Tuesday, 26 March 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৯ রাতগল্প (পর্ব-০১ ) #সাইকো সিগারেটের পুড়ে যাওয়া ফিল্টার এ্যাশট্রে তে গুঁজে দিয়ে, হালকা ধোঁয়া ছেড়ে, মেয়েটির দিকে এবার খানিকটা দৃষ্টিপাত করে আবির। কিছুক্ষণ ধরেই বেশ তাড়া দিচ্ছে মেয়েটি, “হু, কি যেনো বলছিলেন?” “যা করবেন, তাড়াতাড়ি করেন?” মেয়েটির কথায় তেমন কর্ণপাত না করে বেশ শান্ত গম্ভীর গলায় পাল্টা প্রশ্ন আবিরের.. “আপনি কদ্দিন হলো এখানে আছেন?” “ক্যান?” “দরকার আছে বলেই তো জিজ্ঞাসা করছি?” “৩ বছোর” “হু” “কিন্তু আপনে এইগুলা দিয়া কি করবেন?” “কৌতুহল? জানার আগ্রহ বলতে পারেন!” কৌতুহলী দৃষ্টিতে চারপাশে চোখ বোলায় আবির। সিড়ি পেরিয়ে আরো ক ‘টা ঘরের সাথে লাগোয়া এ ঘরটা বেশ ছিমছামই বলা চলে। চার’তলা বাড়ির দোতলার এই মাঝারি আকারের ঘরের ভেতরকার সাজসজ্জা বিবেচনায় তা মোটেই বিলাসবহুল নয়। ঘরের ভেতরে আসবাব বলতে একটা বিছানা, ছোট টেবিলসহ পুরোনো তিনটে সোফা আর আলমারি। বেশিরভাগ জিনিসেই ধূলো জমে আছে। দরজার বা দিকটায় মাঝারি আকারের প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিলও চোখে পড়ে। ওপাশের দরজাটা সম্ভবত আরেকটা রুমের ও কিচেনের। মাঝে মাঝেই ফ্যানের হাওয়ায় উপর থেকে ছাদের চুন খসছে। “হু, কতজন থাকেন এখানে? “আপ্নে এইসব শুইন্না কি করবেন?” “শুনছি, এমনিই” “আপনারে আবার পুলিশ টুলিশে পাঠায় নাই তো” উত্তরে আবির মৃদু হাসে। “হাসেন ক্যান” “পুলিশ?? না না ওসব কেউ নই, তবে ভালবাসার করাতে আচমকাই কেটে যাওয়া ছেড়া ঘুড়ি বলতে পারেন” “তাইলে এইগুলা জিগান ক্যান” “ঐযে বললাম কৌতুহল” বুক থেকে হঠাৎই শাড়ীর আঁচল ফেলে দেয় মেয়েটি। “আপনের কথা শুইনা প্যাট ভরবে না। আমার আরো কাম আছে, তাড়াতাড়ি করেন, আরো দুইজন আইবো” missed several doses of synthroid শাড়ির পড়ে যাওয়া আঁচলটা বুকে জড়িয়ে দেয় আবির। “আজ না হয় অন্যদের নামটা তালিকা থেকে বাদই দিন! আর সেজন্য চিন্তা করবেন না আপনার টাকাও আপনি যথাসময়ে হয়তো সময়ের আগেই পেয়ে যাবেন, আমি অন্যদের মতো ভোগ বিলাসে উন্মত্ত হতে আসিনি, হয়তো অন্যদের মতো আপনার শরীর-মাংসপিন্ড কে গোগ্রাসে গিলবোও না, আসলে জানেন রাতগুলো বড্ড বিষন্ন, হয়তো রাতের বিষন্নতাটা কাটাতে খানিক গল্প করতে আসা। ভোরের আলো ফুটতেই উঠে চলে যাবো” “খালি, খালি এ্যাম্নেই পয়সা দিবেন?” “যদি বলি দেবো?” “কি জানি, এক এক জনের এক এক রকম হাউস, খাড়ান তাইলে আমি একটু বাইরে থেকে আসতেছি” ২০ মিনিট পর… “কোথায় গিয়েছিলেন?” “হিহিহি! বাথরুমে” “ওও..আচ্ছা..তারপর বললেন না তো কতজন থাকেন এখানে?” “আগে পনরো জনেরও বেশি থাকতো..” “এখন?” “এখন আমরা ১৩ জনের মতো থাকি” “বাকীরা কোথায় গেলো” “কেউ চইলা গেছে, ভাইগা গেছে, পুলিশে ধরছে, একটা মাইয়া মরছেও, কি জানি কয়, সুইসাইড খাইসিলো” “আপনার নাম?” “জরি” “চমৎকার নাম?” “আগে নাম আছিলো জেরিন, রুবি বুবু নাম কাইট্টা জরি বানাই দিছে, হিহিহি হিহিহি” “তো মিস জরি, কদ্দুর পড়ালেখা করেছেন আপনি??” “এইডা দিয়া আবার কি করবেন?” “আবারো প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন ঠুকছেন? বললাম তো ওসব পুলিশ টুলিশ কেউ নই আমি, ওকে আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না তো, এক সেকেন্ড!”..পকেট হাতরে কালো মানিব্যাগের চেন টেনে পাঁচটা এক হাজার টাকার নোট গুজে দেয় জরির হাতে!..”আরো লাগবে? লাগলে দেবো সমস্যা নেই এবার আশা করি উত্তর দেবেন” “এইট পর্যন্ত পড়সিলাম, তারপর আর পড়তে পারি নাই” “কেনো?” “ক্যান আবার? অভাবে” জরির কথাবার্তায় চাল-চলনে এখন অবধি বেশ মিশুক বলেই মনে হলো আবিরের। চেহারাতেও বেশ একটা আভিজাত্যের ভাব আছে। অতি দ্রুত মিশে যাওয়ার ক্ষমতা খুব সীমিত সংখ্যক মানুষের থাকে। মাঝরাত্তিরে এক অজানা অচেনা যুবকের সাথে কেমন অল্পতেই বেশ মিশে গেছে মেয়েটা। সহস্র ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মুখ অবয়বে রাজ্যের হতাশা আর একরাশ আতংক নিয়ে বসে থাকে এরা। তারপরও এরা হাসে। অযুত নিযুত কষ্টগুলিকে ছাপিয়ে, আড়াল করে হাসার চেষ্টা করে চলে। লোকে বলে, এমনটা না হলে নাকি খদ্দের টেকে না, আর খদ্দের না টিকলে পয়সা জুটবে না। আসলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়াই তো জীবন, যেটা আজ অবধি আমি শিখে উঠতে পারিনি, বলে নিজেকে মনে মনে খানিকটা গালমন্দ করে আবির। তবে জরিকে মোটেই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত দেখাচ্ছে না। চোখেমুখে কেন যেন এসব কর্মযজ্ঞের লেশমাত্র নেই। বরং মনে হয় চোখজোড়ায় একঝাঁক রহস্য লুকোনো। “জরি, আপনি কাউকে ভালবেসেছেন কখনো?” প্রশ্ন শুনেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি.. “আমাগো তো ডেইলিই প্রেম করতে হয়, এইডাই তো আমাগো কাম হিহিহি হিহিহি” “আমি সেকথা বলিনি, আসলে দৈহিক সম্পর্ক ব্যাতিত মানুষের প্রেমের আরো একটা পরিভাষা আছে যেটার উৎস হচ্ছে মানুষের অতি পবিত্র মন, আমি আসলে মনের ভালবাসার কথা বলছি।” জরি ভ্রু কুচকে বলে, “কি জানি এইসব জানিনা, বুঝিও না”। পরক্ষণেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি। #যদিও এক কুলাঙ্গার কপি করেছিল পুরনো লেখা বলে। তবে সব ওর কাছে নেই। তাই । আর যেহেতু ৪৩ টা সব ই পুনরায় দিব তাই আবার ও দিচ্ছি ।


via Facebook https://ift.tt/2U65BsM

No comments:

Post a Comment