যত্নের সাথে সংরক্ষন করেন। ১৬১২ সালে সম্রাট দ্বিতীয় রুডলফ মারা গেলে অনেক হাত ঘুরে সেটি প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিখ্যাত বিজ্ঞানী মার্কাস মার্কির হাতে আসে। তিনি তা অত্যান্ত যত্নের সাথে সংরক্ষন করেন। ১৬৬৬ সালের কথা । মার্কির শিক্ষা গুরুবিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যামেনসিয়াস কির্চার কে মার্কির একটি চিঠি থেকে স্পষ্ট বুজা যায় পান্ডুলিপিটি সত্যি রজার বেকনের। 

এরপর ইতালির রোম থেকে ১৬ মাইল দূরে সিসোরোর প্রাসাদের ধবংসাবাশেষের মধ্যে থেকেই সম্ভবত আত্নপ্রকাশ করে।সুযোগ সন্ধানী ভায়োনিখের দূর্দান্ত নেশার কারনে ওটা স্বাভাবিক ভাবে তার হাতে আসে। অবশ্য প্রচুর টাকার নিলামে। ভয়নিক ওটা বৈধ ভাবেই মনড্রাগন কলেজের কাছ থেকে কেনে ১৯১২ সালে। 

ভয়নিখের এই রহস্যময় পান্ডুলিপি নিয়ে অতিসাম্প্রতিক এক গবেষনায় পান্ডুলিপি গবেষক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট ব্রুমবাও আবিস্কার করেন এতে আলকেমীর ওপর বিক্ষিপ্ত কিছু কথা ও আধ্যত্নিক কিছু জটিল সংকেত আছে। যার অনেক কিছুই তিনি বুজেননি। সম্ভবত অমরত্বের একটা ব্যাপারেও আভাস দেয়া আছে। এত কিছুর পর ও কম্পুটারের এই উৎকর্ষতার যুগেও ভয়নিখের এই পান্ডুলিপি এখন ও রহস্যের আধার। 

সূত্রঃ 
Click This Link 
http://www.world-mysteries.com/sar_13.htm 

প্রাচীন যুগের শয়তান উপাসনা।




অতি প্রাকৃত শক্তির উপাসনা করা মানুষের প্রাচীনতম আচারের অংশ। মানুষ যখন থেকে মানুষ হয়ে উঠেছে তখন থেকেই অলৌকিক সত্বার কল্পনা করা তার প্রতি পুর্ন অনুগত্য প্রদর্শন মানুষের জীবনের অংশ। খুব সম্ভবত নিজের অন্তর্নিহিত ভয়ের বহির্প্রকাশ থেকেই যাবতীয় আধিভৌতিক চর্চার জন্ম। মানুষের যাপিত জীবিনের একটা বড় অংশ জুরে আছে এই প্রথা। কখনো শুভ কখনো অশুভ রুপে । 
আধিভৌতিক শক্তির এই উপাসনা মানুষ করে গেছে ।তার সভ্যতার অজস্র অগ্রগতির পাশে হাত ধরেই চলেছে ব্যাখ্যার অতীত কিছু মানবীয় আবেগ। মানুষের অশুভ শক্তি উপাসনার কিছু কথা আজকে বলব। 

প্রকৃতির মতই মানুষেরও দ্বৈত আছে। সে সত্বার প্রবল্যই জন্ম দিয়েছে ভালো মন্দ, আলো অন্ধকার, ঈশ্বর শয়তানের। শয়তান উপাসনা বা স্যাটানিজম এমন একটি শব্দ যা মানুষের আদিম বিশ্বাসের সাথে জড়িত। যাতে সাধারণভাবে শয়তানের ওপর ভক্তি বা প্রশংসাকে বোঝানো হয়ে থাকে। হিব্রু বাইবেল অনুসারে যে মানুষের বিশ্বাসের ওপর আঘাত করে সেই শয়তান। গ্রিক নিউ টেস্টামেন্টে আরো বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়, যেখানে যিশুর প্রলুদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে বুঝানো হয়েছে। আব্রাহামিক ধর্মে শয়তানকে তুলনা করা হয়েছে বিপথগামী দেবদূত বা দানব হিসেবে যে মানুষকে খারাপ কাজ বা পাপ করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। মানুষ শয়তান এবং ঈশ্বরের ধারনা সৃষ্টি করেছে মূলতঃ নিজেকে দায়মুক্তি দেয়ার উদ্দেশে। 

হায়ারোগ্লিফিক্স এ সেটের উপাসনাঃ 


প্রাচীন মিশরে খৃস্টপুর্ব ৫০০০ অব্দে থেকে শয়তান উপাসনার কথা পাওয়া যায়। শয়তানের প্রতিভু সেট/সেথ ছিলো মৃত্যু, জ্বলন্ত সুর্য। ক্ষুধা,তৃষনা, বিশৃ্ংখলা, হিংস্রতা ঘৃনা আর অশুভের দেবতা। মিশরীয় পুরানে সেট একজন ক্রোধ সম্পন্ন শক্তিমান ভীতিকর দেবতা যিনি দক্ষিনের থিবস নগরীর রক্ষক। রুক্ষতা খরা অজন্মার প্রতীক সেট ছিল এক ভয়ের চরিত্র। ধংশ আর মানুষের ক্ষতির প্রধান কারন হিসাবে দায়ি করা হয় সেটকে। থীবসে সেটের মন্দিরে উপাসনায় কুখ্যাত পুরোহিত্রা ডেকে আনতে পারতো ভয়াবহ বিপর্যয়। মিশরের তানিশ শহরে সেটের প্রকান্ড মন্দিরে যুদ্ধ দেবতা রুপে তাকে পুজা করা হতো। সেথ এর অশুভত্ব সত্ত্বেও প্রাচীন মিশরের ফারাওগন সেথ- এর উপাধি গ্রহন করতেন। মজার ব্যাপার মিশরীয় অশুভের প্রতীক সেটের সাথে ইহুদী একেশ্বরবাদের জীহোভার অনেক স্থানে মিল রয়েছে। 


উপরের ছবিতে মধ্যে জন নারগেল। 

প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় শয়তানের উপাসনাঃ ৪০০০ খৃস্টপুর্বাব্দে মেসপটেমিয়ায় ধারবাহিক ভাবে সর্ব প্রথম বসতি গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দেয়া সুমেরিয়রা।সুমেরিয়দের ধারাবাহিকতায় খৃস্টপুর্ব ৩০০০ অব্দে আক্কদিয়রা প্রাচীন মেসোপটেমিয়ায় এসে মেসোপটেমিয়ায় এসে বসতি গাড়ে। এরাই ব্যাবিলনিয়ান,আশিরিয়ান পরবর্তিতে ইহুদী ও আরবদের পুর্ব পুরুষ। এনলিল ইয়া অন্যন্য ভালো দেবতার পাশাপাসি মেসপটেমিয়ার শয়তান উপাসকরা উপাসনা করতো প্লেগ আর মৃত্যুর অশুভ দেবতা নারগালের। নারগল দেখতে ছিলো কুকুরের মাথা,মানুষের দেহ, ঈগলের পা আর সিঙ্ঘের থাবার সংমিস্রনে তৈরি বিকট এক দানব। প্রাচীন নিনেভ,ব্যাবিলন আর আশুর নগরের ধংসাবশেষে এখনো অসংখ্য ভীতিকর মুর্তি দেখা যায়। মেসোপটেমিয়া মানুষ হর্ডস নামের এক অপদেবতারও উপাসনা করতো। সুমেরীয়রা লামেসতু নামের একটি খারাপ দেবতার উপাসনা করতো যার সাহায্যে সদ্য প্রসুত শিশুদের মৃত্যু কামনা করা হতো। 

কিউনিফর্মে পাওয়া লামাশতুর মুর্তিঃ 


প্রাচীন ফিনিশিয়রা (লেবানন) উপাসনা করতো “ম্যামন ” এর। হিব্রু বাইবেলে “ম্যামন” হচ্ছে ধন সম্পদ আর প্রাচুর্য নিয়ন্ত্রকারি শয়তান। 

হিব্রুদের শয়তানঃ 
সেমেটিক জাতিদের মধ্যে মানব ইতিহাসে হিব্রুদের অবদান অনেক। বিশেষ করে নৈতিকতা ও ধর্ম সংক্রান্ত ব্যাপারে। তবে ওল্ড টেস্টামেন্টের যুগের প্রারম্ভিক দিকেও ধর্মে শয়তানের কোন ভুমিকা নেই। এখানে ঈশ্বরই সর্বেসর্বা অর্থাৎ কর্তার ইচ্ছা কর্ম। সে যুগের মানুষের চেষ্টা ছিল ঈশ্বরকে সব সময় তুষ্ট রাখার অপ্রাণ চেষ্টা করা। ঈশ্বর প্রসন্ন থাকলেই দেশ সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে কেবল ভালো বা শুভ পরিস্থিতি বিরাজ করবে আর কোন কারনে ঈশ্বর অসন্তুষ্ট হলেই মানুষের উপর ঈশ্বরের অভিশাপ ধেয়ে আসে এটাই ছিল সে যুগের প্রচলিত বিশ্বাস। 

সেসময় শয়তান হিসাবে যাকে মোটামুটি গুরুত্ব দেয়া যায় সে হচ্ছে বাআল হাবাদ। ক্যানানাইটদের বেশির ভাগ এই উর্বরতার দেবতা বাল এর উপাসক ছিলো আর হিব্রু দেবতা জিহোভা প্রধান প্রতিদ্বন্দী হওয়ায় বাআল কে ইহুদি ও খৃস্টান ধর্মে শয়তানের একজন অন্যতম প্রতিভু আখ্যা দেয়া হয়। যা পরে ইসলামও গ্রহন করে। বাইবেল মতে বিল জীবাব নামের শয়তান যার নামের অর্থ “মাছির রাজা” বাআল হিসাবে প্রাচীন প্যালেস্টাইনে উপাসিত হত। 

আধুনিক যুগে শয়তান উপাসনাঃ 
আধুনিক স্যাটানিজম প্রথম সবার নজরে আসে ১৯৬৬ সালে শয়তানের চার্চ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।আধুনিক শয়তানের দলগুলো নানা ভাগে বিভক্ত হলেও প্রধান দু’টি ধারা হচ্ছে আস্তিক স্যাটানিজম ও নাস্তিক স্যাটানিজম। আস্তিক শয়তানের দলগুলো শয়তানকে পূজা করে একটি অতিপ্রাকৃতিক দেবতা হিসেবে যিনি প্রকৃতই দয়ালু।অন্যদিকে নাস্তিক শয়তানের দলগুলো নিজেদের নাস্তিক মনে করে এবং শয়তানকে মনে করে মানুষের খারাপ বৈশিষ্ট্যের একটি প্রতীক হিসাবে। 

আস্তিক স্যাটানিজমঃ আস্তিক স্যাটানিজম-এ যা প্রাচীনপন্থী বা আধ্যাত্বিক স্যাটানিজম নামেও পরিচিত, শয়তানকে দেবতা হিসেবে উপাসনা করা হয়।আস্তিক স্যাটানিজমকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, যাতে কালো যাদুর উপর বিশ্বাস স্থাপন যা শয়তানকে পূজার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে। আস্তিক স্যাটানিজমে শিথিলায়নের রীতি এবং আত্নার উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্ত। আস্তিক স্যাটানিজম প্রাচীন সূত্রগুলো থেকেও অনুপ্রেরণা লাভ করে (১৯৬০ সালের স্যাটানিক বাইবেল-এর আগের সূত্র) যেমন ১৮৬২ সালের বই ’’স্যাটানিজম ও ডাকিনীবিদ্যা’’। আরেকটি দলকে আস্তিক স্যাটানিজম ভাগে ফেলা যায়, যাদের নাম ’’বিপরীত খ্রিস্টান’’।এই শব্দটি একটি খারাপ শব্দ হিসাবে করে অন্যান্য আস্তিক শয়তানের দলগুলো। খ্রিস্টানরা অভি্যোগ করে যে বিপরীত খ্রিস্টানরা ব্ল্যাক মাস-এর চর্চা করে থাকে । 

নাস্তিক স্যাটানিজমঃ 
নাস্তিক স্যাটানিজম একটি ধর্ম যা লাভেয়ান স্যাটানিজম নামেও পরিচিত।১৯৬৬ সালে আন্তন লাভেয়ান এই ধর্ম প্রচার শুরু করে। এর শিক্ষা গুলো আত্নকেন্দ্রিকতা, স্বভোগ ও চোখের জন্য চোখ নৈতিকতার ওপর প্রতিষ্ঠিত। আন্তন লাভেয়ান শয়তানের দলেরা নাস্তিক এবং অজ্ঞেয়বাদ-এ বিশ্বাসী, যারা শয়তানকে মানুষের সহজাত সুপ্ত প্রবৃত্তির প্রতীক মনে করে। নাস্তিক শয়তানের দল একটি ছোট ধর্মীয় দল যারা কোন ধরণের বিশ্বাসের সাথে জড়িত নয় এবং যার সদস্যরা নিজের ইচ্ছা পূরণে সচেষ্ট থাকে, বন্ধুদের প্রতি সদয় থাকে ও তাদের শত্রুদের আক্রমণ করে।তাদের বিশ্বাসগুলো স্যাটানিক বাইবেল-এ লিপিবদ্ধ যা শয়তানের চার্চ দেখাশোনা করে। 


শয়তানকে র‍্যাংকিং অনুযায়ি বিভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমনঃ- লুসিফার, বিল জীবাব, মোলোখ, ম্যামন, আজাজেল, অ্যাস্মোডিয়াস এরা নিউ টেস্টামেন্টের বিভিন্ন স্তরের ক্ষমতা অনুযায়ি শয়তান। 

ইসলামে শয়তানের নাম রাখা হয়েছে “ইবলিশ”,ইসলামে “ইবলিশ” চিত্রিত হয়েছে ঈশ্বরের পরে সব চেয়ে বেশী শক্তিশালী ক্ষমতাধর ব্যক্তি চরিত্রে। প্রাচীন আরবের উর্বরতারর ও ভাগ্যের দেবী ত্রয় লাত উজ্জা মানত ইসলাম ধর্ম অনুযায়ি শয়তানের অংশ। শয়তান এদের মাধ্যমেই একবার ইসলামের পয়গম্বরকে বিভ্রান্ত করেছিলো। 

পরবর্তিতে মধ্যযুগে এক সময় নাইট টেম্পলারদের বিরুদ্ধে সলোমনের প্রথম মন্দিরের নীচে আবিস্কৃত ধংশাবশেষ এর কাছে শয়তান উপাসনার অভিযোগ ছিলো। 

তথ্যসুত্রঃ 
THE HISTORY OF THE DEVIL AND THE 
IDEA OF EVIL 
FROM THE EARLIEST TIMES TO THE PRESENT DAY 
by 
PAUL CARUS 
ও অন্যান্য 

পৃথিবীর ভয়ংকর সেইসব সভ্যতার ভয়ংকর সেই সব মানুষরুপী বন্যজন্তুদের গল্প

আমরা যারা age of empire গেমটি খেলি তারা হয়তো অনেক পুরনো সভ্যতার নাম জানি তাছাড়া ওই সভ্যতাগুলো কেমন ছিল,মানুষগুলোই বা কি খেত কি করত তা জানার আগ্রহও কিন্তু অনেকের আছে।আজকে age of empire এর সেই হিংস্র সভ্যতা গুলো এবং এর মত আরও কিছু বর্বর গোত্র নিয়েই আমার পোস্ট।সে সময়ের কথা বলব যখনকার মানুষ গুলোকে আপনি চাইলেই স্রেফ জন্তু বলে চালিয়ে দিতে পারবেন।কেন বলছি??বর্তমানে আমরা যে সভ্যতা দেখছি,আমাদের চারপাশের মানুষগুলোর নীতি নৈতিকতার যে নুন্যতম জ্ঞান আছে পৃথিবীতে এই ব্যাপারগুলো সবসময় এমনি ছিল তা সত্যি নয়।আজকের দিনে যেগুলো শুধুমাত্র জন্তু জানোয়ার বা কোন বিকৃত রুচিবোধের মানুষ করতে পারে বলে আমাদের ধারনা কিছু কিছু সভ্যতা ছিল যেখানে মানুষ এসব করত তাদের প্রাত্যহিক জীবনের একটা অংশ হিসেবে,হেসে খেলেই,এইসব অনেকটা ডাল ভাত খাওয়ার মত সহজ কাজ ছিল তাদের কাছে।
প্রথমেই বলব সেল্টিকদের কথা।যুদ্ধ বিগ্রহে পারদর্শী এই জাতিটি পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম বর্বর একটি জাতি।সেই সময়ে মাথা শিকারি নামে তাদের ভাল নামডাক ছিল।সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে ব্যাপারটা তা হল এরা যখন কারো সাথে যুদ্ধে জিতে যেত তখন তারা তার মাথা শরীর থেকে আলাদা করে ফেলত এবং বাড়ি ফিরার সময় সেটি ঘোড়ার গলায় বেধে নিয়ে আসত।ভাবুনতো অইরকম একটা দৃশ্যের কথা যেখানে একটা মানুষ যুদ্ধে জিতে তার শত্রুর মাথা কেটে ঘোড়াই বেধে নিয়ে আসছে যে মাথা থেকে ছুইয়ে ছুইয়ে পরছে তাজা রক্ত।উফফ... বীভৎস।এখানেই শেষ নয় বাড়িতে এসে তারা এটা সিডার তেল নামে এক ধরনের তেল দিয়ে সংরক্ষন করত।এভাবে একেকজনের অনেক মাথা জমত আর কার কাছে কত মাথা জমল সে সংখ্যাই নির্ধারণ করত কে ভাল যোদ্ধা আর কে নয়।আর যখন তাদের বাড়িতে কোন অতিথি আসত তারা নিয়ম করে তাদের কাছে থাকা মাথাগুলো অতিথিকে দেখাতো খুব গর্বের সাথে।সেলটিক যোদ্ধা

এইবার আসি মাওরিদের কথায়।মাওরিরা নিওজিলান্ডে বসবাস করে অনেক আগ থেকেই এমনকি ইউরোপিয়ানরা ওখানে যাওয়ার আগ থেকেও।এরা সেল্টিকদের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে ছিল।সত্যি কথা বলতে কি ওদের কাজকারবার এমন ছিল যে ওদেরকে আপনি সাক্ষাৎ রাক্ষস বলে মেনে নিতে পারেন।শত্রুকে হত্যা করে তারা তাকে দিব্যি পুড়ে জলসানো মাংস গুলো খেত খুব মজা করে।একবার হল কি??সেটা ছিল ১৮০৯ সাল।মাওরিদের সমাজের মোড়লের ছেলেকে ইউরোপিয়ানরা অপমান করল।রক্ত উঠে গেল মাওরিদের মাথায়।তারা ইউরোপিয়ানদের জাহাজে হামলা করল এবং ৬৬ জনের প্রায় সবাইকে মেরে ফেলল।তারপর মৃতদেহগুলোকে সাগরপাড়ে নিয়ে খেয়ে ফেলল যেন তারা আয়োজন করে পিকনিক করছে।এই ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী অল্প যে কয়েকজন নাবিক বেঁচে ছিলেন তারাই।মাওরি আদিবাসী

আমেরিকার নিনজা বলা হত তাদেরকে।হ্যাঁ আমি দুর্দষ অ্যাপাচিদের কথাই বলছি। আপাতদৃষ্টিতে তারা নাকি অনেক নিরিহদর্শন ছিল।কিন্তু এই মানুষ গুলোর ভয়েই তখনকার আশপাশের অনেক গোত্রের মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত।যুদ্ধ ক্ষেত্রে তারা খুব আদিম কিছু অস্ত্র যেগুলোর বেশীরভাগই কাঠ বা হাড়ের তৈরি।কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সাধারণ অস্ত্র গুলো ব্যাবহার করেই তারা কাবু করে ফেলত ভয়ংকর সব শত্রুদেরকে।তারপর ই ওই শত্রুর উপর নেমে আসত ভয়ংকর পদ্ধতির সব শাস্তি।বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা তাদের পরাজিত শত্রুদেরকে বেধে ফেলত আর জীবন্ত অবস্থাই তারা তার পুরো শরীরের চামড়া তুলে নিত।তারা খুব নিঃশব্দে চলাফেরা করতে পারত আর তাই শত্রুরা তাদের হাতে খুব সহজেই পরাস্ত হত।
সবশেষে এযটেকদের নিয়ে বলব।প্রচণ্ড রকম কুসংস্কারাছন্ন ছিল তারা আর নিজেদের ধর্মের প্রতি ছিল অদ্ভুত অন্ধবিশ্বাস।সান গডের পুজা করত এরা।এতটুকু পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে তাদের কে ভয়ংকর বলার যৌক্তিকতা কোথায়???পুরোটা খুলে বললে আপনি আমার সাথে একমত হবেন বলেই আমার ধারনা।তাদের মতে সান গডের প্রতিদিন রক্তের প্রাচুর্য দরকার।কেননা তাদের মতে রক্তই জীবন এবং পবিত্রতার উৎস।তাই তারা তাদের ধর্মবিশ্বাস এবং গড কে সন্তুষ্ট রাখতে প্রতিদিন ই রক্ত উৎসর্গ করত।এভাবে তারা অনেক মানুষকে মেরে ফেলে তাদের রক্ত গুলো গডের উদ্দেশে উৎসর্গ করত।আনুমানিক ১৩০০ সালের ওই সময়টাকে ইতিহাসে golden era of human sacrifice নামে বলা হত শুধুমাত্র তাদের এই নিষ্ঠুর কাজের জন্যই।শুধু তাই নয় খরার সময় তারা অনেক শিশুকে প্রচণ্ড নির্যাতন করে মেরে ফেলত কারন তাদের বিশ্বাস ছিল যে এই শিশুগুলোর কান্নার পানিতে খুশি হয়ে দেবতা আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাবেন।মাঝে মাঝে তারা দেবতার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুমারী মেয়েদেরকে টানা ২৪ ঘণ্টা নাচাত তারপর তাদের কে হত্যা করে তাদের চামড়া ছিরে নিত আর সেটি উপহার হিসেবে দিত তাদের ধরমগুরুর কাছে।এযটেকদের বীভৎস সেই উপাসনা

উফফ...... এই মানুষ গুলো নিয়ে ভাবতে আর ভাল লাগছেনা।আজকে থাকুক এইখানেই।আপুনি এবং মিয়াভাইরা সবাই ভাল থাকবেন।

পৃথিবীর ভয়ংকর সেইসব সভ্যতার ভয়ংকর সেই সব মানুষরুপী বন্যজন্তুদের গল্প

আমরা যারা age of empire গেমটি খেলি তারা হয়তো অনেক পুরনো সভ্যতার নাম জানি তাছাড়া ওই সভ্যতাগুলো কেমন ছিল,মানুষগুলোই বা কি খেত কি করত তা জানার আগ্রহও কিন্তু অনেকের আছে।আজকে age of empire এর সেই হিংস্র সভ্যতা গুলো এবং এর মত আরও কিছু বর্বর গোত্র নিয়েই আমার পোস্ট।সে সময়ের কথা বলব যখনকার মানুষ গুলোকে আপনি চাইলেই স্রেফ জন্তু বলে চালিয়ে দিতে পারবেন।কেন বলছি??বর্তমানে আমরা যে সভ্যতা দেখছি,আমাদের চারপাশের মানুষগুলোর নীতি নৈতিকতার যে নুন্যতম জ্ঞান আছে পৃথিবীতে এই ব্যাপারগুলো সবসময় এমনি ছিল তা সত্যি নয়।আজকের দিনে যেগুলো শুধুমাত্র জন্তু জানোয়ার বা কোন বিকৃত রুচিবোধের মানুষ করতে পারে বলে আমাদের ধারনা কিছু কিছু সভ্যতা ছিল যেখানে মানুষ এসব করত তাদের প্রাত্যহিক জীবনের একটা অংশ হিসেবে,হেসে খেলেই,এইসব অনেকটা ডাল ভাত খাওয়ার মত সহজ কাজ ছিল তাদের কাছে।
প্রথমেই বলব সেল্টিকদের কথা।যুদ্ধ বিগ্রহে পারদর্শী এই জাতিটি পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম বর্বর একটি জাতি।সেই সময়ে মাথা শিকারি নামে তাদের ভাল নামডাক ছিল।সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে ব্যাপারটা তা হল এরা যখন কারো সাথে যুদ্ধে জিতে যেত তখন তারা তার মাথা শরীর থেকে আলাদা করে ফেলত এবং বাড়ি ফিরার সময় সেটি ঘোড়ার গলায় বেধে নিয়ে আসত।ভাবুনতো অইরকম একটা দৃশ্যের কথা যেখানে একটা মানুষ যুদ্ধে জিতে তার শত্রুর মাথা কেটে ঘোড়াই বেধে নিয়ে আসছে যে মাথা থেকে ছুইয়ে ছুইয়ে পরছে তাজা রক্ত।উফফ... বীভৎস।এখানেই শেষ নয় বাড়িতে এসে তারা এটা সিডার তেল নামে এক ধরনের তেল দিয়ে সংরক্ষন করত।এভাবে একেকজনের অনেক মাথা জমত আর কার কাছে কত মাথা জমল সে সংখ্যাই নির্ধারণ করত কে ভাল যোদ্ধা আর কে নয়।আর যখন তাদের বাড়িতে কোন অতিথি আসত তারা নিয়ম করে তাদের কাছে থাকা মাথাগুলো অতিথিকে দেখাতো খুব গর্বের সাথে।সেলটিক যোদ্ধা

এইবার আসি মাওরিদের কথায়।মাওরিরা নিওজিলান্ডে বসবাস করে অনেক আগ থেকেই এমনকি ইউরোপিয়ানরা ওখানে যাওয়ার আগ থেকেও।এরা সেল্টিকদের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে ছিল।সত্যি কথা বলতে কি ওদের কাজকারবার এমন ছিল যে ওদেরকে আপনি সাক্ষাৎ রাক্ষস বলে মেনে নিতে পারেন।শত্রুকে হত্যা করে তারা তাকে দিব্যি পুড়ে জলসানো মাংস গুলো খেত খুব মজা করে।একবার হল কি??সেটা ছিল ১৮০৯ সাল।মাওরিদের সমাজের মোড়লের ছেলেকে ইউরোপিয়ানরা অপমান করল।রক্ত উঠে গেল মাওরিদের মাথায়।তারা ইউরোপিয়ানদের জাহাজে হামলা করল এবং ৬৬ জনের প্রায় সবাইকে মেরে ফেলল।তারপর মৃতদেহগুলোকে সাগরপাড়ে নিয়ে খেয়ে ফেলল যেন তারা আয়োজন করে পিকনিক করছে।এই ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী অল্প যে কয়েকজন নাবিক বেঁচে ছিলেন তারাই।মাওরি আদিবাসী

আমেরিকার নিনজা বলা হত তাদেরকে।হ্যাঁ আমি দুর্দষ অ্যাপাচিদের কথাই বলছি। আপাতদৃষ্টিতে তারা নাকি অনেক নিরিহদর্শন ছিল।কিন্তু এই মানুষ গুলোর ভয়েই তখনকার আশপাশের অনেক গোত্রের মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত।যুদ্ধ ক্ষেত্রে তারা খুব আদিম কিছু অস্ত্র যেগুলোর বেশীরভাগই কাঠ বা হাড়ের তৈরি।কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সাধারণ অস্ত্র গুলো ব্যাবহার করেই তারা কাবু করে ফেলত ভয়ংকর সব শত্রুদেরকে।তারপর ই ওই শত্রুর উপর নেমে আসত ভয়ংকর পদ্ধতির সব শাস্তি।বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা তাদের পরাজিত শত্রুদেরকে বেধে ফেলত আর জীবন্ত অবস্থাই তারা তার পুরো শরীরের চামড়া তুলে নিত।তারা খুব নিঃশব্দে চলাফেরা করতে পারত আর তাই শত্রুরা তাদের হাতে খুব সহজেই পরাস্ত হত।
সবশেষে এযটেকদের নিয়ে বলব।প্রচণ্ড রকম কুসংস্কারাছন্ন ছিল তারা আর নিজেদের ধর্মের প্রতি ছিল অদ্ভুত অন্ধবিশ্বাস।সান গডের পুজা করত এরা।এতটুকু পড়ে আপনার মনে হতেই পারে যে তাদের কে ভয়ংকর বলার যৌক্তিকতা কোথায়???পুরোটা খুলে বললে আপনি আমার সাথে একমত হবেন বলেই আমার ধারনা।তাদের মতে সান গডের প্রতিদিন রক্তের প্রাচুর্য দরকার।কেননা তাদের মতে রক্তই জীবন এবং পবিত্রতার উৎস।তাই তারা তাদের ধর্মবিশ্বাস এবং গড কে সন্তুষ্ট রাখতে প্রতিদিন ই রক্ত উৎসর্গ করত।এভাবে তারা অনেক মানুষকে মেরে ফেলে তাদের রক্ত গুলো গডের উদ্দেশে উৎসর্গ করত।আনুমানিক ১৩০০ সালের ওই সময়টাকে ইতিহাসে golden era of human sacrifice নামে বলা হত শুধুমাত্র তাদের এই নিষ্ঠুর কাজের জন্যই।শুধু তাই নয় খরার সময় তারা অনেক শিশুকে প্রচণ্ড নির্যাতন করে মেরে ফেলত কারন তাদের বিশ্বাস ছিল যে এই শিশুগুলোর কান্নার পানিতে খুশি হয়ে দেবতা আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাবেন।মাঝে মাঝে তারা দেবতার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুমারী মেয়েদেরকে টানা ২৪ ঘণ্টা নাচাত তারপর তাদের কে হত্যা করে তাদের চামড়া ছিরে নিত আর সেটি উপহার হিসেবে দিত তাদের ধরমগুরুর কাছে।এযটেকদের বীভৎস সেই উপাসনা

উফফ...... এই মানুষ গুলো নিয়ে ভাবতে আর ভাল লাগছেনা।আজকে থাকুক এইখানেই।আপুনি এবং মিয়াভাইরা সবাই ভাল থাকবেন।

অদ্ভুতুড়ে: ব্ল্যাক ম্যাজিক



গ্রিমোরিস 



বিখ্যাত ভৌতিক গল্পকার এইচ, পি, লাভক্রেফট তাঁর বহুল আলোচিত বই দ্যা নেক্রোনোমিকন এ কথিত গ্রিমোরিস শব্দটির খুঁটিনাটি বিশ্লেষন করেছিলেন। শব্দটি এসেছে ফরাসী গ্রামেরি শব্দ থেকে ... যার অর্থ সোজা বাংলায় দিক-নির্দেশনা। 


এইচ, পি, লাভক্রেফট (১৮৯০-১৯৩৭) 

গ্রিমোরিসই হচ্ছে ব্ল্যাক ম্যাজিকের যাবতীয় নিয়মকানুনের সত্যিকারের গাইড বই। শুধু তাই নয় এতে রয়েছে সুপারন্যাচারাল পাওয়ার এই যেমন ধরুন পিশাচ (demon), দেবদূত (angels) এবং দৈত্য-দানোর পুঙ্খানোপুঙ্খ বর্নণা। 


ডেমন নাম সিথুলু (লাভক্রেফটের বর্ণিত) 

বেশিরভাগ গ্রিমোরিসই লিখিত বা সম্পাদিত হয়েছিল ১২৫০ থেকে ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। অথচ সে সময়ে এ ধরণের বই লেখা বা নিজের কাছে রাখা ছিল ভয়াবহ এক ব্যপার। ডাকিনীবিদ্যা চর্চার জন্য বিচারের সম্মুখিন হয়া ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ব্যপার...... যেটা বেশিরভাগ সময় শেষ হত মৃত্যুদন্ডের মধ্য দিয়ে। সবচেয়ে মজার ব্যপার হচ্ছে এত কঠোর নজরবন্দির পরও সেই সময়ের গ্রিমোরিসগুলো এখনো অক্ষত অবস্থায় আছে। কারণটা কি আন্দাজ করুন তো দেখি...... মঠগুলো তাদের লাইব্রেরিতে ওগুলো সংরক্ষণ করেছে নিদর্শনস্বরুপ। 

ম্যাজিকাল আচার অনুষ্ঠান (হুমমম) 

বেশির ভাগ গ্রিমোরিসেই রয়েছে সুসংগঠিত ম্যাজিকাল আচার নীতি। তাহলে চলুন আমরাও (আমার মত যাদের মাথার কয়েকটা স্ক্রু নেই) দেখে নেই আচার পদ্ধতীগুলো। 

প্রথম ধাপ 



একজন ম্যাজিশিয়ানকে আচার অনুষ্ঠান শুরু করার আগে অবশ্যই শারিরীক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে নিতে হবে। আচার-অনুষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে প্রস্তুতিও ভিন্ন ভিন্ন রকম হত...... কোনটার জন্য উপোস তো কোনটার জন্য শীতের সকালে ঠান্ডা জলে স্নান আবার কোনটার জন্য সারা রাত জেগে প্রার্থনা। তবে বেশির ভাগ গ্রিমোরিসই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ জোর (জোড় নয়) দিত। 

দ্বিতীয় ধাপ 



এই ধাপে ম্যাজিশিয়ানকে তার অনুষ্ঠান সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি প্রদান করা হত (ধাপ গুলো গুরুগম্ভির ভাষায় লেখার আপ্রাণ চেষ্টা নিশ্চয় পরিলক্ষিত হচ্ছে) যেমন ধরুন চক, একটা লৌহ দন্ড, একটা ছুরি অথবা একটা জাদুদন্ড। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সব জিনিসগুলোকেও অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করে নেওয়া হত। 
আসুন তবে এবার একটু এগুলোর প্রস্তুতি পর্বে চোখ ফেলি। উদাহরণস্বরুপ, ছুরিটিতে কোন বিশেষ লিপি খোদাই করা থাকতে হবে, রড বিশেষভাবে তৈরি হবে, জাদু 
দন্ডের প্যাটার্ন হবে নির্দিষ্ট বর্নণানুসারে। এছাড়াও জিনিসগুলোকে হতে হবে কুমারী (virgin) অর্থাৎ পূর্বে ব্যবহৃত না এরুপ ...... এক কথায় আনকোড়া। 


তৃতীয় ধাপ 


এই ধাপে রয়েছে বলয় বা চক্র তৈরির কাজ। চক্রটি সাধারণভাবে আঁকা হতে পারে আবার বিভিন্ন ম্যাজিকাল সিম্বল-চরিত্র দিয়ে সাজানো থাকতে পারে। মজার ব্যপার হচ্ছে এই যে, চক্রটি কিন্তু ম্যাজিকের বলয় থেকে মুক্ত। এটাকে ম্যাজিশিয়ানের সেফ হাউস বলা যেতে পারে অর্থাৎ ম্যাজিকের মাধ্যমে ওখানে সুপারন্যাচারাল পাওয়ারের উদ্ভব হবে তার প্রভাব থেকে চক্রটি মুক্ত। 

শেষ ধাপ 

এই শেষ ধাপটিকে বলা যায় মাল্টিডাইমেনশনাল। কারণ অনুষ্ঠেয় ম্যাজিকের উপর ভিত্তি করে এর পালন রীতিও পালটে যায়। এই ধাপটির জন্যই মুলত গ্রিমোরিসের এত কদর। গাইড বুকটি এ ধাপে ব্যপক কাজে আসে। এর মধ্যে বর্ণিত সুত্রানুযায়ী ম্যাজিশিয়ানরা অগ্রসর হতে থাকে...... এটা জরুরী। এ সময় আরো একটা বই বা অন্য কিছুর দরকার হয় যার মাধ্যমে আগত সুপারন্যাচারাল পাওয়ার ম্যাজিশিয়ানের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করতে পারে। 

সতর্কিকরণঃ গ্রিমোরিসে এটা স্পষ্টভাবে বলা আছে প্রত্যেকটি ধাপ ঠিক রীতি অনুযায়ী অবশ্য পালনীয়। একটু ভুলের মাশুল হতে পারে নৃশংস মৃত্যু। 


ফাউঃ 
কালা এবং সাদা জাদুর মধ্যে পার্থক্য 
সত্যিকার অর্থে, কালা এবং সাদা জাদুর অনুষ্ঠান রীতির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্যটা নিহিত রয়েছে জাদুটা কি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে সেখানে। কারো ভালর উদ্দেশ্যে যদি জাদু টা ব্যবহৃত হয় তাহলে সেটা সাদা জাদু। এর বিপরীতটাই কালা জাদু। 
(চলবে) 
অদ্ভুতুড়ে সিরিজ 

তাজমহলঃ লুকানো সত্য??








শ্বাশত ভালবাসার অনন্য নিদর্শন- তাজমহল। মোঘল স্থাপত্যের এই অনন্যশৈলীর মাধ্যমে মানব হৃদয়ের ভালবাসার যে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা সত্যিই প্রশংশনীয়।
মনুষ্য সৃষ্ট পৃথিবীর সাতটি বিস্ময়ের একটি এ তাজমহল ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রায়, যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। এ বিস্ময়ের সৌন্দর্যের বর্ণনা যেকোন ভাষাতীত।


তাজমহলঃ পেছনের কাহিনী 
তাজমহল তৈরি করেন মোঘল সম্রাট আকবরের দৌহিত্র সম্রাট শাহজাহান, তাঁর প্রিয়তম স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগমের (মমতাজ মহল নামেই বেশি পরিচিত) স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে। মমতাজ মহল ছিলেন শাহজাহানের তৃতীয় স্ত্রী। মমতাজ মহল ১৬৩১ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে বুরহানপরে ১৪তম সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। স্ত্রী হারানোর শোকে মুহ্যমান শাহজাহান তাঁর প্রাণপ্রিয় স্ত্রীর স্মৃতির জন্য নির্মাণ করেন ভালবাসার এই অপরূপ নিদর্শন।


সম্রাট শাহজাহান


মমতাজ মহল

তাজমহলের নির্মান শুরু হয় ১৬৩২ সালে; মমতাজের মৃত্যুর এক বছর পর। ২০ হাজারের বেশি শ্রমিকের প্রচেষ্টায় ১৬৪৮ সালে, মমতাজের মৃত্যুর ১৭ বছর পর গম্বুজ গুলোর নির্মান কাজ শেষ হয়; যদিও পুরো কাজ শেষ হয় ১৬৫৩ সালে। শুধু মানুষ নয়; এ মহান কীর্তির ভাগিদার ১০০০ হাতী, যারা নির্মাণের জন্য মার্বেল পাথর পরিবহনে নিয়োজিত ছিল।


তাজমহল (১৮৬০ সালে তোলা)

স্থাপত্যশৈলী
পুরো তাজমহল ১৮০ ফুট উঁচু যার প্রধান গম্বুজটি ২১৩ ফুট উঁচু এবং ৬০ ফুট চওড়া এবং এর চারপাশে চারটি মিনার আছে যার প্রতিটির উচ্চতা ১৬২.৫ ফুট। পুরো কমপ্লেক্সটির আকার ১৯০২X১০০২ ফুট। শুধু তাজমহলটি ১৮৬X১৮৬ ফুট মার্বেল পাথরের উপর নির্মিত। এর প্রধান প্রবেশদ্বার ১৫১X১১৭ ফুট চওড়া এবং ১০০ ফুট উঁচু।
তাজমহল নির্মানের জন্য পাঞ্জাব থেকে আনা হয় স্বচ্ছ মার্বেল পাথর, চীন থেকে সবুজ পাথর, তিব্বত থেকে স্বচ্ছ ও নীল পাথর এবং শ্রীলংকা থেকে নীলমনি। তাছাড়া ভারত, পাকিস্তান, পারস্য ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৮ রকমের মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরি করা হয় এই অনন্য স্থাপত্য।
• তাজমহলের প্রধান ডিজিইনার হলেন ইরানের বিখ্যাত স্থপতি ওস্তাদ মুহাম্মদ আফেনদি।
• গম্বুজগুলো ডিজাইন করেন ইসমাইল আফেনদি
• লাহোরের কাজিম খান ছিলেন প্রধান স্বর্ণকারক
• দিল্লির চিরঞ্জীলাল হলের প্রধান ভাস্কর
• ইরানের আমানত খান হলেন খোদাই শিল্পী


তাজমহলের প্রধান প্রবেশদ্বার


তাজমহলের অভ্যন্তর

বিস্ময়কর গম্বুজঃ 
তাজমহলের গম্বুজগুলো হল অন্যতম মনোমুগ্ধকর বস্তু।গম্বুজের সাদা মার্বেল গুলো সূযোর্দয়ের সময় গোলাপি আভা ছড়ায়। গোধুলিতে অপসৃয়মান সূর্যের বিভিন্ন রঙের আলো প্রতিফলন করে। আর রাতের বেলা পূর্ণিমার আলোয় গম্বুজগুলো যেন মুক্তোর মত চকচক করে। ভরা পূর্ণিমার ভালবাসার এ মহাস্থাপনা সোনালি আর নীল আলোয় লুকোচুরি খেলে। আর কুয়াশা মাখা দিনে ভালবাসার এ স্তম্ভ যেন মেঘের গায়ে ভেসে বেড়ায়। প্রচলিত আছে, গম্বুজগুলো থেকে যে রঙ-বেরঙের আলোর ছটা বিচ্ছুরিত হয় তা নারীর আবেগ ও অনুভুতিকেই প্রকাশ করে।


যমুনার কোল ঘেঁষে....


সূর্যাস্তের আলোয় রক্তিম তাজমহল

আরো কিছু তথ্যঃ
• মমতাজ মহল মারা যাওয়ার পর প্রথম তাঁকে সমাহিত করা হয় জয়নাবাদ বাগানে। ৬ মাস পর তাঁকে পুনরায় সমাহিত করা হয় আগ্রার তাজমহলে (তখনও তাজমহল নির্মিত হয়নি)।
• মমতাজ মহলের সমাধিস্থলে আল্লাহতায়ালার ৯৯ নাম খোদাই করা আছে।
• সম্রাট শাহজানের সমাধিতে খোদাই করা তাঁর মৃত্যু দিবস-- ২৬ শে রজব দিবাগত রাত্রি, ১০৭৬ হিজরি।
• ইতিহাস বলছে তাজমহল তৈরিতে সম্রাট শাহজাহানকে সেই সময়ের হিসাবে ৪১১ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৬ রুপী ৭ আনা ৬ পয়সা গুনতে হয়েছিল।
• ভারতবর্ষে এ গল্প এখনও প্রচলিত যে সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মানের পর নির্মান শ্রমিকদের হাতের কবজি কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে ধরিত্রীতে দ্বিতীয় তাজমহল তৈরি না হয়।
• মমতাজ মহলের মৃত্যুর পর সম্রাট শাহজাহান দুই বছর শোক পালন করেন, বেশিরভাগ সময় রাজকর্ম বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ একা থাকতেন। এর পর তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেব সিংহাসনে আরোহন করেন এবং শাহজাহানকে আগ্রার কেল্লায় বন্দী করেন। বন্দী অবস্থায় কেল্লা থেকেই তিনি তাজমহলের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন এবং বন্দী দশাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রিয়তমা মমতাজ মহলের সমাধির পাশেই তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
• যদি আপনার প্রিয়জনকে নিয়ে তাজমহল ভ্রমণ করতে চান তাহলে পূর্ণিমার রাতে তাজমহল দর্শন করতে ভুলবেন না। রাতের জোছনা মাখা তাজমহলের রূপ, সোনায় মোড়ানো গম্বুজ আর সবুজ চাদরের লনের তুলনা এ ধরিত্রীর কারো সাথে সম্ভব নয়।


এইখানেই ঘুমিয়ে আছেন সম্রাট শাহজাহান এবং তার প্রিয় "তাজ"


তাজমহলঃ লুকানো সত্য??
উপরে যা বললাম তা কমবেশি সবাই জানেন। কিন্তু এবার একটু নড়েচড়ে বসুন। কারন এখন যা বলতে যাচ্ছি তা হয়ত অনেকের কাছেই নতুন ও অন্যরকম মনে হতে পারে।

আমাদের চেনা-জানা তাজমহলের ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন প্রফেসর পি.এন. অক (Professor P.N. Oak-- Taj Mahal: The True Story বই এর লেখক)। তিনি দাবী করেন যে তাজমহল বেগম মমতাজ মহলের সম্মানে নির্মিত প্রেমের সমাধিস্থল নয়; বরং এটা প্রাচীন দেবতা শিব (যাকে আগে বলা হত “তেজ মহালয়”) এর মন্দির যেখানে আগ্রার রাতপুতরা পূজা অর্চনা করত!! পরে শাহজাহান একে তাঁর মৃত স্ত্রীর স্মরণে স্মৃতিশালা হিসেবে গড়ে তোলেন।

ইতিহাস অনুসন্ধানে তিনি দেখতে পান যে শিব মন্দিরটি সম্রাট শাহজাহান অন্যায়ভাবে জয়পুরের মহারাজার (জয় সিং) কাছ থেকে দখল করেন। সম্রাট শাহজাহান তাঁর নিজস্ব দিনপঞ্জীতেও (বাদশাহনামা) উল্লেখ করেছেন যে, জয় সিং এর কাছ থেকে আগ্রার এক চমৎকার প্রাসাদোপম ভবন মমতাজ মহলের সমাধিস্থলের জন্য বেছে নেয়া হয়। এবং এর জন্য জয় সিংকে অনত্র জমিও দেয়া হয় সম্রাট শাহজাহানের পক্ষ থেকে।

“তাজমহল” নাম নিয়েও প্রফেসর অক সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মোগল আমল (এমনকি সম্রাট শাহজাহানের আমলেও) দলিলাদি ও কোর্টের নথিপত্রে কোথাও “তাজমহল” নাম উল্লেখ নাই! তাছাড়া ওই সময়ে কোন মুসলিম দেশে কোন প্রাসাদ/ভবনের নাম “মহল” রাখার প্রচলন ছিল না!
তাজমহল নাম এসেছে মমতাজ মহল থেকে---এটাও তাঁর কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি দুইটি কারনে। প্রথমতঃ তাঁর প্রকৃত নাম কখনই মমতাজ মহল ছিল না। দ্বিতীয়তঃ কেউ কারো নামে কোন প্রাসাদের নামকরন করতে চাইলে তার নামের প্রথম দুই অক্ষর বাদ দিয়ে (মমতাজ থেকে “মম” বাদ দিয়ে তাজ) নাম রাখবেন--এটাও সহজে মেনে নেয়া যায়না।

তিনি আরো বলেন, মমতাজ আর শাহজাহানের ভালবাসার গল্প মুলতঃ রূপকথা যা ওই সময়ের লোকদের মুখ থেকে সৃষ্ট; কারন ওই সময়কার কোন সরকারী নথিপত্রে বা গ্রন্থে মমতাজ-শাহজাহানের প্রেমের কথা উল্লেখ নাই।

পাশাপশি প্রফেসর অক কিছু ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন যা প্রমাণ করে তাজমহল শাহজাহান শাসনামলের নয়!-
১। নিউ ইয়র্কের আর্কিওলজিস্ট মারভিন মিলার (Marvin Miller) যমুনা নদীর তীর সংলগ্ন তাজমহলের দেয়ালের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে যে কার্বন পাওয়া যায় তা সম্রাট শাহজাহনের শাসনামলেরও ৩০০ বছরের পুরনো!
২। ইউরোপিয়ান পর্যটক যিনি ১৬৩৮ সালে আগ্রা ভ্রমন করেন (মমতাজ মারা যাওয়ার মাত্র সাত বছর পর) তিনি তার গ্রন্থে সেসময় তাজমহল তৈরির কোন সূত্র উল্লেক করেননি।

প্রফেসর অক তাজমহলের স্থাপত্যশৈলীর কিছু অসামঞ্জস্যতার কথা তুলে ধরে বলেন যে তাজমহল মুলতঃ হিন্দু মন্দির ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন তাজমহলের অনেক কামরাই শাহজাহানের আমল থেকেই তালবদ্ধ করে রাখা হয়েছে যা এখনও জনসাধারনের অজানা রয়ে গেছে। প্রফেসর অক দৃঢ়তার সাথে দাবী করেন যে ওই কামরাগুলোর একটাতেই আছে দেবতা শিবের মস্তকবিহীন মূর্তি যা সচরাচর হিন্দুদের মন্দিরে দেখা যায়।

ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সংঘাতের আশংকায় ইন্দিরা গান্ধির সরকার প্রফেসর অকের বই বাজার থেকে উঠিয়ে নেয় এবং ভারতে এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়।

...থাকুক কিছু রহস্য, রহস্য আছে বলেই তাজ হয়ত আজ এত সুন্দর...!!


সবশেষে তাজমহল প্রেমীদের কাছে একটি "বলুন দেখি" টাইপ প্রশ্নঃ

তাজমহলের কোন পাশ দিয়ে যমুনা নদী প্রবাহিত হয়েছে??
--উত্তর/দক্ষিণ/পুব/পশ্চিম

মহাবিশ্বের ১০টি বিষ্ময়কর ছবি



1. Sombrero Galaxy: 
Sombrero Galaxy আবিষ্কৃত হয় মার্চে ১৭৬৭। পৃথিবী থেকে ২৮ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই স্পাইরাল গ্যালাক্সীতে ৮০০ বিলিয়ন সুর্য্যের মতো নক্ষত্র আছে। এর ব্যাস ৫০,০০০ আলোকবর্ষ। 









2. Ant Nebula 
নাহ! এটি কোন গ্যালাক্সী নয়। একটি নেব্যুলা , দেখতে অনেকটা পিপড়ার মতো বলে এর এই নাম করন। এটি মুলত ধুম্রমেঘ(cloud of dust) এবং গ্যাসে পরিপুর্ন। এটি পৃথিবী হতে ৩,০০০~৬,০০০ আলোকবর্ষ দূরুত্বে অবস্থিত। 






3. Eskimo Nebula 
হ্যা, এটিও একটি নেব্যুলা পৃথিবী হতে ৫,০০০ আলোকবর্ষ দূরুত্বে অবস্থিত। 






4. Cat's Eye Nebula 
লর্ড অফ দ্যা রিংস এর Sauron এর মতো লাগতেছে নাহ? ;) এটিও একটি নেব্যুলা। ৩,৩০০ আলোকবর্ষ দূরুত্বে অবস্থিত। 






5. Hourglass Nebula 
(হপায় ৫টা গেলো? নাহ আর কোন কতাই কমু নাহ...:| ) 






6. Cone Nebula 





7. Omega Nebula 






8. NGC 2207 and IC 2163 
নাহ! এইটা কোন নেব্যুলা না, দুইটা গ্যালাক্সীর(NGC 2207 এবং IC 2163) মুখমুখী সংঘর্ষ হচ্ছে। হে হে হে... গ্যালাক্সী-গ্যালাক্সী মারা-মারি :D 




9. Eye of God 
আস্তে আস্তিক ভাইয়েরা, ক্ষেপে যাইয়েন নাহ! এর আসল নাম হচ্ছে Helix Nebula। দেখতে অনেকটা সেই রকম কিনা তাই!! 





10. Hand of God 
আবারো বলছি, এটা একটি পালসার ,পৃথিবী হতে ১৭,০০০ আলোকবর্ষ দূরুত্বে অবস্থিত। 






বিঃদ্রঃ ১০নং টা Chandra X-Ray Observatory থেকে তোলা হয়েছে।