Wednesday, 27 March 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৯ রাতগল্প (পর্ব-০২ ) #সাইকো “আমাগো তো ডেইলিই প্রেম করতে হয়, এইডাই তো আমাগো কাম হিহিহি হিহিহি” “আমি সেকথা বলিনি, আসলে দৈহিক সম্পর্ক ব্যাতিত মানুষের প্রেমের আরো একটা পরিভাষা আছে যেটার উৎস হচ্ছে মানুষের অতি পবিত্র মন, আমি আসলে মনের ভালবাসার কথা বলছি।” জরি ভ্রু কুচকে বলে, “কি জানি এইসব জানিনা, বুঝিও না”। পরক্ষণেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি। “জরি, আপনার বোঝার জন্য কথাগুলো হয়তো বেশ ভারী হয়ে যাবে তারপরও বলি, আচ্ছা আপনার কি কখনো এমন অনুভূতি হয়েছে যে কারো প্রতি আপনার এক অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করে বা করছে, আসলে কি বলবো? অর্থাৎ যখন আপনি চান যে সে সর্বদাই আপনার পাশেপাশেই থাকুক, আপনার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো সে জানুক গুরুত্ব দিক কিংবা তার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো আপনাকে জানাক, এবং আপনারও নির্দিষ্টভাবে ঠিক তার সাথেই কথা বলতে ইচ্ছে করে, ভালো লাগে। সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। তাকে, তার ব্যাক্তিত্বগুলিকে এমনকি সবকিছু কেই। সে যখন দীর্ঘ সময় আপনার থেকে দূরে থাকে আপনার তার সাথে খুনসুটি, হাসি ঠাট্টা কিংবা অজস্র অভিমান সহ এমন অনেক কিছু কিংবা অতি সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম অনূভুতি যা আপনার মনে এক অন্যরকম আবেগ কিংবা ছটফটানির সৃষ্টি করে, নাড়া দেয়। এবং যাকে নিয়ে আপনি হয়তো প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন?..হ্যাঁ, আসলে এরকম সহস্র আবেগ কিংবা অনূভুতির একত্রিত রুপই হচ্ছে ভালবাসা?? এমনটা হয়েছে কখনো আপনার?” না সূচক মাথা নাড়ে জরি। “আসলে, জানেন, এরকম অসংখ্য অনূভুতির শতকরা আশিভাগই মানসিক। যার মাঝে শারীরিক চাহিদার প্রায় অনেকটাই নিষ্ক্রিয় থাকে। এরকম আবেগ খুব সহজে আসেনা, কিন্তু যখন আসে এর ভালো কিংবা খারাপ দুভাবেই এর তীব্রতাগুলো দেখিয়ে দিয়ে চলে যায়। আর আমার সাথেও ঠিক তাই ঘটেছে। একবার নয় জীবনে দু দুবার আমার এমনটা হয়েছে। প্রথমবার ঘটেছিল তখন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছিলাম সবে। আর দ্বিতীয়টী ঘটেছে অতি সম্প্রতি একেবারে মাঝযৌবনে। প্রথম টি ছিলো মায়া আর দ্বিতীয়টি ছিলো ছলনা। ছলনা ভুলে গেলেও মায়া কাটাতে পারিনি। আমি বরং ছলনার গল্পটিই শোনাই। তখন সবেমাত্র ফ্রান্স থেকে ফিল্মমেকিং এর উপরে লেখাপড়া গুটিয়ে দেশে ফিরেছি। বলতে পারেন দেশের ভালোবাসার টানেই ফিরেছিলাম। সময় কাটাতে তাই হাতে ক্যামেরা তুলেছিলাম। সেসময় ঘুরেবেড়ানো কিংবা ফটোগ্রাফিই ছিলো আমার মূল আকর্ষণ ও কর্মযজ্ঞ। এমতাবস্থায়, নিতু নামের এক মেয়ের সাথে আকস্মিক ভাবেই পরিচয়। আর পরিচয় টা পরিণয়ে গড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। বলতে পারেন, বেশ আবেগ ও তীব্রতা দিয়েই ভালোবেসেছিলাম নিতুকে। বলা চলে তখন পর্যন্ত আমার চোখে বেশ ভালো মেয়ে ছিলো নিতু। ভূবন ভোলানো হাসিতে মাতাতো চারপাশ! হৃদয়ে অদ্ভুত কাঁপুনি দিয়ে চলে যেতো। খুনসুটি, হাসি ঠাট্টা, বিগত দু এক বছরে একসঙ্গে ঈদ, নিউ ইয়ার, বর্ষা, ফাল্গুন-বসন্ত, ভ্যালেন্টাইনস ডে, জন্মদিন কিংবা পয়লা বৈশাখ কত কি যে পেরিয়েছি, তার ইয়ত্তা নেই। তবে অদ্ভুত ব্যাপার ছিলো কি জানেন? মাঝেমাঝে এবাহানা সে বাহানায় এটা সেটা এমনকি সরাসরি পয়সা কড়ি চাইতো। তারপরও তেমন কিছুই মনে করিনি। তুলে দিতাম নির্দিধায়। তবে একদিন ওর এক প্রতিবেশী ছেলের কাছে ওর ব্যাপারে কিছু কথা শুনে কেমন যেন খটকা লেগে যায় মনে। তারপরও কেন যেন নিজ কান ও সিক্সথ সেন্স কে কেনোক্রমেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। মাথায় ক ‘দিন ধরে ব্যাপারটা বেশ ঘুরপাক খেলো। মস্তিষ্কের ভেতরে রীতিমতো ছোটখাটো একটা ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলো। একসময় মন ও মস্তিষ্ক দুটোই বলে বসলো, “হয়ে যাক না একটা পরীক্ষা।” আমিও অমনি সাড়া না দিয়ে পারলাম না। ও আমার পরিবার সম্পর্কে প্রায় সবকিছুই জানতো। আমার বাবা গ্রামের অঢেল সম্পত্তি বিক্রি করে কবে শহরে এসেছিলেন, ব্যাবসা শুরু করেছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। একদিন আচমকাই বলে বসলাম, বাবার ব্যাবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে আর আমাদের ইন্ডাস্ট্রি টাও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। শরীফ মাজহার নামে এক ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী কিনে নিচ্ছেন। যদিও আদৌ শরীফ মাজহার কিনেন নি বরং বাবার কিছুদিনের অবসরের কারণে তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। আরেকদিন তাকে বললাম যে গাড়িটা বুঝি বেচে দিতে হচ্ছে। এমনি করে ধীরে ধীরে ওর মাথায় একরকম গেথে দিতে লাগলাম আমার অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় যা হয়তো ক্রমশঃই নিম্নমুখী হচ্ছে। পাকা অভিনেতার মতো দু একদিন তো ওর কাছে ধারও করলাম। আমার অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পেতে পারে এমন সব জায়গায়ই মোটামুটি সিলগালা করে দিলাম। একদিন শোনা গেলো বাড়ি নিলামে উঠছে, বাবা আবারো গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে মাস কয়েকের জন্য নিজেকে পুরোদস্তুর আপাদমস্তক বদলে ফেলা। নিজেকে কেমন যেনো অর্থাভাবে জর্জরিত এক প্রাণী করে তুললাম। এসব করতে গিয়ে নিজেকে মাঝে মাঝে পাগল মনে হতো। মনে হতো আমি কি তবে পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমার কি মাথা বিগড়ে গেলো?? না, আমার মাথা বিগড়ে যায় নি ঠিকই কিন্তু নিতুর মন, তার চাওয়া পাওয়াগুলো ক্রমশঃই বিগড়ে যাচ্ছিলো। রোপণকৃত চারাগাছের ফল পেতে শুরু করেছিলাম কেবল। প্রতিক্রিয়াগুলোও বেশ দ্রুতই আসলো, অবশ্য এইছলে যে শুধু ভালবাসার মানুষটিকেই চিনতে শুরু করেছিলাম তা নয়, আশপাশের অনেক শুভাকাংখীদের মুখোশাবৃত চেহারাটাও চামড়া ছেড়ে বেরুতে শুরু করলো। অনেকটা একঢিলে দুইপাখি মরার মতো। বসে বসে “A friend in need is friend indeed” লাইনটা মাথায় বারবার চলে আসতো। সবাই কেমন যেনো এড়িয়ে চলতে চাইতো। মাঝে মাঝে হাসতাম। এদিকে ধীরে ধীরে নিতুর সঙ্গে দুরত্ব বাড়লো, রঙচঙে ভালবাসার রংগুলোও ফিকে হতে লাগলো। পৃথিবীর সবকিছু কেমন এড়িয়ে এড়িয়ে চলতে শুরু করলো। কিন্তু সে দুরত্ব বজায় রাখা খুব খুব খুবই কঠিন ছিলো। কয়েক দিনের ব্যাবধানে দু বার দুটি ভিন্ন ছেলের সঙ্গে নিতুকে আবিষ্কার করলাম, একবার প্রায় চোখাচোখি হয়ে গেলো। নিতু খানিকটা হতভম্ব হলো, বললো আমার বন্ধু। পরবর্তীতে অবশ্য তাদের পরস্পরের অতি ঘনিষ্টতার ব্যাপারটাও আবিষ্কার করে ফেলেছিলাম। মাঝে মাঝে ভাবতাম সব ছেড়েছুড়ে ওকে গিয়ে বলি যে আমি তো আগের মতোই আছি। কিন্তু তাৎক্ষণিক ই মস্তিষ্কের বিচক্ষণতাটা মনের অদ্ভুত দূর্বলতা টাকে সম্পূর্ণরুপে ঢেকে দিতো আর শান্তনা দিয়ে বলতো, ‘ধৈর্য্য ধরো, হয়তো শীঘ্রই নতুন করে চোখ খুলবে’ আর এদিকে আমিও পাকা অভিনেতার মতোই অভিনয় চালিয়ে গেলাম। আমাদের অতি ঠুনকো বিষয়েই কেমন ঘনঘন ঝগড়া বাঁধতে শুরু করলো, আজ এটা তো কাল সেটা নিয়ে। জমতে থাকা অসংখ্য পুঞ্জীভূত মেঘ এবার বিরাট গর্জন আরম্ভ করলো। আমার সাথে একদিন নিতুর তুমুল ঝগড়া বাধলো। সমস্ত অভিযোগ একীভূত হলো। অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেলাম আমি। বিরাটাকার ঝগড়ার মাঝখানেই আচমকা নিতু বলেই বসলো, আমার সাথে তার ভালবাসা টা ছিলো তার জীবনের সবচাইতে বড় ভূল। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ছলনার কাছে ভালবাসা পরাজিত হলো। সে আর এ সম্পর্ক রাখতে চায় না। আমি বেচারা তখন তার কাছে হয়ে গেলাম এক ব্যাবহৃত টিস্যু পেপারের মতো। বিলাসিতা, টাইম পাস, আমার কাছ থেকে এখন আর তার পাওয়ার তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুড়ে যাওয়া সিগারেটের ফিল্টারের মতো এক টোকায় ছুড়ে ফেলে দিলো। ভালবাসার মাটির কলস বছর ঘুরতেই ভেঙে চৌচির। গ্রীষ্মের খরতাপে হৃদয়ও পুড়ে ছাই।


via Facebook https://ift.tt/2FDnt6i

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৯ রাতগল্প (পর্ব-০২ ) #সাইকো “আমাগো তো ডেইলিই প্রেম করতে হয়, এইডাই তো আমাগো কাম হিহিহি হিহিহি” “আমি সেকথা বলিনি, আসলে দৈহিক সম্পর্ক ব্যাতিত মানুষের প্রেমের আরো একটা পরিভাষা আছে যেটার উৎস হচ্ছে মানুষের অতি পবিত্র মন, আমি আসলে মনের ভালবাসার কথা বলছি।” জরি ভ্রু কুচকে বলে, “কি জানি এইসব জানিনা, বুঝিও না”। পরক্ষণেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি। “জরি, আপনার বোঝার জন্য কথাগুলো হয়তো বেশ ভারী হয়ে যাবে তারপরও বলি, আচ্ছা আপনার কি কখনো এমন অনুভূতি হয়েছে যে কারো প্রতি আপনার এক অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করে বা করছে, আসলে কি বলবো? অর্থাৎ যখন আপনি চান যে সে সর্বদাই আপনার পাশেপাশেই থাকুক, আপনার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো সে জানুক গুরুত্ব দিক কিংবা তার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো আপনাকে জানাক, এবং আপনারও নির্দিষ্টভাবে ঠিক তার সাথেই কথা বলতে ইচ্ছে করে, ভালো লাগে। সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। তাকে, তার ব্যাক্তিত্বগুলিকে এমনকি সবকিছু কেই। সে যখন দীর্ঘ সময় আপনার থেকে দূরে থাকে আপনার তার সাথে খুনসুটি, হাসি ঠাট্টা কিংবা অজস্র অভিমান সহ এমন অনেক কিছু কিংবা অতি সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম অনূভুতি যা আপনার মনে এক অন্যরকম আবেগ কিংবা ছটফটানির সৃষ্টি করে, নাড়া দেয়। এবং যাকে নিয়ে আপনি হয়তো প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন?..হ্যাঁ, আসলে এরকম সহস্র আবেগ কিংবা অনূভুতির একত্রিত রুপই হচ্ছে ভালবাসা?? এমনটা হয়েছে কখনো আপনার?” না সূচক মাথা নাড়ে জরি। “আসলে, জানেন, এরকম অসংখ্য অনূভুতির শতকরা আশিভাগই মানসিক। যার মাঝে শারীরিক চাহিদার প্রায় অনেকটাই নিষ্ক্রিয় থাকে। এরকম আবেগ খুব সহজে আসেনা, কিন্তু যখন আসে এর ভালো কিংবা খারাপ দুভাবেই এর তীব্রতাগুলো দেখিয়ে দিয়ে চলে যায়। আর আমার সাথেও ঠিক তাই ঘটেছে। একবার নয় জীবনে দু দুবার আমার এমনটা হয়েছে। প্রথমবার ঘটেছিল তখন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছিলাম সবে। আর দ্বিতীয়টী ঘটেছে অতি সম্প্রতি একেবারে মাঝযৌবনে। প্রথম টি ছিলো মায়া আর দ্বিতীয়টি ছিলো ছলনা। ছলনা ভুলে গেলেও মায়া কাটাতে পারিনি। আমি বরং ছলনার গল্পটিই শোনাই। তখন সবেমাত্র ফ্রান্স থেকে ফিল্মমেকিং এর উপরে লেখাপড়া গুটিয়ে দেশে ফিরেছি। বলতে পারেন দেশের ভালোবাসার টানেই ফিরেছিলাম। সময় কাটাতে তাই হাতে ক্যামেরা তুলেছিলাম। সেসময় ঘুরেবেড়ানো কিংবা ফটোগ্রাফিই ছিলো আমার মূল আকর্ষণ ও কর্মযজ্ঞ। এমতাবস্থায়, নিতু নামের এক মেয়ের সাথে আকস্মিক ভাবেই পরিচয়। আর পরিচয় টা পরিণয়ে গড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। বলতে পারেন, বেশ আবেগ ও তীব্রতা দিয়েই ভালোবেসেছিলাম নিতুকে। বলা চলে তখন পর্যন্ত আমার চোখে বেশ ভালো মেয়ে ছিলো নিতু। ভূবন ভোলানো হাসিতে মাতাতো চারপাশ! হৃদয়ে অদ্ভুত কাঁপুনি দিয়ে চলে যেতো। খুনসুটি, হাসি ঠাট্টা, বিগত দু এক বছরে একসঙ্গে ঈদ, নিউ ইয়ার, বর্ষা, ফাল্গুন-বসন্ত, ভ্যালেন্টাইনস ডে, জন্মদিন কিংবা পয়লা বৈশাখ কত কি যে পেরিয়েছি, তার ইয়ত্তা নেই। তবে অদ্ভুত ব্যাপার ছিলো কি জানেন? মাঝেমাঝে এবাহানা সে বাহানায় এটা সেটা এমনকি সরাসরি পয়সা কড়ি চাইতো। তারপরও তেমন কিছুই মনে করিনি। তুলে দিতাম নির্দিধায়। তবে একদিন ওর এক প্রতিবেশী ছেলের কাছে ওর ব্যাপারে কিছু কথা শুনে কেমন যেন খটকা লেগে যায় মনে। তারপরও কেন যেন নিজ কান ও সিক্সথ সেন্স কে কেনোক্রমেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। মাথায় ক ‘দিন ধরে ব্যাপারটা বেশ ঘুরপাক খেলো। মস্তিষ্কের ভেতরে রীতিমতো ছোটখাটো একটা ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলো। একসময় মন ও মস্তিষ্ক দুটোই বলে বসলো, “হয়ে যাক না একটা পরীক্ষা।” আমিও অমনি সাড়া না দিয়ে পারলাম না। ও আমার পরিবার সম্পর্কে প্রায় সবকিছুই জানতো। আমার বাবা গ্রামের অঢেল সম্পত্তি বিক্রি করে কবে শহরে এসেছিলেন, ব্যাবসা শুরু করেছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। একদিন আচমকাই বলে বসলাম, বাবার ব্যাবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে আর আমাদের ইন্ডাস্ট্রি টাও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। শরীফ মাজহার নামে এক ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী কিনে নিচ্ছেন। যদিও আদৌ শরীফ মাজহার কিনেন নি বরং বাবার কিছুদিনের অবসরের কারণে তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। আরেকদিন তাকে বললাম যে গাড়িটা বুঝি বেচে দিতে হচ্ছে। এমনি করে ধীরে ধীরে ওর মাথায় একরকম গেথে দিতে লাগলাম আমার অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় যা হয়তো ক্রমশঃই নিম্নমুখী হচ্ছে। পাকা অভিনেতার মতো দু একদিন তো ওর কাছে ধারও করলাম। আমার অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পেতে পারে এমন সব জায়গায়ই মোটামুটি সিলগালা করে দিলাম। একদিন শোনা গেলো বাড়ি নিলামে উঠছে, বাবা আবারো গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে মাস কয়েকের জন্য নিজেকে পুরোদস্তুর আপাদমস্তক বদলে ফেলা। নিজেকে কেমন যেনো অর্থাভাবে জর্জরিত এক প্রাণী করে তুললাম। এসব করতে গিয়ে নিজেকে মাঝে মাঝে পাগল মনে হতো। মনে হতো আমি কি তবে পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমার কি মাথা বিগড়ে গেলো?? না, আমার মাথা বিগড়ে যায় নি ঠিকই কিন্তু নিতুর মন, তার চাওয়া পাওয়াগুলো ক্রমশঃই বিগড়ে যাচ্ছিলো। রোপণকৃত চারাগাছের ফল পেতে শুরু করেছিলাম কেবল। প্রতিক্রিয়াগুলোও বেশ দ্রুতই আসলো, অবশ্য এইছলে যে শুধু ভালবাসার মানুষটিকেই চিনতে শুরু করেছিলাম তা নয়, আশপাশের অনেক শুভাকাংখীদের মুখোশাবৃত চেহারাটাও চামড়া ছেড়ে বেরুতে শুরু করলো। অনেকটা একঢিলে দুইপাখি মরার মতো। বসে বসে “A friend in need is friend indeed” লাইনটা মাথায় বারবার চলে আসতো। সবাই কেমন যেনো এড়িয়ে চলতে চাইতো। মাঝে মাঝে হাসতাম। এদিকে ধীরে ধীরে নিতুর সঙ্গে দুরত্ব বাড়লো, রঙচঙে ভালবাসার রংগুলোও ফিকে হতে লাগলো। পৃথিবীর সবকিছু কেমন এড়িয়ে এড়িয়ে চলতে শুরু করলো। কিন্তু সে দুরত্ব বজায় রাখা খুব খুব খুবই কঠিন ছিলো। কয়েক দিনের ব্যাবধানে দু বার দুটি ভিন্ন ছেলের সঙ্গে নিতুকে আবিষ্কার করলাম, একবার প্রায় চোখাচোখি হয়ে গেলো। নিতু খানিকটা হতভম্ব হলো, বললো আমার বন্ধু। পরবর্তীতে অবশ্য তাদের পরস্পরের অতি ঘনিষ্টতার ব্যাপারটাও আবিষ্কার করে ফেলেছিলাম। মাঝে মাঝে ভাবতাম সব ছেড়েছুড়ে ওকে গিয়ে বলি যে আমি তো আগের মতোই আছি। কিন্তু তাৎক্ষণিক ই মস্তিষ্কের বিচক্ষণতাটা মনের অদ্ভুত দূর্বলতা টাকে সম্পূর্ণরুপে ঢেকে দিতো আর শান্তনা দিয়ে বলতো, ‘ধৈর্য্য ধরো, হয়তো শীঘ্রই নতুন করে চোখ খুলবে’ আর এদিকে আমিও পাকা অভিনেতার মতোই অভিনয় চালিয়ে গেলাম। আমাদের অতি ঠুনকো বিষয়েই কেমন ঘনঘন ঝগড়া বাঁধতে শুরু করলো, আজ এটা তো কাল সেটা নিয়ে। জমতে থাকা অসংখ্য পুঞ্জীভূত মেঘ এবার বিরাট গর্জন আরম্ভ করলো। আমার সাথে একদিন নিতুর তুমুল ঝগড়া বাধলো। সমস্ত অভিযোগ একীভূত হলো। অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেলাম আমি। বিরাটাকার ঝগড়ার মাঝখানেই আচমকা নিতু বলেই বসলো, আমার সাথে তার ভালবাসা টা ছিলো তার জীবনের সবচাইতে বড় ভূল। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ছলনার কাছে ভালবাসা পরাজিত হলো। সে আর এ সম্পর্ক রাখতে চায় না। আমি বেচারা তখন তার কাছে হয়ে গেলাম এক ব্যাবহৃত টিস্যু পেপারের মতো। বিলাসিতা, টাইম পাস, আমার কাছ থেকে এখন আর তার পাওয়ার তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুড়ে যাওয়া সিগারেটের ফিল্টারের মতো এক টোকায় ছুড়ে ফেলে দিলো। ভালবাসার মাটির কলস বছর ঘুরতেই ভেঙে চৌচির। গ্রীষ্মের খরতাপে হৃদয়ও পুড়ে ছাই।


via Facebook https://ift.tt/2HJADkc

Tuesday, 26 March 2019

১৪ হাজার চুলের বাতিক সহ এক ফ্রেন্ড আমারে আনবন্ধু করলেন মাত্র । কারন আমি পোস্টে লাইক দিছিলাম।🙄🙄 কিন্ত কথা হইল যদি রিএক্ট না থাকত এরা কোন বাল্ডা ফালাইত। আর লাইক তো জুকার উঠাইয়া দেয় নাই যে দেয়া যাবে না। যতসব বাল ছালের কারবার দেখলাম ফেবুতে আইসা। আর হ্যা ওসব বালের ফলয়ার আমাদের ও ছিল । এখন না সেই ০৯ থেকে ফেবু চালাই। 😠🤬🤬🤬


via Facebook https://ift.tt/2TD4SLk

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৯ রাতগল্প (পর্ব-০১ ) #সাইকো সিগারেটের পুড়ে যাওয়া ফিল্টার এ্যাশট্রে তে গুঁজে দিয়ে, হালকা ধোঁয়া ছেড়ে, মেয়েটির দিকে এবার খানিকটা দৃষ্টিপাত করে আবির। কিছুক্ষণ ধরেই বেশ তাড়া দিচ্ছে মেয়েটি, “হু, কি যেনো বলছিলেন?” “যা করবেন, তাড়াতাড়ি করেন?” মেয়েটির কথায় তেমন কর্ণপাত না করে বেশ শান্ত গম্ভীর গলায় পাল্টা প্রশ্ন আবিরের.. “আপনি কদ্দিন হলো এখানে আছেন?” “ক্যান?” “দরকার আছে বলেই তো জিজ্ঞাসা করছি?” “৩ বছোর” “হু” “কিন্তু আপনে এইগুলা দিয়া কি করবেন?” “কৌতুহল? জানার আগ্রহ বলতে পারেন!” কৌতুহলী দৃষ্টিতে চারপাশে চোখ বোলায় আবির। সিড়ি পেরিয়ে আরো ক ‘টা ঘরের সাথে লাগোয়া এ ঘরটা বেশ ছিমছামই বলা চলে। চার’তলা বাড়ির দোতলার এই মাঝারি আকারের ঘরের ভেতরকার সাজসজ্জা বিবেচনায় তা মোটেই বিলাসবহুল নয়। ঘরের ভেতরে আসবাব বলতে একটা বিছানা, ছোট টেবিলসহ পুরোনো তিনটে সোফা আর আলমারি। বেশিরভাগ জিনিসেই ধূলো জমে আছে। দরজার বা দিকটায় মাঝারি আকারের প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিলও চোখে পড়ে। ওপাশের দরজাটা সম্ভবত আরেকটা রুমের ও কিচেনের। মাঝে মাঝেই ফ্যানের হাওয়ায় উপর থেকে ছাদের চুন খসছে। “হু, কতজন থাকেন এখানে? “আপ্নে এইসব শুইন্না কি করবেন?” “শুনছি, এমনিই” “আপনারে আবার পুলিশ টুলিশে পাঠায় নাই তো” উত্তরে আবির মৃদু হাসে। “হাসেন ক্যান” “পুলিশ?? না না ওসব কেউ নই, তবে ভালবাসার করাতে আচমকাই কেটে যাওয়া ছেড়া ঘুড়ি বলতে পারেন” “তাইলে এইগুলা জিগান ক্যান” “ঐযে বললাম কৌতুহল” বুক থেকে হঠাৎই শাড়ীর আঁচল ফেলে দেয় মেয়েটি। “আপনের কথা শুইনা প্যাট ভরবে না। আমার আরো কাম আছে, তাড়াতাড়ি করেন, আরো দুইজন আইবো” missed several doses of synthroid শাড়ির পড়ে যাওয়া আঁচলটা বুকে জড়িয়ে দেয় আবির। “আজ না হয় অন্যদের নামটা তালিকা থেকে বাদই দিন! আর সেজন্য চিন্তা করবেন না আপনার টাকাও আপনি যথাসময়ে হয়তো সময়ের আগেই পেয়ে যাবেন, আমি অন্যদের মতো ভোগ বিলাসে উন্মত্ত হতে আসিনি, হয়তো অন্যদের মতো আপনার শরীর-মাংসপিন্ড কে গোগ্রাসে গিলবোও না, আসলে জানেন রাতগুলো বড্ড বিষন্ন, হয়তো রাতের বিষন্নতাটা কাটাতে খানিক গল্প করতে আসা। ভোরের আলো ফুটতেই উঠে চলে যাবো” “খালি, খালি এ্যাম্নেই পয়সা দিবেন?” “যদি বলি দেবো?” “কি জানি, এক এক জনের এক এক রকম হাউস, খাড়ান তাইলে আমি একটু বাইরে থেকে আসতেছি” ২০ মিনিট পর… “কোথায় গিয়েছিলেন?” “হিহিহি! বাথরুমে” “ওও..আচ্ছা..তারপর বললেন না তো কতজন থাকেন এখানে?” “আগে পনরো জনেরও বেশি থাকতো..” “এখন?” “এখন আমরা ১৩ জনের মতো থাকি” “বাকীরা কোথায় গেলো” “কেউ চইলা গেছে, ভাইগা গেছে, পুলিশে ধরছে, একটা মাইয়া মরছেও, কি জানি কয়, সুইসাইড খাইসিলো” “আপনার নাম?” “জরি” “চমৎকার নাম?” “আগে নাম আছিলো জেরিন, রুবি বুবু নাম কাইট্টা জরি বানাই দিছে, হিহিহি হিহিহি” “তো মিস জরি, কদ্দুর পড়ালেখা করেছেন আপনি??” “এইডা দিয়া আবার কি করবেন?” “আবারো প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন ঠুকছেন? বললাম তো ওসব পুলিশ টুলিশ কেউ নই আমি, ওকে আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না তো, এক সেকেন্ড!”..পকেট হাতরে কালো মানিব্যাগের চেন টেনে পাঁচটা এক হাজার টাকার নোট গুজে দেয় জরির হাতে!..”আরো লাগবে? লাগলে দেবো সমস্যা নেই এবার আশা করি উত্তর দেবেন” “এইট পর্যন্ত পড়সিলাম, তারপর আর পড়তে পারি নাই” “কেনো?” “ক্যান আবার? অভাবে” জরির কথাবার্তায় চাল-চলনে এখন অবধি বেশ মিশুক বলেই মনে হলো আবিরের। চেহারাতেও বেশ একটা আভিজাত্যের ভাব আছে। অতি দ্রুত মিশে যাওয়ার ক্ষমতা খুব সীমিত সংখ্যক মানুষের থাকে। মাঝরাত্তিরে এক অজানা অচেনা যুবকের সাথে কেমন অল্পতেই বেশ মিশে গেছে মেয়েটা। সহস্র ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মুখ অবয়বে রাজ্যের হতাশা আর একরাশ আতংক নিয়ে বসে থাকে এরা। তারপরও এরা হাসে। অযুত নিযুত কষ্টগুলিকে ছাপিয়ে, আড়াল করে হাসার চেষ্টা করে চলে। লোকে বলে, এমনটা না হলে নাকি খদ্দের টেকে না, আর খদ্দের না টিকলে পয়সা জুটবে না। আসলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়াই তো জীবন, যেটা আজ অবধি আমি শিখে উঠতে পারিনি, বলে নিজেকে মনে মনে খানিকটা গালমন্দ করে আবির। তবে জরিকে মোটেই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত দেখাচ্ছে না। চোখেমুখে কেন যেন এসব কর্মযজ্ঞের লেশমাত্র নেই। বরং মনে হয় চোখজোড়ায় একঝাঁক রহস্য লুকোনো। “জরি, আপনি কাউকে ভালবেসেছেন কখনো?” প্রশ্ন শুনেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি.. “আমাগো তো ডেইলিই প্রেম করতে হয়, এইডাই তো আমাগো কাম হিহিহি হিহিহি” “আমি সেকথা বলিনি, আসলে দৈহিক সম্পর্ক ব্যাতিত মানুষের প্রেমের আরো একটা পরিভাষা আছে যেটার উৎস হচ্ছে মানুষের অতি পবিত্র মন, আমি আসলে মনের ভালবাসার কথা বলছি।” জরি ভ্রু কুচকে বলে, “কি জানি এইসব জানিনা, বুঝিও না”। পরক্ষণেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি। #যদিও এক কুলাঙ্গার কপি করেছিল পুরনো লেখা বলে। তবে সব ওর কাছে নেই। তাই । আর যেহেতু ৪৩ টা সব ই পুনরায় দিব তাই আবার ও দিচ্ছি ।


via Facebook https://ift.tt/2U65BsM

Monday, 25 March 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৪০ দ্যা রেইপ (শেষ পর্ব) #সাইকো টিমটিমে আলোতে চোখ মেলে তারেক । ঘরটা অপরিচিত । দেওয়ালগুলো ধূসর । ছাতে একটা ধুলো জমা বাল্ব । ফ্যানের কোন ব্যবস্থা নেই । সামনে টেবিলের ওপর সাজানো আছে নানা সাইজের সার্জিক্যাল ব্লেড । আর তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কলেজ ফ্রেন্ড তিয়াস । ‘হ্যালো ।’, কঠোর চাউনিটা থেকে একটা শব্দই উচ্চারিত হল । ‘আমি নড়তে পারছি না ।’, মুখ ঘুরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারেক । জবাব না দিয়ে টেবিলের সামনে চলে যায় তিয়াস । তারেকের শরীর হাল্কা কেঁপে ওঠে, প্রথমবারের মত খেয়াল করেছে – শরীরে কোন পোষাক নেই তার । দুই হাত দু’পাশে ছড়ানো । পা দুটো মোটামুটি পঁয়ত্রিশ ডিগ্রী অ্যাংগেলে ছড়ানো অবস্থাতে আটকে রাখা হয়েছে মেঝের সাথে । ঠিক কি ধরণের মেকানিজম ব্যবহার করা হয়েছে তা অবশ্য দেখতে পাচ্ছে না, চোয়ালের কাছে আটকে রাখা হয়েছে বেল্ট দিয়ে । ঘাড় ঘোরানোর কোন সুযোগ পাচ্ছে না সেজন্য । হাতের সার্জিক্যাল নাইফটা ঘুরিয়ে দেখায় তিয়াস, ‘কত নম্বর সাইজ ?’ ‘তে-ত্তেইশ ।’ ‘লীফ শেপড । শার্পেনড অ্যালং ইট’স লিডিং এজ ।’, দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিয়াস, ‘এই ব্লেডের কাজ কি বলতে পারবি ?’ ‘তিয়াস, কি করছিস তুই ?’ ‘সার্জিক্যাল ব্লেড, নম্বর টুয়েন্টি থ্রি । হোয়্যার ডু ইউ ইউজ ইট ?’ ‘টু- ’ ‘হোয়াই ডু ইউ ইউজ ইট ?’ ‘টু মেইক লং ইনসিসন্স -’ ‘লাইক হোয়াট ?’ ‘আপার মিডলাইন ইনসিসন অফ দ্য অ্যাবডোমেন ডিউরিং -’ ‘ডেলিভারি ।’, মাথা দোলায় তিয়াস, ‘তিন্নি কি সেই সুযোগ পাবে কখনও ?’ অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তারেক । ‘কাম অন ! এটা তিন্নিকে নিয়ে – কাম অন, তিয়াস ! তিন্নির ওখানে তুইও ছিলি আমার সাথে !’ মুচকি হাসে তিয়াস, সময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে ব্লেডটার দিকে । প্রেমে পড়েছে যেন । তারপর আস্তে করে বলে, ‘ইয়েপ ! তুই বলেছিলি তিন্নিকে তুই খুন করে ফেলবি । তাই সাথে ছিলাম ।’ ‘কেন খুন করে ফেলব সেটা তোর মনে আছে ? কাম অন, ট্রাই টু ফোকাস !’ ‘তোকে বিট্রে করেছিল মেয়েটা ।’ ‘আমার কি উচিত ছিল না -’, দ্রুত বলে ওঠে তারেক । ‘ছিল ।’, মাথা দোলায় তিয়াস, ‘কিন্তু কে তোকে অনুমতি দিয়েছে মেয়েটাকে ধর্ষণ করার ?’ ‘ধর্ষণ করেছি ? মেয়েটা স্বেচ্ছাতে -’ ‘আমি তোর সাথে ছিলাম । ঘরে ঢুকেই বলেছিলি তুই শাহাদতের কথা জানিস । মনে পড়ে ?’, ঠাণ্ডা চোখে তাকায় তিয়াস ওর দিকে । তারপর ঘ্যাচ করে হাল্কা একটা টান দেয় ব্লেডটা ধরে । doctorate of pharmacy online বাম কাঁধ থেকে বুকে চিরে ডান কাঁধ পর্যন্ত চলে গেছে ক্ষতটা । তারেক কিছুই দেখতে পাচ্ছে না – থুতনিই নাড়াতে পারছে না ও ! এক সেকেন্ড পর আসল যন্ত্রণাটা । আগুন ধরে গেছে যেন ওখানে ! দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে ও ব্যাথাটুকু । তিয়াসের মুখের দিকে চোখ পড়ছে শুধু, ছেলেটা জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে আছে ওর বুকের দিকে । গিলে গিলে খাচ্ছে যেন দৃশ্যটা ! ‘ফর গডস সেক, তিয়াস !’, চোখ মুখ ব্যাথাতে কুঁচকে উঠেছে, তার মাঝে বলে তারেক, ‘স্টপ ইট !’ জবাবে সুন্দর করে হাসল তিয়াস, তারেক প্রথমবারের মত তাকে এভাবে প্রাণখুলে হাসতে দেখছে । ছেলেটা হাসতে জানে ! ‘তোকে এখানে কেন এনেছি জানিস তো ?’, আচমকা গম্ভীর হয়ে জানতে চায় তিয়াস । বড় বড় করে দম নেয় শুধু তারেক । যন্ত্রণাটা সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে । বুক বেয়ে নেমে আসছে আঠালো গরম তরল । চটচটে । ওর নিজেরই রক্ত ! ‘জানতে চেয়েছিলি আমার গল্পের কতটুকু সত্য আর কতটুকু বাস্তব ।’ তারেক গুঙিয়ে ওঠে একবার । ‘না, প্রথমে যে গল্পটার কথা তুই বলেছিলি, রেইপড মেয়েটার বয়ফ্রেন্ড আমি ছিলাম না । কিন্তু মর্গে একবার একটা রেইপড মেয়ে পেয়েছিলাম আমরা । মনে আছে ?’ ‘ওহ – আছে … গড !’, দাঁতে দাঁত চেপে ধরে তারেক, ‘আমাকে নামা তিয়াস । তোর কাহিনী আমি শুনছি -’ ‘বলেছিলাম, মোটরসাইকেল থেকে ছুঁড়ে মারা হয়েছে মেয়েটাকে ?’ ‘মনে আছে, দোস্ত । নামা আমাকে -’, কেঁপে ওঠে তারেকের শরীর । ‘তোরা সবাই বলেছিলি গাড়ি থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল মেয়েটাকে ?’ থমকে যায় তারেক । বুকের ব্যাথাটা এখন গ্রাহ্য করার মত কিছু বলে মনে হচ্ছে না আর । ওর বিস্ফোরিত চোখের দিকে তাকিয়ে আবারও হাসে তিয়াস । ‘তুই … তুই কিভাবে জানলি ওকে মোটরসাইকেল থেকে … মেয়েটাকে তুই রেইপ করেছিলি ?’ ‘মোটামাথাটা খাটাও, দোস্ত ।’, ডান হাতে ঢুকিয়ে দেয় তিয়াস স্ক্যালপেলের ব্লেডের অংশটা । ঘর কাঁপিয়ে চিৎকার করে ওঠে এবার তারেক । নিজেকে ধরে রাখতে পারে নি । ট্রাইসেপে ঢুকিয়ে দিয়েছে শালা ! ‘রশীদ … ওর সাথে তর্ক করছিলি তুই -’, চারপাশটা ব্যাথাতে ঘোলা দেখছে এখন তারেক । ‘পাস করে গেলি ।’, থমথমে হয়ে গেছে আবার তিয়াসের মুখ, ‘রশীদ জানত । আর জানার তো একটাই উপায় । তাই না ?’ হাত দুটো শক্ত করে মুষ্ঠিবদ্ধ করে তারেক । আঙুলের নখগুলো ঢুকে যাচ্ছে তালুর মাংস কেটে, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসছে এখন ধীরে ধীরে, ‘রশীদ ফাইনাল ইয়ারে উঠে আর ক্লাস করতে আসে নি !’ ‘না । আসতে পারে নি ।’, আরেকবার হাত চালায় তিয়াস, তারেকের মনে হয় বামহাতটা জ্বলে পুড়ে গেল । আহত জন্তুর মত গুঙিয়ে ওঠে ও । টপ টপ শব্দ হচ্ছে । দুই হাত ছড়িয়ে বেঁধে রাখাতে মেঝেতে পড়ছে রক্তের ফোঁটাগুলো সরাসরি । ‘আমরা আমার বিল্ডিংয়েই এখন ।’, মুচকি হাসে তিয়াস, ‘বলতে ভুলে গেছিলাম, এই ফ্ল্যাটটাই শুধু আমার না, আমার আরেকটা ফ্ল্যাট আছে চারতলাতে । আমরা সেখানেই এখন ।’ ‘রশীদকে মেরে ফেলেছিলি কেন ?’, চোখের পাতা জোর করে খুলে রেখে জানতে চায় তারেক । ‘মর্গে শুয়ে থাকা মেয়েটাকে আমি চিনতাম ।’, পেছন ফিরে তাকায় তিয়াস । তারেক কিছু বলে না । ‘আমার পিঠাপিঠি খালাত বোন ছিল একটা । নিশি । আমার আপন বোন নেই, এমনটা মনে হয় নি কোনদিন । নিশিকে পেয়েছিলাম । বোনের অভাব আমাকে বুঝতে হয় নি কখনও ।’ তারেক টু শব্দটাও করে না । শারীরিক ব্যাথার সাথে মানসিক ধাক্কাটা ওকে একেবারে স্তব্ধ করে দিয়েছে । ‘মর্গে ওকে ওই অবস্থাতে দেখেছিলাম । সাইকোলজিক্যাল ট্রমার সংজ্ঞাটা বার বার মনে পড়ছিল তখন, বুঝলি । রেজাল্ট অফ অ্যান ওভারহোয়েলমিং স্ট্রেস দ্যাট এক্সিডস ওয়ানস অ্যাবিলিটি টু কোপ অর ইন্ট্রিগেট দ্য ইমোশনস ইনভলড উইথ দ্যাট এক্সপেরিয়েন্স । সাইকোলজিক্যাল ট্রমাতে পড়া যাবে না – জানতাম । জানতাম খালাকে খবর দেওয়ার চিন্তাও করা যাবে না । মেয়েকে এ অবস্থাতে দেখার চাইতে চিরকালের জন্য তাকে হারালেই ভালো করবেন খালা । নিরুদ্দেশ মেয়ের চেয়ে রেইপড মেয়ে একজন মায়ের জন্য অনেক বেশি যন্ত্রণাদায়ক – জানিস তো ?’ ‘সাইকোলজিক্যাল ট্রমা তুই এড়াতে পারিস নি, তিয়াস ।’, দাঁতে দাঁত চেপে বলে তারেক । ‘পেরেছি ।’ ‘তোর কি কোনদিনও মনে হয় নি তোর মাঝে কোন ধরণের মেন্টাল ডিজঅর্ডার আছে ? আগে ছিল না । আমি জানি । তবে এখন কি তোর মনে হয় – মানসিকভাবে তুই সুস্থ ?’ ঘুরে দাঁড়ায় তিয়াস, দু’চোখ জ্বলছে, ‘যে মানুষটা গতকাল একজন মেয়ের ভ্যাজাইনাতে ছুরি মেরেছে তার কাছে আমি সাইকোলজিক্যাল ট্রমা নিয়ে কিছু শুনতে চাই না ।’ ‘শোন, বোনের মৃত্যুর পর -’ ঘ্যাচ করে সার্জিক্যাল ব্লেডটা বাম উরুতে গেঁথে গেছে – বাঁধা অবস্থাতেই ছটফট করে ওঠে তারেক । ‘রশীদকেও এভাবে -’ মুচকি হাসে তিয়াস, ‘রশীদকেও এভাবেই মেরেছি কি না জানতে চাস নে । গতকাল ডিনারের মেনুতে ছিল ও ।’ বাক্যটার অর্থ বুঝতেই কয়েক সেকেন্ড লেগে যায় তারেকের । ‘বুঝতে পারার কথা । ডীপ ফ্রীজ বলে একটা ইনভেনশন আছে মানুষের ।’, জিভ বের করে সার্জিক্যাল ব্লেড থেকে গড়িয়ে পড়া তারেকের রক্ত চেটে খায় তিয়াস, ‘কিপস আওয়ার মীটস টেস্টি ।’ ‘তুই -’ তলপেটে কিছু একটা ঢুকে গেল – তারেক কথাটা শেষ করতে পারে না । এক পা এগিয়ে আসে তিয়াস, ‘প্রোডাকশনের দিক দিয়ে কোন সাহায্য করতে পারছে না ওগুলো । তাই না ?’ তারেক শুধু গোঙায় একবার । ‘শরীরে ঝুলিয়ে রেখে কি লাভ তাহলে ? অন্য কারও প্লেটেই ভালো মানাবে । কি বলিস ?’ তিয়াসের হাত দুটো খুব দ্রুত চলছে এখন । কিছুক্ষণের মাঝেই দেওয়ালে ঝুলন্ত শরীরটার নড়াচড়া থেমে যায় । ইন্টার্নির স্টুডেন্টটির হাত তখনও চলছে । ব্যস্ত হাতে চামড়া ছাড়াচ্ছে একজন মানুষের । যাদের মনে কিছু প্রস্ন উঠতে পারে তাদের জন্য ... [পরিশিষ্ট ] কালো টয়োটাটাকে গতিসীমার চেয়ে অনেক জোরে চালিয়ে এনেও কিভাবে ঢাকার অলিগলি পার করে ফেলল – সেটা নিয়ে বিস্মিত না হয়ে পারে না জাফর । পাশে দাঁড়ানো যুবকের দিকে তাকিয়ে অর্থপূর্ণ হাসি দেয় ও প্রজ্ঞাকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সাহায্য করেছে ছেলেটা । দ্যাট গাই নোজ থিংস । মেডিকেল স্টুডেন্ট । ডেডলি । বিশ্বাস রাখতে পারে না যে মেয়ে – তাকে সরিয়ে দেওয়াটা বিবেকের কাছে বড় কোন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে না । এটা জাফর আগে থেকেই জানত । আর প্রশ্নটা ওদিক থেকে আসেও নি । শুধু সামান্য একটু অতৃপ্তি থেকে গেছে । শেষবারের মত বিছানাতে মেয়েটাকে সে চেয়েছিল নিজের ইচ্ছাতে । কিন্তু প্রজ্ঞা প্রথমেই বুঝে ফেলেছিল ব্যাপারটা । রেপ করা ছাড়া উপায় ছিল না । সরাসরি তার দিকে তাকিয়ে আছে নতুন বন্ধু, জাফর মুখ ঘুরিয়ে দেখে একবার । ‘শুরু করুন ।’, কাঁধ ঝাঁকালো ছেলেটা, মুখ থমথমে । সব সময়ই এমন কি না কে জানে ? বাটি থেকে নিজের প্লেটে তুলে নেয় জাফর । ‘চিকেন বলস ।’, আবার বলে সালেহ তিয়াস, ‘ইন্টারনেট থেকে রেসিপি বের করে রান্না করেছি । হোপ ইউ ওন্ট মাইন্ড দ্য টেস্ট ।’ কিছুক্ষণ চুপচাপ চিবোয় জাফর, তারপর তিয়াসের দিকে ফিরে সামান্য হাসে, ‘টেস্টস গুড, ম্যান । ডেলিশিয়াস !’ আর কিছু না বলে দ্বিতীয় বলটা নিজের প্লেটে তুলে নেয় তিয়াস । ফ্রিজে আছে ভদকার বোতল । আজ রাতে ব্যস্ত থাকতে হবে ওকে ।


via Facebook https://ift.tt/2TzdwdA

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৪০ দ্যা রেইপ (পর্ব - ০৩) #সাইকো এই নিয়ে চতুর্থবার বাজল কলিং বেল । চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে বসে তিয়াস । হাই ঠেকাতে মুখের সামনে নিয়ে এসেছে একটা হাত । গতকালের রাশিয়ান ভদকার ধাক্কা এখনও কাটে নি । টলোমলো পায়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায় ও । তিনজন পুলিশ, দুইজনের হাতে পিস্তল, উদ্যত । তৃতীয়জন এই মাত্র মাথা থেকে ক্যাপ সরালো । তারপর ঝকঝকে একটা হাসি উপহার দেয় তিয়াসের দিকে তাকিয়ে । ‘মি. তিয়াস ?’, একবার হাতের কাগজে নামটা দেখে নেয় সে, ‘সালেহ মোহাম্মদ শোয়াইব তিয়াস ?’ কাঁধ ঝাঁকায় তিয়াস, ‘হ্যাঁ-আআআআম ।’ দ্বিতীয়বারের মত মুখের সামনে হাত নিয়ে এসে উদগত তৃতীয় হাইটিকে ঠেকায় ও । ‘হাতে কি আছে দেখতে পাচ্ছেন তো ?’, চোখের সামনে কাগজ দোলালো মানুষটা । ‘পরিষ্কার । তুলা রাশি, জন্মলগ্নে গ্রহ দেখতে পাচ্ছি । এই সপ্তাহে একবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন । আয়ু স্বল্প, চল্লিশে পৌঁছানোর আগেই অভিযানে মহাযাত্রা করবেন । প্রেমিকার কাছে ছ্যাঁকা খাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, বিপদ এড়াতে মধ্যমাতে ঝোলাতে হবে নীলা । বাম হাতের । ’ পিস্তল ধরা পুলিশদের একজন হা হয়ে গেছে । আরেকজনও আপাতদৃষ্টিতে হা হল, তারপর হা করার কারণটা বোঝা যায় । বাজখাঁই হুংকারটা তিয়াসের কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়, ‘মাদারচো-’ নেতাটি এক হাত তুলতেই থেমে গেছে অবশ্য ছোট পুলিশ । ‘এটা একটা ওয়ারেন্ট, স্যার । আমরা আপনার বাসাতে সার্চ চালাবো ।’ ‘নোপ প্রব –আআম ।’, আরেকটা হাই তুলে বলে তিয়াস । সুড় সুড় করে ভেতরে ঢুকে গেল তিন পাপিষ্ঠ । দুই পা গিয়েই একজন আবার ফিরে আসে অবশ্য, পিস্তলের নল আবারও ঘুরিয়ে ফেলেছে তিয়াসের দিকে, ‘আপনি আমার সাথে এখানে বসছেন ।’ ‘শিওর ।’ ঠিক ত্রিশ মিনিটের মাথাতে পুলিশের গাড়ির পেছনে বসে থানার দিকে রওনা হতে দেখা গেল সালেহ তিয়াসকে । cialis new c 100 * ‘কাল রাতে আপনার সাথে কে ছিল ?’ ‘আমি একাই ছিলাম ।’ ‘গতকাল সন্ধ্যাতে আপনি কোথায় ছিলেন বলবেন কি ?’ ‘উমম, ঠিক কয়টার কথা বলছেন, তখন একটু বাইরে ছিলাম ।’ ‘সাতটা ?’ ‘মামা চটপটির দোকানে । এটা হল আপনার ওভারব্রীজের গোড়াতে – মালি-’ হাত তুলে তাকে থামায় অফিসার, ‘আমি জানি । ওখানে কেউ আপনাকে দেখেছে ?’ ঘাড় চুলকালো তিয়াস, ‘আর কেউ না দেখলেও মামা তো দেখেছেই ।’ ‘আমরা পরে সেটা দেখব । এর পরে আপনি কোথায় ছিলেন ?’ প্যান্টের ভেতরে হাত একটু ঢুকিয়ে ঘ্যাস ঘ্যাস করে চুলকায় তিয়াস, ‘বাসাতে ।’ ‘হাত সরান ।’ ‘জ্বি ?’ ‘পাছার খাঁজ থেকে হাত বের করুন ।’ ‘ও – সরি ।’, বাধ্য ছেলের মত হাত বের করে ও । ‘আপনি বলতে চাইছেন, আপনার সাথে গতকাল আর কেউ ছিল না ?’ সোজা হয়ে বসে তিয়াস প্রথমবারের মত, ‘কি ঘটছে আমাকে কি বলবেন, অফিসার ?’ পাত্তাই দিল না লোকটা, ‘মনে করার চেষ্টা করে দেখুন, আপনার সাথে আর কেউ ছিল কি না ? আমাদের কাছে তথ্য আছে, আপনি আপনার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন ।’ ‘আমি গতকাল কারও সাথে দেখা করতে যাই নি । আপনি কার কথা বলছেন ?’ হেলান দিয়ে বসে পুলিশটি, ‘আপনার বন্ধু তারেক আল জাবেরের সাথে দেখা হয়েছে ইদানিং কালের মধ্যে ?’ একটু মনে করার চেষ্টা করে তিয়াস, ‘ছয় বা সাতদিন আগে শেষ দেখা হয়েছে ওর সাথে । কেন, অফিসার ? ওর কোন কিছু হয়েছে ?’ গলাতে উদ্বেগটা ফোটানোর ক্ষেত্রে কোনরকম কমতি ছিল না তিয়াসের, অফিসারকে দেখে অবশ্য মনে হয় না বিন্দুমাত্র প্রভাবিত হয়েছে সে । ‘তারপরে ? কোথায় ছিলেন চটপটির দোকান থেকে বের হয়ে ?’ ‘বাসাতে । আমার দাড়োয়ানকে প্রশ্ন করে দেখলেই পারেন । অযথা বার বার এক প্রশ্ন করার মানে কি ?’, হাল্কা রাগ ফুটে ওঠে তিয়াসের কণ্ঠে এবার । দীর্ঘ একটা মুহূর্ত তার দিকে তাকিয়ে থাকে অফিসার, ‘আপনার বাসাতে ভদকার দুটো বোতল পাওয়া গেছে ।’ ‘বার থেকে কিনেছি । লিগাল বার । আপনি কি রিসিপ্ট দেখতে চান ?’ ‘সার্চ পার্টি আপনার রিসিপ্ট পেয়েছে । আমি বলছি না অবৈধ ওগুলো । কিন্তু আপনার সাথে যে ড্রিংকারটি ছিল তার ব্যাপারে জানতে চাইছি আমি ।’ ‘কেউ ছিল না ।’ ‘বলতে চাইছেন আপনি একাই দু বোতল মেরে দিয়েছেন ? কংগ্র্যাচুলেশন্স ।’, সন্দেহ ঝরে পড়ে লোকটার কণ্ঠ থেকে । ‘গাড়ি চালাচ্ছিলাম না গিলে – কাজেই আমাকে আটকানোর কোন অধিকার আপনাদের দেখছি না ।’ ‘আপনি কি বলতে চান, আপনার ওপর কিছু মেডিকেল চেক আপ করলে এটাই প্রমাণ হবে এক রাতে দুবোতল ভদকা পান করেছিলেন ?’ সরাসরি তাকায় তার দিকে তিয়াস, ‘এক রাতে ? কখন বলেছি আমি গতকালই দু বোতল ভদকা খেয়েছি ? টাকার গাছ নেই আমার স্যার ! রিসিপ্টের ডেট দেখেছিলেন ?’ সামনের কাগজে একবার চোখ বোলায় অফিসার, ‘ছয় দিন আগে ।’ ‘গত পাঁচ দিন আমি বোতল দুটোর পূজো করছিলাম না । এই গ্যারান্টি আপনাকে দিতে পারি ।’ অফিসারের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে । ‘এখন প্লিজ বলুন আমার ফ্রেন্ড কোথায় আছে ? ও কি কোন ঝামেলাতে জড়িয়েছে ?’ মাথা নাড়ে পুলিশটি, ‘ঝামেলাতে যে সে জড়িয়েছে সে ব্যাপারে আপনার চেয়ে ভাল কে জানে ? কিন্তু অযথাই তাকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন আপনি ।’ একে অন্যের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে ওরা । তিয়াস জানে, এই জেরা কেন চলছে । গতকাল খুন হয়েছে তারেকের গার্লফ্রেন্ড । একই বিল্ডিংয়ের নিচে গার্ডের লাশ আর ওপরে অগ্নিদগ্ধা আরেকজন তরুণী – কাকতাল বলে মেনে নেবে না পুলিশ । পরবর্তীতে মেডিকেল রিপোর্টে আসবে গার্ডের কজ অফ ডেথ অ্যানাফিলাক্সিস । মেয়েটির – অ্যাকসিডেন্ট । গ্যাস পাইপ কাটার সময় চুলার অংশে কেটেছে ওরা । বিল্ডিংয়ের মেইন গ্যাস লাইনের যে অংশটা রান্নাঘরে বের হয়ে থাকে – ও জায়গা থেকে শুধু চুলার কাটা অংশটা পেচিয়ে খুলে নিয়েছে । কেউ ধরতে পারবে না কাজটা করা হয়েছে ইচ্ছেকৃতভাবে । হ্যাঁ, সন্দেহ হবে । সন্দেহ হতেই পারে । কিন্তু পৃথিবীতে সন্দেহের রেশ ধরে কাওকে বিচার করা হয় নি কখনও । puedo quedar embarazada despues de un aborto con cytotec ‘আপনার বন্ধু গতকাল রাতে অবসরপ্রাপ্ত কমিশনার রাহাত আলমের মেয়েকে খুন করেছে । মেয়েটার বয়ফ্রেন্ড ছিল সে । আর কারও কোন মোটিভ দেখলাম না কাজটা করার ।’ ‘খুন ? তারেক ?’, এবার ঘর কাঁপিয়ে হেসে ওঠে তিয়াস, ‘বিগেস্ট জোক অফ দ্য ডেয়াআআম …’ পরের হাইটা ঠেকায় ও । ‘আমার বন্ধুটিকে যে চট করে খুনী বলে দিলেন – কোন প্রমাণ আছে ? নাকি শুধুই সন্দেহের তালিকাতে তুলে রেখেছেন বলে এই খেতাব লাগিয়েছেন ? আমি এটাকে অফেন্সিভ দেখতে পাচ্ছি, স্যার ।’ ‘হি ইজ আওয়ার প্রাইম সাসপেক্ট ।’ ‘প্রমাণ আছে ?’, দ্বিতীয়বারের মত প্রশ্নটা করে তিয়াস । চুপ হয়ে থাকে অফিসার । ‘আমার বিরুদ্ধে যদি এবার আপনাদের কোন অভিযোগ না থাকে তাহলে উঠতে পারি তো ?’, জবাবের অপেক্ষাতে না থেকে উঠে দাঁড়ায় তিয়াস । নির্দ্বিধাতে এগিয়ে যায় দরজার দিকে । পেছন থেকে চেয়ার সরিয়ে উঠে দাঁড়ায় অফিসারটিও, ‘এটাও হয়ত আপনার জানা, তবে আপনার বন্ধুটিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।’ তিয়াস ঘুরে তাকায়, ‘তারেকের অভ্যাস আছে মাঝে মাঝে দিন কয়েকের জন্য বাড়ি না ফেরার । চারদিনেও যদি না ফেরে তবে অস্বাভাবিক বলে ধরে নিতে পারেন ।’ irbesartan hydrochlorothiazide 150 mg হতবুদ্ধি অফিসারের সামনে দিয়ে বের হয়ে দড়াম করে দরজা লাগিয়ে দেয় ও । চারপাশে লক্ষ্য করে দেখে, কেউ আটকাতে আসল না ওকে ।


via Facebook https://ift.tt/2WlioVx

Sunday, 24 March 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৪০ দ্যা রেইপ (পর্ব - ০২) #সাইকো ‘এবার কোথায় ?’, চেঁচিয়ে বলে তারেক, শব্দটার বেশিরভাগ অংশই উড়িয়ে নিয়ে যায় বাতাস । মোটরসাইকেলের পেছনে জোরে চেঁচাতে হয় তিয়াসকে, ‘আমার ফ্ল্যাটের দিকে আগা ।’ ‘ট্রিনিটি বার খোলা আছে -’, আপত্তি জানাচ্ছিল বন্ধু, মাঝপথে থামিয়ে দেয় তিয়াস । ‘আমার ঘরে বোতল আছে দুটো । রাশিয়ান জিনিস ।’ পরের মোড়ে সুড়ুৎ করে মোটরসাইকেল ঢুকিয়ে দেয় তারেক । বিনা বাক্যব্যয়ে ! about Cialis tablets * গরম পানিতে শাওয়ার সেরে এসে ডাইনিং রুম থেকে মাংসভাজার গন্ধ পেতেই মন ভালো হয়ে যায় তারেকের । দুইজনই ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র, তবে বন্ধুত্বের গল্পটা শুরু হয়েছিল থার্ড ইয়ারে । একই সংগঠনে ছিল ওরা, ফরেনসিক মেডিসিনের এক লেকচারার খুব বেশি ঝামেলা করছিল তখন । দারুণ একটা চরিত্র বেলাল আহমেদ স্যারের ছিল, অস্বীকার করার কিছু নেই । তবে বামপন্থী মানুষজনের ঘাড় থাকে ত্যাড়া । সংগঠনের বড় ভাই যখন খুব সুন্দর করে তারেক আর তিয়াসকে বুঝিয়ে দিলেন, তাদের কি করতে হবে – ওরা ভালো মতই বুঝেছিল । triglyceride metformin 2.5 500mg tabs বুকে একটা মাত্র গুলির ক্ষত নিয়েই বেলাল স্যার রীতিমত চেঁচাচ্ছিলেন, ‘মারা যাচ্ছি ! মারা যাচ্ছি আমি এখানেই – ওহ গড, আ’ম শট !’ স্যার মোটেও মারা যাচ্ছিলেন না । চেস্ট পেনেট্রেটিং উয়ন্ড ছিল বটে, তবে ফুসফুসকে স্রেফ ন্যাকড়া বানিয়ে দিয়েছিল । এক বাক্যে বলতে দিলে তিয়াস বলবে ওটা ছিল পালমোনারি প্যারেনকাইমাল ল্যাসেরেশন । ট্রিটমেন্ট – টিউব থোরাকস্টমি । এক ফুসফুস নিয়ে কিভাবে একটা লোক চেঁচাতে পারে তা নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবতে ইচ্ছে করছিল তিয়াসের । কিন্তু ও জানত, এখন চেক করলে দেখা যাবে স্যারের হার্ট রেট ১২০, শ্বাসপ্রশ্বাসের হার ৪০, ব্লাড প্রেশার ৯০/৬০ । মাসকুলার চেস্ট ওয়াল একেবারে ফুটো হয়ে গেছে, নিশ্চিতভাবে ইন্ট্র্যাথোরেকিক অর্গানগুলোর একাধিকে লাগিয়েছে ও । এই মুহুর্তে সার্জারিতে নিয়ে গেলে লোকটা বেঁচে যাবে – কিন্তু সেটা হতে দিতে ওরা পারত না । পারত না স্যারের জন্য টিউব থোরাকস্টমির ব্যবস্থা করতে । কাজেই যেটা করা দরকার ছিল – সেটাই করে তারেক – পরের বুলেটটা মাথার পেছন দিক দিয়ে ঢুকিয়ে দেয় নির্বিকারচিত্তে । ব্যাথাতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন তিনি, চেটো দেখতে পেয়ে দেরী করার আর মানে ছিল না । দুই দুইটি গুলির শব্দ ক্যাম্পাসকে স্তব্ধ করে দেয় ! এর ঠিক কয়েকদিন পরেই বামদলের রাজীব বাহিনী তিয়াসকে পাল্টা আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছে – বিষয়টা তারেকই প্রথম জানতে পারে । হলের গেটে যখন রাজীব-বাহিনী, তারেক যেভাবে তিয়াসকে ছাদে নিয়ে গিয়ে দড়িতে করে নামিয়ে দেয় – উপকারটা তিয়াস কোনদিনও ভুলতে পারে নি । কাজেই, বিশ্বাসঘাতিনী গার্লফ্রেন্ড তিন্নিকে সরিয়ে ফেলার সময় তিয়াসের সহায়তা চাইলে মানা করার প্রশ্নই আসে না । ছেলেটা ঠাণ্ডা মাথাতে চিন্তা করতে পারে । তারেকের ক্ষেত্রে এ গুণটা বিরল । স্টেলথ তিয়াস বলা হত ওকে ক্যাম্পাসে । এদিকটার সাহায্যও দরকার ছিল আজ রাতে ওদের । আর প্রয়োজন ছিল একটা পারফেক্ট এনভায়রনমেন্ট । বাসা ফাঁকা হতেই কাজ সেরে দিয়েছে ওরা । ‘মেয়েটার ব্যাপারে ভাবিস না । এটা ওর প্রাপ্য ছিল ।’, ঠাণ্ডা গলাতে উচ্চারণ করে তিয়াস, প্লেট সাজাচ্ছে দুটো । তিন্নির সাথে এয়ারফোর্সের ছেলেটার গোপন সম্পর্কের কথা ভাবতে ভাবতে মাথা নাড়ে তারেক, ‘ভাবছিও না ।’ মুচকি হাসে তিয়াস, ‘গুড । খেতে বস ।’ ‘আজ রাতে নিশ্চয় লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত থাকবি ?’, তিন টুকরো গরুর গোস্ত প্লেটে তুলে নেয় তারেক । একটা ভ্রু উঁচু হয়ে যায় তিয়াসের, ‘কেন মনে হল এ কথা ?’ তারেকের ভ্রুও একটা উঁচু হয়ে গেল, ‘আরেকটা সাইকো স্টোরি লেখার জন্য এনাফ মাল মশলা তো আজকের অভিযানে তোর পেয়ে যাওয়ার কথা ?’ ‘আর আমাদের ফাঁসীর দড়িতে ঝুলে পড়াটা একেবারে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে যাক, এই তো ? ব্লাডি ইডিয়ট !’ নিশ্চিন্ত মনে গালির সাথে সাথে মুখের ভেতরে এক লোকমা ভাতও তুলে নেয় তারেক । অনলাইন আর অফলাইনে তিয়াসের গল্পগুলোর দাম আছে । দারুণ থ্রিলার লেখতে জানে ছেলেটা । রসবোধের অভাব থাকে না সেখানে । তারেক শুধু ভেবে পায় না – এই ছেলে বাস্তব জীবনে এত কঠোর মুখ নিয়ে থাকলেও লেখার সময় এরকম রস কিভাবে পায় ? একমাত্র ব্যাখ্যা – অসুস্থ একধরণের আনন্দ পায় তিয়াস লেখার সময় । বিষয়টা তাকে করে তোলে সম্পূর্ণ আলাদা একই চরিত্র । এই চরিত্রটি হাসতে জানে । ‘একটা কথা জানতে পারি ?’, একটু ভেবে প্রশ্নটা করে তারেক । ‘নিশ্চিন্তে ।’, সব্জির বাটি থেকে আরেক চামচ তুলে নেয় তিয়াস, ‘সব্জি নিবি না ?’ ‘না থাকুক । গোস্তটা চমৎকার হয়েছে ।’, চোখ বন্ধ করে একটু উপভোগ করে তারেক, ‘যাই হোক, যেটা বলছিলাম – তোর গল্পগুলোর চরিত্ররা সবাই কি কাল্পনিক ?’ কাঁধ ঝাঁকায় তিয়াস, ‘বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা তো থাকেই । তবে শুধু সেটা দিয়ে তো আর গল্প হয় না, কল্পনারও দরকার আছে একজন লেখকের । অবশ্যই দরকার আছে ।’ ‘একটা মেয়েকে নিয়ে একটা গল্পে লেখেছিলি, প্রেমে ব্যর্থতার জের ধরে বয়ফ্রেন্ড তাকে রেইপ করে । তারপর খুন । তবে পদ্ধতিগুলো ছিল নিষ্ঠুর । মনে আছে ?’ ঠোঁট হাল্কা বেঁকে যায় তিয়াসের, হাসছে, ‘মেয়েটার দুই হাত কবজি থেকে কেটে নেওয়া হয়েছিল । আলাজিহ্বাতে একটা তের ইঞ্চির পিনের সামনের দিকটা ঢোকানোর সময় মেয়েটার চিৎকার আচমকা থেমে যায় । তারপর ছেলেটা শুরু করে ওর চামড়া ছেলা । গলা থেকে শুরু, পায়ের পাতাতে শেষ ।’ শুকনো গলাতে পানি ঢালে তারেক, ‘হুঁ, বয়ফ্রেন্ডটার -’ অযথাই কাশে ও । সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তিয়াস, ‘বয়ফ্রেন্ডটা ?’ ‘তুই ছিলি ?’ ঘর কাঁপিয়ে হেসে ফেলে তিয়াস, আরেক টুকরো গোস্ত মুখে তুলে নেয় । ভাজা মাংসের গন্ধে ঘরটা মৌ মৌ করছে । বোকা বোকা একটা চাহনি দেয় তারেক তার দিকে । ‘আরে না ব্যাটা । সব গল্পই কি আমার জীবনের গল্প নিয়ে নাকি ? পানির জগটা এদিকে দে তো ।’ ‘তাহলে যে গল্পে মেডিকেলের ছাত্র একজন যুবককে দেখা গেছিল তার বোনের ওপর চড়াও হতে – সে ব্যাপারে কি বলবি ? শুধুই কল্পনা ? নাকি সেটা নিজের জীবনের গল্প ?’ থমথমে মুখে তাকায় তিয়াস ওর দিকে, ‘আমি শুধু যা করি তা থেকেই গল্প লেখি না ।’ ‘তারমানে ওটা আমাদের কোন ক্লাসমেটের লাইফ স্টোরি ? তুই না করলেও কেউ করেছিল । জেনেছিস এবং লেখেছিস ।’ ‘ওটা ছিল আমার কল্পনা ।’, লাইটের দিকে তাকায় তিয়াস, ‘এখন কম কথা বলে খা । মাথা ধরে যাচ্ছে ।’ কিছুক্ষণ বন্ধুর শীতল মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকে তারেক । তারপর একটু হাসে । ভাতের বাটিটা সামনে নিয়ে আসতে আসতে আস্বস্থ করে ওকে, ‘আমি ভাবছি না সবকিছু তোর রিয়েল লাইফের ঘটনা । অবশ্যই তোর কল্পনাশক্তি আছে । আর বেশ ভালই আছে ।’ ‘খাওয়া শেষ করে বোতল নিয়ে রুমে আয় ।’, আস্তে করে উঠে দাঁড়ায় তিয়াস, ‘ফ্রিজে পাবি ।’ প্লেটে অর্ধেক খাবার রেখে বেসিনের দিকে রওনা দেয় তিয়াস ।


via Facebook https://ift.tt/2Wjylvy

Saturday, 23 March 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৪০ দ্যা রেইপ (পর্ব - ০১) #সাইকো বিছানাতে শুয়ে আছে মেয়েটা । নগ্ন শরীর টিউবলাইটের আলোতে চক চক করছে । চোখ বোজা, বুকে কামড়ের দাগ । গলার কাছটা লাল হয়ে আছে । শেষবারের মত ওদিকে তাকিয়ে ঘরটা থেকে বের হয়ে আসে তারেক । দরজার ঠিক বাইরে দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বন্ধু তিয়াস, তার দিকে তাকিয়ে বোকা বোকা একটা হাসি দিল ও । তারপর জানালার পর্দায় মুছে ছুরিটা ঢুকিয়ে রাখে পকেটে । ‘চেক অন ইয়োর পেশেন্ট প্লিজ, ডক্টর ।’, টলতে টলতে ফ্রিজের দিকে এগিয়ে যায় তারেক । কাঁধ ঝাঁকিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে তিয়াস । মেয়েটার দুই হাটু ঝুলে আছে বিছানা থেকে । রক্তে ভেসে যাচ্ছে দুই উরুর মাঝখানটা । ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ার সুবাদে লাশ কম দেখার অভিজ্ঞতা হয় নি তিয়াসের । কলেজের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় ওর । একবার মর্গে এসেছিল এরকম একটা লাশ । রেপ কেস । ভুল ভাবল, রেপ অ্যান্ড মার্ডার কেস । লাশটা পাওয়া গেছিল কমলাপুরের দিকে, রাতের বেলাতে কেউ ফেলে দিয়ে গেছে রাস্তাতে । সম্ভবতঃ চলন্ত গাড়ি থেকে ছুঁড়ে মারা হয়েছিল দেহটা, শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে ছিলে যাওয়ার দাগ থেকে এটুকু বোঝা সম্ভব হয়েছিল । তিয়াসের ধারণা অবশ্য আলাদা, মেয়েটাকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল সম্ভবতঃ চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে । বন্ধুরা উড়িয়ে দিয়েছিল ওর কথা, তবে গাড়ি থেকে ফেলা হয়ে থাকলে শুধু কাঁধের কাছে বেশি ক্ষত পাওয়া যাবে না । পুরো শরীরকে বের করে দেওয়া হলে মোটামুটি চাপটা যাওয়ার কথা কোমরের ওপর দিয়ে । অথচ, লাশের কোমরের থেকে কাঁধের কাছে ছড়ে যাওয়ার পরিমাণ ছিল সেখানে বেশি । ‘শালা, তুই ডিটেকটিভ ব্র্যাঞ্চের স্পেশাল মেম্বার না । গাড়ি আর বাইকের পার্থক্য নিয়ে ক্যাচালে যাচ্ছিস কেন ? মরা এসেছে, মরা কাটবি ।’, সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছিল বন্ধু রশীদ । ওই মরাটা কাটার সুযোগ যদিও হয়নি ওদের কারোই । বিছানাতে পড়ে থাকা মেয়েটার দিকে নির্বিকারভাবে এগিয়ে যায় ও, বাম হাতটা তুলে নিয়েছে নিজের হাতে । পালস পরীক্ষা করার জন্য প্রথম শর্ত, বুড়ো আঙুল ব্যবহার করা যাবে না । তিয়াস তখন পালস পাবে ঠিকই, তবে নিজেরটা । মরার পালস দেখে চোখ উল্টে ফেলে যদি কেউ – নিশ্চিত থাকা চলে ব্যাটা বুড়ো আঙুল ঠেসে ধরেছিল মরাটার হাতে । মৃত মেয়েটার কব্জির হাড়ের সাথে আর্টারিটাকে চেপে ধরে ও । তর্জনী আর মধ্যমাকে ব্যবহার করছে, কোন ধরণের কম্পন অনুভব করতে পারল না অবশ্য । এতেই পেশেন্টের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার মত কিছু হয় নি, তারেকের জন্যও বগল বাজানোর মত কোন ঘটনা এটা না । ঠাণ্ডা হতে শুরু করা শরীরটার ঘাড়ে হাত রেখে আরেকবার পালস অনুভব করার চেষ্টা করে ও, পালস পাওয়া গেল না । নাকি গেল ? নিজের দুই হাত ঘষে গরম করার চেষ্টা করে তিয়াস । ঠাণ্ডা পড়ছে সেরকম । আরেকবার ঘাড়ে চেপে ধরে হাতটা । মৃদু কাঁপছে জায়গাটা ?তবে হরমোনের প্রভাবটা বোঝা যাচ্ছে না । সত্যি নাকি মনের ভুল ? ঝুলে থাকা একটা পা তুলে এনে হাঁটুর বিপরীতে আঙুল ছোঁয়ায় তিয়াস, আর্টারির মৃদু কম্পন স্পষ্ট না হলেও – অনুভব করে এবার ও । হতাশ ভঙ্গিতে দুই পাশে মাথা নাড়িয়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায় তিয়াস । তারেককে দরকার । ছেলেটাকে পাওয়া গেল রান্নাঘরে, ঠাণ্ডা একটা পেপসির বোতল বের করে ঢক ঢক করে গলাতে ঢালছে । অন্যহাতে জ্বলছে সিগারেট । মাথার দিকের আগুন প্রায় পেট পর্যন্ত চলে এসেছে । শালার অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস হবে শিওর । জন্তুর মত টানছে একেবারে ! ‘শালী মরে নি ।’, ফ্রিজ থেকে আরেকটা বোতল বের করতে করতে বলে তিয়াস । ক্লান্ত চোখে তার দিকে তাকায় তারেক, ‘চটকানা মারলেই তো কাজটা হয়ে যায় । আবার আমাকে বলতে আসলি কেন ?’ ‘তোর গার্লফ্রেন্ড, তুই চটকানা মার । আমার দায় ওটা না ।’, মুখটা খুলে চুলোর দিকে ছুঁড়ে মারে তিয়াস । ‘এসেছিস কি করতে তাহলে ?’, বিরক্তিতে গর গর করলেও আবার ঘরটার দিকে ফিরে যেতে থাকে তারেক । যাওয়ার আগে বোতলটা দেওয়ালে আছড়ে ফেলতে ভুলে নি অবশ্য । বিকট শব্দ করে সিংকের ওপর আছড়ে পড়ল ওটা । তিয়াসের এখানে আসার দরকারটা ছিল ভিন্নমাত্রার । নিচের যে গার্ডটা পড়ে আছে তার নিজের রুমে – সে আর কোনদিনও তাকাবে না । কাজটা নিশ্চিত করতে তিয়াসকে দরকার ছিল তারেকের । দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে লোকটা, মুখ চোখ ফুলে উঠবে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই । ইনজেক্ট করে ফসফলিপেজ, হিস্টামিন আর হিলারোনিডেজ ব্যাটার শরীরে ঢুকিয়ে দিয়েছে তিয়াস শুধু । ‘মার্ডার ! মার্ডার !!’ – বলে চেঁচামেচি করতে পারে এলাকাবাসী, তবে গলাটা একেবারে মাগনাতেই ভাঙবে ওদের সেক্ষেত্রে । কজ অফ ডেথ কি তা তিয়াসের খুব ভালো জানা আছেঃ অ্যানাফিলাক্সিস । দম আটকে মারা গেছে রোগী, মুখে কোন ধ্বস্তাধস্তির চিহ্নও নেই । বাতাস নেওয়া থেকে শিকারকে ঠেকাতে তিয়াস কোনদিনও হাত ব্যবহার করে না । একফালি কাপড় কাজটা খুব ভালো করতে পারে, কিন্তু কোন রকম দাগ ওটা ফেলে না কখনও । পোস্ট মর্টেমের ফলে সিস্টেমে পাওয়া যাবে ফসফলিপেজ, হিস্টামিন আর হিলারোনিডেজ । মৌমাছির হুলে ৮৮% থাকে পানি, আর ১২% বিষ । বিষের কেমিক্যাল ফর্মেশন জানাটা কঠিন, তবে ফসফলিপেজম, হিস্টামিন আর হিলারোনিডেজের আধিক্য আছে । এই তিনটে এনজাইম অ্যাক্টিভেট করে দেয় অ্যালার্জিক পেশেন্টের অ্যানাফিলাক্সিস । ফলাফল – শ্বাস নিতে না পেরে রোগীর মৃত্যু । সময়মত হাসপাতালে নিতে পারলে বেঁচে যায় অবশ্য রোগী । তবে এখানে অ্যানাফিলাক্সিসের কোন ঝামেলা ছিল না । কাজটা করেছে তিয়াসের দুটো হাত । ডক্টর আসিবার পরে রোগী মারা গিয়াছে ! তারেক আরেকবারের মত রক্তমাখা ছুরি নিয়ে বের হয়ে আসছে – সেদিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিয়াস । হাল্কাভাবে মনে পড়ে মেয়েটার দুই পায়ের মাঝে ছড়িয়ে থাকা রক্তের ছাপের কথা । এবার অন্য কোথাও মেরেছে তো ? ‘ঝামেলাতে না গিয়ে শালীকে সহই পুড়িয়ে দিতে পারতাম সবকিছু ।’, শান্ত কণ্ঠে বলল ও তিয়াস । অন্যদিকে তাকায় তারেক, ‘জ্যান্ত পোড়াতে চাচ্ছি না । জানিস তুই ।’ হারামজাদা ! মরা গার্লফ্রেন্ডের জন্য প্রেম একেবারে উথলে উঠেছে ! খোলা জানালা দিয়ে তারেকের অর্ধসমাপ্ত সিগারেটটা ছুড়ে মারে ও । মেঝের কাছে রাখা ব্যাগ থেকে তুলে নিয়েছে ছোট একটা কুড়াল । ওর হাত চেপে ধরে তারেক, ‘আগে গিয়ে তিন্নির ভাইটালস চেক করে আয় ।’ ‘আগেই দুর্বল ছিল, স্ট্যাবিং উয়ন্ড সামলানোর মত প্রাণশক্তি থাকার কথা না ।’ ‘তবুও ।’, শক্ত হয়ে যায় তারেকের চোয়াল । ঘটাং-জাতীয় একটা শব্দের সাথে সাথে দেওয়ালের সাথে থাকা গ্যাসের পাইপটা চুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল । হিস হিস শব্দ হচ্ছে, ছোট্ট রান্না ঘরটা ভরে যাচ্ছে হাল্কা একটা ঝাঁঝালো গন্ধে । ব্যস্ত হাতে জানালা লাগাতে থাকে ও । কুড়ালটা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখে তারেক । ‘গেলি তুই ?’, হুংকার ছাড়ে পরের মুহূর্তেই । ‘যাচ্ছি । জানালাগুলো সব দ্রুত লাগিয়ে মেইন গেটে চলে যা তুই ।’, ইশারা করে তিয়াস, ‘TIB, ম্যান !’ ‘ইয়েপ… টিআইবি …’, মাথা দোলায় তারেক । দিস ইজ বাংলাদেশ । গ্যাস সিস্টেম নিয়ে কোন সমস্যা না থাকলেও একটা অ্যাপার্টমেন্ট পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য যতটা এয়ারটাইট করা দরকার ওটাকে – তা করা সম্ভব নাও হতে পারে । হুড়মুড় করে ঘরে চলে আসে তিয়াস, মেয়েটার বাম স্তনের নিচে ছুরির ক্ষতটা দেখে বুঝতে পারে, আর পালস চেক না করলেও চলবে ওর । একেবারে জায়গামত বসিয়েছে বন্ধু, রক্তের স্প্রের বাইরে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিল নিশ্চয় ? তারেকের শরীরে রক্তের ছাপ দেখে নি ও পরে । ঘরের কোণে মোমবাতিটা রেখে সাবধানে আগুন ধরায় সালেহ মুহম্মদ শোয়াইব তিয়াস, ঢাকা মেডিকেল কলেজের একজন ইন্টার্নি স্টুডেন্ট । তারপর প্রাণপনে ছোটে মেইন গেটের দিকে ।


via Facebook https://ift.tt/2HPufaz

Wednesday, 20 March 2019

Wonderland Episode 20 English sub



Video Link :
Wonderland Episode 20 English sub
http://www.dailymotion.com/video/x74k2d1
Via #

Wonderland Episode 19 English sub



Video Link :
Wonderland Episode 19 English sub
http://www.dailymotion.com/video/x74k2cz
Via #

Wonderland Episode 16 English sub



Video Link :
Wonderland Episode 16 English sub
http://www.dailymotion.com/video/x74k2d0
Via #

Wonderland Episode 18 English sub



Video Link :
Wonderland Episode 18 English sub
http://www.dailymotion.com/video/x74k2cy
Via #

Wonderland Episode 17 English sub



Video Link :
Wonderland Episode 17 English sub
http://www.dailymotion.com/video/x74k2cs
Via #

via Facebook https://ift.tt/2CtyqVT

পারফেক্ট পেইন্টিং হতে পারে, নাচ-গান হতে পারে; কিন্তু পারফেক্ট অভিনয় বলে কিছু নেই। তবে আমি অভিনয়ের খেলায় সেরা । #সাইকো


via Facebook https://ift.tt/2HwA6SG

Friday, 1 March 2019