Wednesday, 29 May 2019

#কেউজ্ঞানদিতেআসবেননাআগেইবলেদেইরোজারাখিনি৷ কয়েক ফোটা রক্ত দেখে ভয় পেলে বুঝি আদরিনি? ভয় নেই,,, রক্ত নয় এই সব ভালোবাসা! আঘাতে ছিদ্র ক্ষত বুকের লাশ দেখে ভয় পেলে বুঝি! ভয় নেই। এগুলো ভালোবাসার আন্দোলন মিছিলে শহিদ হবার প্রতিক । তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখতে শব্দ ছিনিয়ে আনার আন্দোলনে নেমেছি। এতো ভাবছো কি? ক্ষুদ্র পাতা নড়ার শব্দ এ নয় সব তোমার অবহেলার ধ্বনি মিশ্রিত প্রতিরোধ । তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখতে পারার তীব্র আকাঙ্খা। .আর সব বিকৃত মস্তিষ্কের পোশাকি মানুষের টনক নাড়িয়ে দেবার জন্য। আজ এক অমর যুদ্ধে আমি মাঠে দাঁড়িয়ে। দেখ তোমার জন্য ছিনিয়ে এনেছি অসংখ্য শব্দমালা যার প্রতি বর্ণই প্রতিরোধ , আর একটি বাক্য আমরণ বন্ধুত্বের প্রকাশ। কি হল আদরিনি,,, আবার ভয় পেলে বুঝি? #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2WcEcr0

Thursday, 23 May 2019

সবার দিন শুরু হয়, জানু সোনা ভালোবাসা দিয়া আর আমার,,,,,,!!!!!! বালের কপাল🙄🙄


via Facebook http://bit.ly/2VLDEDd

via Facebook http://bit.ly/2YQ8Lj7

এই ফটো টার মাঝে যে কত আবেগ আছে, আর কত যন্তনা আছে, তা শুধু হয়তো সেই মানুষ টাই জানে যার হাতের ছবিটা । কিছু ভালবাসার মানুষ গুলো খুব জেদি । যখন কষ্ট গুলো এসে বুকে জমা হয় তখন ভবিষ্যৎ ও ভুলে যায় । তখন শুধু ভাবে কিভাবে কি করলে কষ্ট গুলো কমাতে পারবো । সব কিছু খুঁজে একটাই শুধু পথ পায় তা হল নিজেকে শাস্তি দেওয়া । . নিজেকে শাস্তি দেওয়ার বেপারে সবাই অনেক সাহসি । অন্যের সাথে মারা-মারিতে না পারলেও নিজের সাথে ঠিকেই পারে । কেই বা পারবে না । মারা-মারির আঘাত সহ্য করা যায় কিন্তু মনের ভাঙ্গার আগাত কখনোই সহ্য করা যায় না । তাই নিজের শরীর কে ক্ষত-বিক্ষত করে শেষ করে দেয় । ভালবাসার কষ্ট গুলোই এমন জীবন শেষ করে দেয় । . ফলাফল-- . আপনি আবেগে পরে হাত কেটে ফেলেছেন । . এরপর আপনার হাতের রক্ত থামাতে অনেক কিছু লাগাবেন । হাত ভাল করার জন্য অনেক টাকা খরজ করতে হবে । হাত ভাল করতে পারবেন কিন্তু কাটা দাগ গুলো এত সহজে মুছে ফেলতে পারবেন না । কোন দাগ ছোটো হলে অনেক মাস পরে মুছে যায় । কিন্তু অনেক গুলো বড় বড় টান দেন ব্যাল্ড বা ছুরি দিয়ে সেগুলো মুছে যায় না । . বাসা থেকে বের হতে হলে ফুল হাতা জামা ছাড়া হাপ হাতার জামা পরে বের হতে পারবেন না । নিজের কাছে অনেক খারাপ লাগবে যখন কেউ আপনার চেহারার দিকে না তাকিয়ে যখন আপনার কাটা হাতের দিকে অপলক তাকিয়েই থাকবে । আবার পরিবারের দূর সম্পর্কের কোন লোক আসলে তার সামনে যেতে পারবেন না । অন্য কোন নতুন বন্ধুর সাথে পরিচয় হতে গেলে হাতের বেপারটা নিয়ে জানতে চাইবে । . একটা সময় আপনি অনেক চেষ্টা করবেন হাতের দাগ গুলো মুছে ফেলার জন্য কিন্তু তা আর পারবেন না । আবার অন্য কারো সাথে রিলেশন করতে গেলেও পারবেন না । কারণ সে যদি কখনো দেখে আপনার হাতে অনেক সুন্দর সুন্দর দাগ আছে । তাহলে সে বুঝে যাবে আপনার আগে একটা রিলেশন ছিল । যার জন্য আপনার হাত পর্যন্ত কেটে ফেলেছেন । . আবার অনেক বছর পর কোনো না কোনো ভাবে আপনার পরিবার আপনাকে মানিয়ে বিয়ে দিয়ে দিতে পারে । তখন আপনার স্বামী / স্ত্রী ওই কাটা দাগের বেপার টা জানতে চাইবে । প্রতি রাতে আপনার ঐ বেপার টা নিয়ে কথা বলবে । একটু একটু করে জানতে চাইবে । মাঝে মাঝে আপনার সাথে ঝগড়া লাগলে ঐ হাত কাটা বেপার টাও তুলে ফেলবে । . যখন আপনার সন্তান বড় হবে তখন আপনাকে জিজ্ঞেস করবে । আম্মু এটা কিসের দাগ । তখন আপনি কি বলবেন রান্না করতে গিয়ে কেটেছে । সেটা বলতে পারবেন না কারণটা আপনি জানেন যে রান্নার কাজে এক জায়গাতে এক সাথে এত গুলো দাগ হয় না । তখন আপনার বলার ভাষা থাকবে না । তখন কান্না করবেন আর একা একা ভাবতে থাকবেন কি করলাম আমি নিজের সাথে ?? ওহ আমি ছেলে আমার কথা আলাদা । আমার সাথে আপনর তুলনা চলে না :)


via Facebook http://bit.ly/2wgfHcV

Tuesday, 21 May 2019


via Facebook http://bit.ly/30Dra46

রাত দূইটা বেজে উনিশ মিনিট হঠাৎ ফোন দিয়ে বললে তুমি এই বাইরে ভিষণ ঝড় হচ্ছে আর ফোন দিতে পারবনা। আমি ভাবছি তখন অবুঝ মেয়ে বাহিরের ঝড়টাই দেখলে শুধু ভেতরেরটা দেখলেনা। #কবিতা #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2WfUvCl

বেচে থাকার জন্য আমার বেশি কিছু দরকার নেই শুধু তুমি পাশে থেক এইত এইটুকুই চাই #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2K0pID0

তোমার হরিন কালো আঁখি যুগলে হারাই আমি রোজই মেয়ে তুমি হয়ত জানোনা শরিরটাকে নয়ত তোমার মনটাকে যে খুজি। #মনওশরীর #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2HCd8XO

আকাশ ভরা চাঁদের আলো আমার পাড়ায় অন্ধকার। আজ মেয়েটির ফুলসজ্জা আর আমার আত্মার হচ্ছে সৎকার। #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2JVwBWv

রাত্রি বলে নরক আমায়,,, আর পাগল বলে হাওয়া... বুকের ভেতর অভিমান নামে তোমার আসা যাওয়া #রাত #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2HuYKSw

অনেক জীবনের গল্পটাই এমন নামের পাশে সারাক্ষন সবুজ বাতি জ্বলে থাকে অথচ ভিতরে ভিতরে নিভে যায় অসম্পূর্ণ এক খন্ড ভালোবাসা


via Facebook http://bit.ly/2JwzoWA

রাত দূইটা বেজে উনিশ মিনিট হঠাৎ ফোন দিয়ে বললে তুমি এই বাইরে ভিষণ ঝড় হচ্ছে আর ফোন দিতে পারবনা। আমি ভাবছি তখন অবুঝ মেয়ে বাহিরের ঝড়টাই দেখলে শুধু ভেতরেরটা দেখলেনা। #কবিতা #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2VU58M0

via Facebook http://bit.ly/2HIlQnw

আমি ছিলাম কানা তুমি ছিলে কানি 🙄 মনেই ছিলনা দুজনের কারো ফেসবুকের প্রেম মানে কচু পাতার পানি। 🤣 #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2QbF2xK

তুমি কাদাও আমি কেদে যাই। আমাদের ভালবাসার মাঝে। পার্থক্য শুধু এটাই। ~এন এম শান্ত #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2JxqxEd

via Facebook http://bit.ly/2Js6Hdi

via Facebook http://bit.ly/2QbGBMn

Monday, 20 May 2019

শুভজন্মদিন প্রিয় Sadat Hossain ভাই ভালোবাসা অফুরন্ত আগামীর পথচলা আনন্দময় হোক জীবনের ছোট বড় সকল ইচ্ছা পূর্ণ হোক সুস্থ ও সুখী জীবন কাম্য চলার পথ সহজ ও সুন্দর হোক আল্লাহ আপনার সকল বিষয়ে সহযোগী হোক সেটাই প্রার্থনা রইলো, কৃতজ্ঞতা আল্লাহর নিকট যিনি এমন একজন মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন 😘😘😘 ভালবাসা অফুরান।


via Facebook http://bit.ly/2HGAlZ0

না হয় মনের মাঝেই থাক আমার জন্য পুষে রেখ আকাশ সমান রাগ। অভিমানের ঝর্ণাধারা বহুক হৃদয় মাঝে, এই যে আমি এমন করেই রইব তোমার পাশে।


via Facebook http://bit.ly/2w8LJHX

এই তুমি কি সেই নীল অপ্সরী যে আমার আকুল হৃদয়ে সেই তপ্ত দুপুরে দিয়েছিলে দোলা।


via Facebook http://bit.ly/2JSnTIz

via Facebook http://bit.ly/2YDJyrQ

অনেক জীবনের গল্পটাই এমন নামের পাশে সারাক্ষন সবুজ বাতি জ্বলে থাকে অথচ ভিতরে ভিতরে নিভে যায় অসম্পূর্ণ এক খন্ড ভালোবাসা


via Facebook http://bit.ly/2whoA6h

Sunday, 19 May 2019

একদিন আমার আত্মার ও মৃত্যু হবে আর সেদিন আমি হাজির হব তোমার দুয়ারে। দেখব তুমি কেমন আছ? কাকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছ, কার বুকেতে মাথা রাখ কাকে রেখেছ তোমার অন্তরে?


via Facebook http://bit.ly/2w6uk2B

রাত্রি বলে নরক আমায়,,, আর পাগল বলে হাওয়া... বুকের ভেতর অভিমান নামে তোমার আসা যাওয়া #রাত #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2Em2DqV

রাত্রি বলে নরক আমায়,,, আর পাগল বলে হাওয়া... বুকের ভেতর অভিমান নামে আমার আসা যাওয়া #রাত #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2HDjPJr

আকাশ ভরা চাঁদের আলো আমার পাড়ায় অন্ধকার। আজ মেয়েটির ফুলসজ্জা আর আমার আত্মার হচ্ছে সৎকার। #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2Hru0Ss

তোমার হরিন কালো আঁখি যুগলে হারাই আমি রোজই মেয়ে তুমি হয়ত জানোনা শরিরটাকে নয়ত তোমার মনটাকে যে খুজি। #মনওশরীর # সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2JYiLCP

Thursday, 16 May 2019

Wednesday, 8 May 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৬ সাইকো থ্রিলার শোধ (পর্বঃ০১) লিখাঃএন এম শান্ত ঘুম ভাঙ্গার আগেই আকাশের ফোনে ভেসে আসে একটি ফোনকল। ওপাশ থেকে কি সব চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। ঘোলাটে আর্তনাদ আর ঘন নিশ্বাসের আওয়াজ। স্পষ্টভাবে একটা কথাই শোনা গেল, “সব শেষ হয়ে যাবে। সব। ” সকাল সকাল এরকম ফাজলামোর কোনো মানে হয়? নির্ঘাৎ কোনো বন্ধু ফোন করে কোনো মুভির অডিও শুনিয়েছে। কিন্তু গলার আওয়াজগুলো কেমন যেন পরিচিত লাগছিল। কোথায় যেন শুনেছে। ধ্যাৎ! এখন এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনো মানে হয় না। বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকল আকাশ । রাতে বার্সার ম্যাচ দেখে ঘুম ভালো হয়নি। হেরে বসে বলদগুলো। গাল দিতে দিতেই ব্রাশ করল। বেরিয়ে মুল দরজার বাইরে রেখে যাওয়া পেপার আর ব্রেকফাস্ট নিয়ে এল। রান্নাবান্না করার ঝামেলায় না গিয়ে সকাল আর রাতের খাবারটা পাশের হোটেল থেকে নিয়ে আসে। ওদেরকে ওভাবেই বলা আছে। সকাল সাড়ে সাতটা আর রাত আটটায় খাবার দিয়ে যায় তারা। একেকদিন খাবারে একেকরকম আইটেম থাকে। ওখানকার বাবুর্চিটা একজন আর্টিস্ট। রান্নাটা তার শিল্প। ইঁদুর ফ্রাই করে দিলেও বোধ হয় অনায়াসে সাবাড় করে দিতে পারবে সে। পত্রিকাটা পড়তে পড়তে কফিতে চুমুক দিচ্ছে আকাশ । আকাশ একদম একা একজন মানুষ। তার পরিবার বলতে কিছু নেই। থাকলেও মনে করার সুযোগ নেই। আজ থেকে পাঁচ বছর আগের কোনও কথাই মনে করতে পারে না সে। অথচ এই পাঁচ বছর সে খুব স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করে গেছে। প্রথম প্রথম দুঃস্বপ্ন দেখত। একটা কালো ছায়া প্রকান্ড আকার ধারণ করে গোটা একটা বাড়ি গিলে ফেলছে। একসময় আপনা আপনিই বন্ধ হয়ে গেল এসব। সবকিছু আছে আকাশের , শুধু অতীতটাই নেই। ২২শে ফেব্রুয়ারী ২০০৯। ঘুম থেকে উঠেই আলিশান এক ফ্ল্যাটে নিজেকে আবিষ্কার করল আকাশ । খেয়াল করে দেখল, আগের রাতের কোনো কথাই তার মনে নেই। শুধু আগের কেন, কিছুই মনে পড়ছে না তার। বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে ঢুকল। বেরিয়ে ফ্ল্যাটের মূল দরজা খুলে ব্রেকফাস্ট আর পেপার নিয়ে ভেতরে আসল সে। ও জানত না যে বাইরে কে বা কেন এগুলে রেখে গেল। যেন স্বতাড়িত হয়ে কাজগুলো করছে। সদ্যপ্রস্তুত একটা রোবট পরিচালিত হচ্ছে একটি দক্ষ হাতে। খেয়ে দেয়ে রেডি হয়ে নিল আকাশ । বনানীর একটা অফিসে যেতে হবে। ওখানেই চাকুরী করে হয়ত। ১৩ই জানুয়ারী ২০১৪। বনানী টাওয়ারের পাশেই থামল ট্যাক্সি। ভাড়া মিটিয়ে অফিসে ঢুকতেই দেখল গেটে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। কৌতুহল নিয়ে ভেতরে ঢুকতে গেলে একজন কনস্টেবল বাধা দিল। জোর করল না, চুপচাপ বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতর থেকে একজন বেগুনি টাই পরা ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন। গোয়েন্দা হবে হয়ত, ভাবছে আকাশ । কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “আপনি কি আকাশ আলম?” জবাব দিতেই লোকটা হাত বাড়িয়ে দিল। মুহিবুল হাসান নাম লোকটার। ভরাট কণ্ঠে যা বলল, গত রাতে এখানে তিনটি খুন হয়েছে। তিনজনই অফিসে জব করতেন। আকাশ প্রায় থ’ হয়ে গেছে। প্রত্যেকের হাতে একটা নাম্বার ছুড়ি দিয়ে খোদাই করে লেখা। ১৭২। “এটা কোনো সিরিয়াল নাম্বার?” আকাশের প্রশ্নের ভ্রু কুঁচকে জবাব দিলেন গোয়েন্দা, “সেরকম হলে তো একেকজনের হাতে একেক নাম্বার থাকত।” গোয়েন্দা আকাশ কে নিয়ে ভেতরে গেলেন। রায়ান, মিলি আর মামুন খুন হয়েছে। ধপ করে মাটিতে বসে পড়ল আকাশ । খুব কাছের মানুষ ছিল এরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হল আকাশ কে। “রায়ান ছিল খুব কাজপাগল ছেলে। কথা কম বলত, তবে হিউমার অসাধারণ ছিল তার। সহজেই হাসাতে পারত। ওর পরিবার সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না আমি। বদ-অভ্যাস নামক কিছুই ছিল না ওর। মিলি খুব ছিচকাঁদুনে স্বভাবের। গোটা অফিস মাথায় করে রাখতে পারত। এমন বাচাল মেয়ে আমি জীবনে দ্বিতীয়টি দেখিনি। আর মামুন একেবারেই সাধারণ একটা ছেলে। তবে গল্প বলায় দারুন দক্ষতা ছিল তার। সাদামাটা কাহিনী বেশ জমিয়ে বলতে পারত।” আকাশের কথা শেষ হতেই টেপ রেকর্ডার বন্ধ করে দিল মুহিবুল হাসান। হালকা চা বিস্কুট খেয়ে চলে আসল আকাশ । বাসায় ঢুকতেই আচমকা মনে পড়ল, সকালে একটা ফোন কল এসেছিল। কিন্তু একটা বিষয় ভাবছে, খটকা লাগছে, অত সকালে ওরা তিনজন অফিসে কি করছিল? ফোনটা বের করে একটা মেসেজ চোখে পড়ল। পরিচিত একটা নাম্বার থেকে আসা মেসেজ, “হ্যাপি বার্থডে।”


via Facebook http://bit.ly/2PV5N9z

Sunday, 5 May 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৭ স্কেলেটন (পর্বঃ০১) লিখাঃএন এম শান্ত “স্কেলেটনটা তো ভালই প্রফিট দিল”, রাফিদের কথায় সম্বিত ফিরে পেল আকাশ। নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে সম্মতি দেয় সে। “পাস কোথ থেকে স্কেলেটন?” জিজ্ঞাসুদৃষ্টি নিক্ষেপ করে রাফিদ। ঠান্ডা চোখে তাকিয়ে আকাশ বলে,“খারাপ কিছু করিনা সেটা বলতে পারি। কেন ডাউটের চিপায় পড়ছিস নাকি?” আসলেই আকাশ মাটির মানুষ, খারাপ কিছু করবে না সে গ্যারান্টি আছে ভাবে রাফিদ। “আচ্ছা বাদ দে। বল কি করবি টাকাটা দিয়ে?” উৎসুক রাফিদ জানতে চায়। “তোর পেছনে উড়াব” আগের মতই নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে উত্তর দেয় আকাশ। আশ্চর্য,আনন্দ,জিজ্ঞাসাসহ বেশকিছু অনুভূতি একসাথে ভীড় জমায় রাফিদের ভেতর। মনে আনন্দ আর চোখে জিজ্ঞাসুদৃষ্টি নিয়ে আকাশকে জিজ্ঞাসা করে,“কেন? কোন খুশিতে?”। “নতুন জিএফ তো্র। আমার খরচ করার যায়গা নাই। আর বন্ধুর প্রেমিকার খাতিরে বন্ধুর জন্য তো খরচ করায় যায়, তাই না?” ঠান্ডা দৃষ্টি ছুড়ে রাফিদকে উত্তর দেয় আকাশ। “ও আচ্ছা! মামা তোমার জিএফ নাই তাই আমারটার পেছনে খরচ করবা। ভাল,ভাল, দুয়া করি তোর যাতে কোনদিন জিএফ না জোটে। আর আমার অনেকগুলা জোটে”, হাসতে হাসতে জবাব দেয় রাফিদ। খুবই আস্তে কি একটা জবাব দেয় আকাশ যেটা শুধুই তার কর্ণগোচর হয়। “কি বললি”,জানতে চায় রাফিদ। “কিছুনা। চল আর দুই দিন বাকি নিউ ইয়ারের। তোর জন্য শপিং করব আর তোর জিএফ এর জন্য গিফট নেব”। “চল” বলে উঠে দাঁড়িয়ে হাটতে শুরু করে তারা। পেছনের যায়গাটা, যেখানে তারা বসে একটু আগে একটা স্কেলেটন বিক্রি করেছে, সেটা জন্ম দেয় একটা নতুন কাহিনীর, নতুন সত্যের বা দাড়ি টানে এক পুরোনো ইতিহাসের। “গ্রাভিটি” মুভিটা দেখছে আকাশ আর রাফিদ। ঘরের লাইট ডিম করা। সামনে শোভা পাচ্ছে বিয়ার নামক পানীয়। বতলে চুমুকের সাথে চলছে মুভির ফ্রেমের এগিয়ে যাওয়া। হঠাৎ মুভি পজ করে রাফিদ, “দোস্ত একটা কথা বলতাম” মাথা নিচু করে বলে রাফিদ। “কি দরকার বলে ফেল। এত নাটক করার কিছু নাই” হিমশীতল গলায় উত্তর দেয় আকাশ। “আসলে একটা রুম লাগবে” এবারও মাথা নিচু করে বলে। বুঝেও না বোঝার ভান করে আকাশ বলে, “তোকে কি বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে যে তোর রুম লাগবে?” “আরেহ সেরকম না। আসলে নিউ ইয়ারে প্রাইভেট ডেটিং এর যায়গা পাচ্ছিনা। বাসায় আব্বু-আম্মু থাকবে, না হলে বাসায়ই নিয়ে যেতাম” উত্তেজিত হয়ে বলে রাফিদ। “আমার ডুপ্লেক্স বাড়ির উপরটা সবসময় ফাকায় থাকে” চকচকে চোখ নিয়ে বলে আকাশ। রাফিদ যেন এক নতুন আকাশকে দেখছে। এরকম উত্তেজিতভাবে কখনো দেখেনি সে তাকে। ভুরুজোড়ার মাঝে দূরত্ব কিছুটা কমিয়ে এনে রাফিদ বলে,“তাহলে তুই কি সেটা মিন করছিস যেটা আমি মনে করছি?” নির্লিপ্তদৃষ্টিটা জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে মাথা নাড়ে আকাশ।


via Facebook http://bit.ly/2WtYckU

Saturday, 4 May 2019

নীল ডায়েরি থেকে > "লিস্ট" নংঃ ৩৯ রাতগল্প #সাইকো সিগারেটের পুড়ে যাওয়া ফিল্টার এ্যাশট্রে তে গুঁজে দিয়ে, হালকা ধোঁয়া ছেড়ে, মেয়েটির দিকে এবার খানিকটা দৃষ্টিপাত করে আবির। কিছুক্ষণ ধরেই বেশ তাড়া দিচ্ছে মেয়েটি, “হু, কি যেনো বলছিলেন?” “যা করবেন, তাড়াতাড়ি করেন?” মেয়েটির কথায় তেমন কর্ণপাত না করে বেশ শান্ত গম্ভীর গলায় পাল্টা প্রশ্ন আবিরের.. “আপনি কদ্দিন হলো এখানে আছেন?” “ক্যান?” “দরকার আছে বলেই তো জিজ্ঞাসা করছি?” “৩ বছোর” “হু” “কিন্তু আপনে এইগুলা দিয়া কি করবেন?” “কৌতুহল? জানার আগ্রহ বলতে পারেন!” কৌতুহলী দৃষ্টিতে চারপাশে চোখ বোলায় আবির। সিড়ি পেরিয়ে আরো ক ‘টা ঘরের সাথে লাগোয়া এ ঘরটা বেশ ছিমছামই বলা চলে। চার’তলা বাড়ির দোতলার এই মাঝারি আকারের ঘরের ভেতরকার সাজসজ্জা বিবেচনায় তা মোটেই বিলাসবহুল নয়। ঘরের ভেতরে আসবাব বলতে একটা বিছানা, ছোট টেবিলসহ পুরোনো তিনটে সোফা আর আলমারি। বেশিরভাগ জিনিসেই ধূলো জমে আছে। দরজার বা দিকটায় মাঝারি আকারের প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিলও চোখে পড়ে। ওপাশের দরজাটা সম্ভবত আরেকটা রুমের ও কিচেনের। মাঝে মাঝেই ফ্যানের হাওয়ায় উপর থেকে ছাদের চুন খসছে। “হু, কতজন থাকেন এখানে? “আপ্নে এইসব শুইন্না কি করবেন?” “শুনছি, এমনিই” “আপনারে আবার পুলিশ টুলিশে পাঠায় নাই তো” উত্তরে আবির মৃদু হাসে। “হাসেন ক্যান” “পুলিশ?? না না ওসব কেউ নই, তবে ভালবাসার করাতে আচমকাই কেটে যাওয়া ছেড়া ঘুড়ি বলতে পারেন” “তাইলে এইগুলা জিগান ক্যান” “ঐযে বললাম কৌতুহল” বুক থেকে হঠাৎই শাড়ীর আঁচল ফেলে দেয় মেয়েটি। “আপনের কথা শুইনা প্যাট ভরবে না। আমার আরো কাম আছে, তাড়াতাড়ি করেন, আরো দুইজন আইবো” শাড়ির পড়ে যাওয়া আঁচলটা বুকে জড়িয়ে দেয় আবির। “আজ না হয় অন্যদের নামটা তালিকা থেকে বাদই দিন! আর সেজন্য চিন্তা করবেন না আপনার টাকাও আপনি যথাসময়ে হয়তো সময়ের আগেই পেয়ে যাবেন, আমি অন্যদের মতো ভোগ বিলাসে উন্মত্ত হতে আসিনি, হয়তো অন্যদের মতো আপনার শরীর-মাংসপিন্ড কে গোগ্রাসে গিলবোও না, আসলে জানেন রাতগুলো বড্ড বিষন্ন, হয়তো রাতের বিষন্নতাটা কাটাতে খানিক গল্প করতে আসা। ভোরের আলো ফুটতেই উঠে চলে যাবো” “খালি, খালি এ্যাম্নেই পয়সা দিবেন?” “যদি বলি দেবো?” “কি জানি, এক এক জনের এক এক রকম হাউস, খাড়ান তাইলে আমি একটু বাইরে থেকে আসতেছি” ২০ মিনিট পর… “কোথায় গিয়েছিলেন?” “হিহিহি! বাথরুমে” “ওও..আচ্ছা..তারপর বললেন না তো কতজন থাকেন এখানে?” “আগে পনরো জনেরও বেশি থাকতো..” “এখন?” “এখন আমরা ১৩ জনের মতো থাকি” “বাকীরা কোথায় গেলো” “কেউ চইলা গেছে, ভাইগা গেছে, পুলিশে ধরছে, একটা মাইয়া মরছেও, কি জানি কয়, সুইসাইড খাইসিলো” “আপনার নাম?” “জরি” “চমৎকার নাম?” “আগে নাম আছিলো জেরিন, রুবি বুবু নাম কাইট্টা জরি বানাই দিছে, হিহিহি হিহিহি” “তো মিস জরি, কদ্দুর পড়ালেখা করেছেন আপনি??” “এইডা দিয়া আবার কি করবেন?” “আবারো প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন ঠুকছেন? বললাম তো ওসব পুলিশ টুলিশ কেউ নই আমি, ওকে আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না তো, এক সেকেন্ড!”..পকেট হাতরে কালো মানিব্যাগের চেন টেনে পাঁচটা এক হাজার টাকার নোট গুজে দেয় জরির হাতে!..”আরো লাগবে? লাগলে দেবো সমস্যা নেই এবার আশা করি উত্তর দেবেন” “এইট পর্যন্ত পড়সিলাম, তারপর আর পড়তে পারি নাই” “কেনো?” “ক্যান আবার? অভাবে” জরির কথাবার্তায় চাল-চলনে এখন অবধি বেশ মিশুক বলেই মনে হলো আবিরের। চেহারাতেও বেশ একটা আভিজাত্যের ভাব আছে। অতি দ্রুত মিশে যাওয়ার ক্ষমতা খুব সীমিত সংখ্যক মানুষের থাকে। মাঝরাত্তিরে এক অজানা অচেনা যুবকের সাথে কেমন অল্পতেই বেশ মিশে গেছে মেয়েটা। সহস্র ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মুখ অবয়বে রাজ্যের হতাশা আর একরাশ আতংক নিয়ে বসে থাকে এরা। তারপরও এরা হাসে। অযুত নিযুত কষ্টগুলিকে ছাপিয়ে, আড়াল করে হাসার চেষ্টা করে চলে। লোকে বলে, এমনটা না হলে নাকি খদ্দের টেকে না, আর খদ্দের না টিকলে পয়সা জুটবে না। আসলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়াই তো জীবন, যেটা আজ অবধি আমি শিখে উঠতে পারিনি, বলে নিজেকে মনে মনে খানিকটা গালমন্দ করে আবির। তবে জরিকে মোটেই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত দেখাচ্ছে না। চোখেমুখে কেন যেন এসব কর্মযজ্ঞের লেশমাত্র নেই। বরং মনে হয় চোখজোড়ায় একঝাঁক রহস্য লুকোনো। “জরি, আপনি কাউকে ভালবেসেছেন কখনো?” প্রশ্ন শুনেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি.. “আমাগো তো ডেইলিই প্রেম করতে হয়, এইডাই তো আমাগো কাম হিহিহি হিহিহি” “আমি সেকথা বলিনি, আসলে দৈহিক সম্পর্ক ব্যাতিত মানুষের প্রেমের আরো একটা পরিভাষা আছে যেটার উৎস হচ্ছে মানুষের অতি পবিত্র মন, আমি আসলে মনের ভালবাসার কথা বলছি।” জরি ভ্রু কুচকে বলে, “কি জানি এইসব জানিনা, বুঝিও না”। পরক্ষণেই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে জরি। “জরি, আপনার বোঝার জন্য কথাগুলো হয়তো বেশ ভারী হয়ে যাবে তারপরও বলি, আচ্ছা আপনার কি কখনো এমন অনুভূতি হয়েছে যে কারো প্রতি আপনার এক অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করে বা করছে, আসলে কি বলবো? অর্থাৎ যখন আপনি চান যে সে সর্বদাই আপনার পাশেপাশেই থাকুক, আপনার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো সে জানুক গুরুত্ব দিক কিংবা তার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো আপনাকে জানাক, এবং আপনারও নির্দিষ্টভাবে ঠিক তার সাথেই কথা বলতে ইচ্ছে করে, ভালো লাগে। সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। তাকে, তার ব্যাক্তিত্বগুলিকে এমনকি সবকিছু কেই। সে যখন দীর্ঘ সময় আপনার থেকে দূরে থাকে আপনার তার সাথে খুনসুটি, হাসি ঠাট্টা কিংবা অজস্র অভিমান সহ এমন অনেক কিছু কিংবা অতি সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম অনূভুতি যা আপনার মনে এক অন্যরকম আবেগ কিংবা ছটফটানির সৃষ্টি করে, নাড়া দেয়। এবং যাকে নিয়ে আপনি হয়তো প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন?..হ্যাঁ, আসলে এরকম সহস্র আবেগ কিংবা অনূভুতির একত্রিত রুপই হচ্ছে ভালবাসা?? এমনটা হয়েছে কখনো আপনার?” না সূচক মাথা নাড়ে জরি। “আসলে, জানেন, এরকম অসংখ্য অনূভুতির শতকরা আশিভাগই মানসিক। যার মাঝে শারীরিক চাহিদার প্রায় অনেকটাই নিষ্ক্রিয় থাকে। এরকম আবেগ খুব সহজে আসেনা, কিন্তু যখন আসে এর ভালো কিংবা খারাপ দুভাবেই এর তীব্রতাগুলো দেখিয়ে দিয়ে চলে যায়। আর আমার সাথেও ঠিক তাই ঘটেছে। একবার নয় জীবনে দু দুবার আমার এমনটা হয়েছে। প্রথমবার ঘটেছিল তখন সদ্য কৈশোরে পা দিয়েছিলাম সবে। আর দ্বিতীয়টী ঘটেছে অতি সম্প্রতি একেবারে মাঝযৌবনে। প্রথম টি ছিলো মায়া আর দ্বিতীয়টি ছিলো ছলনা। ছলনা ভুলে গেলেও মায়া কাটাতে পারিনি। আমি বরং ছলনার গল্পটিই শোনাই। তখন সবেমাত্র ফ্রান্স থেকে ফিল্মমেকিং এর উপরে লেখাপড়া গুটিয়ে দেশে ফিরেছি। বলতে পারেন দেশের ভালোবাসার টানেই ফিরেছিলাম। সময় কাটাতে তাই হাতে ক্যামেরা তুলেছিলাম। সেসময় ঘুরেবেড়ানো কিংবা ফটোগ্রাফিই ছিলো আমার মূল আকর্ষণ ও কর্মযজ্ঞ। এমতাবস্থায়, নিতু নামের এক মেয়ের সাথে আকস্মিক ভাবেই পরিচয়। আর পরিচয় টা পরিণয়ে গড়াতেও বেশি সময় লাগেনি। বলতে পারেন, বেশ আবেগ ও তীব্রতা দিয়েই ভালোবেসেছিলাম নিতুকে। বলা চলে তখন পর্যন্ত আমার চোখে বেশ ভালো মেয়ে ছিলো নিতু। ভূবন ভোলানো হাসিতে মাতাতো চারপাশ! হৃদয়ে অদ্ভুত কাঁপুনি দিয়ে চলে যেতো। খুনসুটি, হাসি ঠাট্টা, বিগত দু এক বছরে একসঙ্গে ঈদ, নিউ ইয়ার, বর্ষা, ফাল্গুন-বসন্ত, ভ্যালেন্টাইনস ডে, জন্মদিন কিংবা পয়লা বৈশাখ কত কি যে পেরিয়েছি, তার ইয়ত্তা নেই। তবে অদ্ভুত ব্যাপার ছিলো কি জানেন? মাঝেমাঝে এবাহানা সে বাহানায় এটা সেটা এমনকি সরাসরি পয়সা কড়ি চাইতো। তারপরও তেমন কিছুই মনে করিনি। তুলে দিতাম নির্দিধায়। তবে একদিন ওর এক প্রতিবেশী ছেলের কাছে ওর ব্যাপারে কিছু কথা শুনে কেমন যেন খটকা লেগে যায় মনে। তারপরও কেন যেন নিজ কান ও সিক্সথ সেন্স কে কেনোক্রমেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। মাথায় ক ‘দিন ধরে ব্যাপারটা বেশ ঘুরপাক খেলো। মস্তিষ্কের ভেতরে রীতিমতো ছোটখাটো একটা ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলো। একসময় মন ও মস্তিষ্ক দুটোই বলে বসলো, “হয়ে যাক না একটা পরীক্ষা।” আমিও অমনি সাড়া না দিয়ে পারলাম না। ও আমার পরিবার সম্পর্কে প্রায় সবকিছুই জানতো। আমার বাবা গ্রামের অঢেল সম্পত্তি বিক্রি করে কবে শহরে এসেছিলেন, ব্যাবসা শুরু করেছিলেন ইত্যাদি ইত্যাদি। একদিন আচমকাই বলে বসলাম, বাবার ব্যাবসায় প্রচুর লোকসান হয়েছে আর আমাদের ইন্ডাস্ট্রি টাও বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। শরীফ মাজহার নামে এক ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী কিনে নিচ্ছেন। যদিও আদৌ শরীফ মাজহার কিনেন নি বরং বাবার কিছুদিনের অবসরের কারণে তাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। আরেকদিন তাকে বললাম যে গাড়িটা বুঝি বেচে দিতে হচ্ছে। এমনি করে ধীরে ধীরে ওর মাথায় একরকম গেথে দিতে লাগলাম আমার অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় যা হয়তো ক্রমশঃই নিম্নমুখী হচ্ছে। পাকা অভিনেতার মতো দু একদিন তো ওর কাছে ধারও করলাম। আমার অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পেতে পারে এমন সব জায়গায়ই মোটামুটি সিলগালা করে দিলাম। একদিন শোনা গেলো বাড়ি নিলামে উঠছে, বাবা আবারো গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে মাস কয়েকের জন্য নিজেকে পুরোদস্তুর আপাদমস্তক বদলে ফেলা। নিজেকে কেমন যেনো অর্থাভাবে জর্জরিত এক প্রাণী করে তুললাম। এসব করতে গিয়ে নিজেকে মাঝে মাঝে পাগল মনে হতো। মনে হতো আমি কি তবে পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমার কি মাথা বিগড়ে গেলো?? না, আমার মাথা বিগড়ে যায় নি ঠিকই কিন্তু নিতুর মন, তার চাওয়া পাওয়াগুলো ক্রমশঃই বিগড়ে যাচ্ছিলো। রোপণকৃত চারাগাছের ফল পেতে শুরু করেছিলাম কেবল। প্রতিক্রিয়াগুলোও বেশ দ্রুতই আসলো, অবশ্য এইছলে যে শুধু ভালবাসার মানুষটিকেই চিনতে শুরু করেছিলাম তা নয়, আশপাশের অনেক শুভাকাংখীদের মুখোশাবৃত চেহারাটাও চামড়া ছেড়ে বেরুতে শুরু করলো। অনেকটা একঢিলে দুইপাখি মরার মতো। বসে বসে “A friend in need is friend indeed” লাইনটা মাথায় বারবার চলে আসতো। সবাই কেমন যেনো এড়িয়ে চলতে চাইতো। মাঝে মাঝে হাসতাম। এদিকে ধীরে ধীরে নিতুর সঙ্গে দুরত্ব বাড়লো, রঙচঙে ভালবাসার রংগুলোও ফিকে হতে লাগলো। পৃথিবীর সবকিছু কেমন এড়িয়ে এড়িয়ে চলতে শুরু করলো। কিন্তু সে দুরত্ব বজায় রাখা খুব খুব খুবই কঠিন ছিলো। কয়েক দিনের ব্যাবধানে দু বার দুটি ভিন্ন ছেলের সঙ্গে নিতুকে আবিষ্কার করলাম, একবার প্রায় চোখাচোখি হয়ে গেলো। নিতু খানিকটা হতভম্ব হলো, বললো আমার বন্ধু। পরবর্তীতে অবশ্য তাদের পরস্পরের অতি ঘনিষ্টতার ব্যাপারটাও আবিষ্কার করে ফেলেছিলাম। মাঝে মাঝে ভাবতাম সব ছেড়েছুড়ে ওকে গিয়ে বলি যে আমি তো আগের মতোই আছি। কিন্তু তাৎক্ষণিক ই মস্তিষ্কের বিচক্ষণতাটা মনের অদ্ভুত দূর্বলতা টাকে সম্পূর্ণরুপে ঢেকে দিতো আর শান্তনা দিয়ে বলতো, ‘ধৈর্য্য ধরো, হয়তো শীঘ্রই নতুন করে চোখ খুলবে’ আর এদিকে আমিও পাকা অভিনেতার মতোই অভিনয় চালিয়ে গেলাম। আমাদের অতি ঠুনকো বিষয়েই কেমন ঘনঘন ঝগড়া বাঁধতে শুরু করলো, আজ এটা তো কাল সেটা নিয়ে। জমতে থাকা অসংখ্য পুঞ্জীভূত মেঘ এবার বিরাট গর্জন আরম্ভ করলো। আমার সাথে একদিন নিতুর তুমুল ঝগড়া বাধলো। সমস্ত অভিযোগ একীভূত হলো। অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেলাম আমি। বিরাটাকার ঝগড়ার মাঝখানেই আচমকা নিতু বলেই বসলো, আমার সাথে তার ভালবাসা টা ছিলো তার জীবনের সবচাইতে বড় ভূল। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ছলনার কাছে ভালবাসা পরাজিত হলো। সে আর এ সম্পর্ক রাখতে চায় না। আমি বেচারা তখন তার কাছে হয়ে গেলাম এক ব্যাবহৃত টিস্যু পেপারের মতো। বিলাসিতা, টাইম পাস, আমার কাছ থেকে এখন আর তার পাওয়ার তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই। পুড়ে যাওয়া সিগারেটের ফিল্টারের মতো এক টোকায় ছুড়ে ফেলে দিলো। ভালবাসার মাটির কলস বছর ঘুরতেই ভেঙে চৌচির। গ্রীষ্মের খরতাপে হৃদয়ও পুড়ে ছাই। নিতু কে একদিন দেখলাম নতুন কারো গাড়িতে একই ভাবে, একই সাজে, একই হাসি তে। সবই ঠিক আছে শুধু কয়েক মূহুর্তের ব্যবধানে পাশের মানুষটির আমূল পরিবর্তন। হয়তো নতুন কারো আঙ্গুলে আঙ্গুল গুঁজে তাকে বৃথা স্বপ্ন দেখানো। যে স্বপ্নে ভবিষ্যৎ বাড়ির ব্যালকনির ডিজাইন পর্যন্ত আঁকা হয়ে যাবে। এঘটনার পর দু একজন কাছের বন্ধু ছাড়া, কোনোরূপ গাঢ় সম্পর্কের পথ আর মাড়াই নি। দুঃখ ভুলে থাকতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ শুরু করলাম। এখনো মাঝেমাঝে হুটহাট বেরিয়ে পড়ি। একবার অবশ্য আত্নহননের চেষ্টাও করেছিলাম। পারিনি বলবো না; আসলে মরিনি। সৃষ্টিকর্তা মারেননি। “কিন্তু এ গল্প আমাকে শোনালেন কেন?” “শোনালাম এজন্য যে আপনারা প্রস্টিটিউট পেটের তাগিদে আর নিতুরা বিলাসিতায়। আর আমি নিতুকে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছিলাম, তবে অনেক কস্টে ধাক্কাটা কাটিয়েছি বলতে পারেন” জরি খিলখিলিয়ে হাসতে হাসতে বলে, “ওমা, তাইলে তো আপনে ভালোই ছ্যাঁক খাইসেন দেখতেসি” “মজা নিচ্ছেন বুঝি! আসলে ওটা একটা মোহ ছিলো, ছ্যাঁক তো খেয়েছি তার আরো পরে, আর সেটা দমাতেই তো এখানে আসা আমার, যখন শুনলাম…। “কি?” “না, থাক” “ক্যান, আপনের ছলনার গল্প শুনলাম, আপনের মায়ার গল্পটাও বলেন” আবির মৃদু হেসে বললো,”অবশ্যই বলবো, বলবো বলেই তো এসেছি। কিন্তু তার আগে তো আমাকে আপনার গল্পটাও শুনতে হবে তাইনা” “আমার গল্প?” “হুমমম, আপনার গল্প! আপনার এ জীবনে আসার গল্প, এপথে আসার গল্প, আপনার দুঃখ দুর্দশার গল্প। যারাই এপথে আসে তাদের প্রত্যেকেরই কারো না কারো কোনো না কোনো গল্প থাকে?” “সে বিরাট হিশটিরি, আপনে শুইনে কি করবেন?” “আহা বললাম তো, কিছু শুনবো এবং কিছু শোনাবো বলেই তো এসেছি, এত ইতস্ততঃ না করে বলে ফেলুন” “বড় দুঃখের কাহিনী সাব, সেই কথা মনে পড়লে আমার এখনো চোখের পানি আসে।” তারপর, খানিকক্ষন দুজনই বেশ নিশ্চুপ, নীরবতা ভেঙে জরিই প্রথম মুখ খোলে.. “ঠিক আছে, শুনতে যখন চাইলেন তখন বলি…চোখে জল নিয়ে জরি বলতে শুরু করলো, ইতিমধ্যেই গলায় স্বরও কেমন কাঁদো কাঁদো শোনাচ্ছে ..মনে হচ্ছে অনেককালের জমেথাকা কোনো কষ্টের মেঘ আজ বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার অপেক্ষায় …… জরিদের গ্রামের নাম ছিলো ফুলপুর। ছ সাত বছর আগেও সে গ্রামের রাস্তাঘাটের চেহারা ছিলো কংকালসার শরীরে চিমসানো গালভাঙা বুড়োদের মতো। একেবারে বেহাল দশা যাকে বলে। মাইল কয়েক দূরে আধাপাকা বিদ্যালয়ই ছিলো ছ সাত গ্রামের শিক্ষা ব্যাবস্থার একমাত্র অবলম্বন। এ অঞ্চলে একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলতে ছিলো হাজী করিম উচ্চ বিদ্যালয়। পায়ে হাটা কাচা পথ পেরিয়েই বিদ্যালয়ে ছুটতে হতো জরিকে। মাঝেমধ্যে এর ওর কাছ থেকে চেয়েচিন্তে বই টই পড়ে টেনেটুনে যখন সপ্তম শ্রেণীতে তখন অকালেই জরির মা মরলো কলেরায়। যাতায়াত ব্যাবস্থা, অন্ধবিশ্বাসের মায়াজাল টপকানো কিংবা যে কোনো অযুহাতেই হোক ডাক্তার হসপিটালের ছিটেফোঁটাও দেখা মিললো না। ধোলু ফকিরের তাবিজ কবচ, অল্পবিস্তর ঝাড়ফুঁক-পানিপড়া কোনরুপ সদগতি করতে না পারায় জরির মাকে বেশ অকালেই দুনিয়া ছাড়তে হলো। জরিকে ছাড়তে হলো মায়ের ভালবাসা। আর জরির বাবা নয়া ভালবাসার খোঁজে ঘরে তুললো জরির নতুন মা কে। প্রথম দিকে নতুন মা মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনালেও ধীরে ধীরে সে মিষ্টি তেতো তে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। মাস কয়েক যেতে না যেতেই সে বুঝতে শুরু করে নতুন মা আর নতুন নেই; বেশ পুরোনো হয়ে গেছে, সেটা তার সৎ মা। দিন গড়াতে লাগলো আর জগৎসংসারে একলা জরির চোখের সামনে সৎমায়ের আসল অবয়বটা ধীরে ধীরে ফুটে বেরুতে লাগলো। তারপরেও মানসিক কিংবা শারীরিক অত্যাচারে জর্জরিত হয়েও কোনরকমে খেয়ে পড়ে বেশ টিকেই ছিলো। কিন্তু সেই টিকে থাকার দৌড়ে আচমকাই একটা দূর্ঘটনায় যেন অকস্মাৎ ই মাথায় বজ্রপাত ঘটলো। বছরের মাঝামাঝি তখন সবে অষ্টম শ্রেণীতে। হাসিখুশি মেয়েটি আচমকা এমন কান্ড বাধিয়ে বসবে তা বোধহয় কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি। মাঝে মাঝেই ক্লাসের একটা ছেলে বেশ ইয়ার্কি করেই ক্ষ্যাপাতো, “তুই আমার বউ হবি”…ক্লাসেও অনেকেই তাকে ভাবী বলে ক্ষ্যাপাতো। একদিন মাঠে খেলতে খেলতে আচমকাই ছেলেটা তাকে বলে বসলো “তুই আমার বউ হবি”… আর অমনিই ও রেগে গিয়ে ছেলেটিকে সজোরে ধাক্কা মেরে বসে। তার হয়তো খেয়ালেই ছিলো না একদম ইঞ্চি কয়েক পাশেই গভীর পুকুর। ধাক্কায় তাল সামলাতে না পেরে ছেলেটি পুকুরে গিয়ে পড়ে। সাঁতার না জানা ছেলেটি গভীর জলে হাবুডুবু খেতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে আতংকিত মনে ছুটে সেখান থেকে পালিয়ে আসে সে। গ্রামের চেয়ারম্যান সাহেবের ছোটভাইয়ের ছেলে হওয়ায় জরির পরিবারের ভয় ও উৎকন্ঠাও তখন তুঙ্গে। সেটা পুরোদস্তুর মাত্রা ছাড়ায়, যখন রাতের বেলা রহিম মিয়া ফিসফিসিয়ে খবর দিলো, “বাঁচতে চাইলে মাইয়ারে লইয়া তাড়াতাড়ি পলাও, অবস্থা তো সুবিধার না, পোলা তো শুনলাম মইরা গেছে”… সে রাতেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে জরির পরিবার গ্রাম ছাড়লো। দু দিন বাদে তাদের আশ্রয় হলো ঐ গ্রামেরই নিকটবর্তী মাইল কয়েক দূরে ভারতীয় সীমান্তবর্তী এক গ্রামে। এর মাসকয়েক পরেই জরির বাবা ভারতে চলে যায়। সেই যে গেলো আর ফিরে এলো না। দেখতে দেখতে একবছর পেরিয়ে গেলো কিন্তু জরির বাবার কোনো হদিশ মিললো না। এদিকে তার উপর নেমে এলো সৎমায়ের অত্যাচারের খড়গ। তবে সদ্য কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দেয়া মেয়েটির চোখ একদিন আনন্দে জ্বলজ্বল করে উঠলো। তবে তা আনন্দ ছিলো নাকি আশার ধোঁয়াশা তা বুঝতে বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিল … “জরি মা, এদিকে আয়” “কি চাচা?” “আরে জব্বর খবর আছে” “কি?” “আমি যেইডা দেখছি, শুনলে তুই বিশ্বাস করতে পারবি না” “কি??” “আরে, তর বাপের সাথে আমার দেখা হইসিলো তো?? তর কথা জিগাইলো?” “সত্যি!!!” জরির চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে! হয়তো এতোদিনে তার কষ্ট ঘুচবে এই আশায়। “কোনহানে” “কোনহানে আবার? ভারতে” “ক্যামনে?” “তুই তো জানোস আমি মাঝেসাঝে ভারতে যাই, জিনিস-পাতি আনি, আমার আবার গরুর ব্যাবসাটাও দেখতে হয়। গত সপ্তায় গেলাম ভারতে, ওইখানে বাজারে এক লোকেরে দেইখা মনে হইলো ইনারে কই জানি দেখছি মনে হয়, এই বইলা কাছে যাইয়া জিজ্ঞেস করতেই.. আরে বদরুল ভাই না? বইলে আমারে বুকে জড়ায় ধরলো, আমি তো অবাক। যার কথা কইতাছি, এইটাই তর বাপ” “সত্যি” “সত্যি না তো, আমি বানায় কইতেছি নাকি” “তারপর” “তারপর আমার সেকি খাতির যত্ন, এমন যত্ন বিদেশে নিজের লোকরেই মাইনসে করে।” “আব্বা আমার কথা কিছু কইছে”, আনন্দমাখা জলে জরির চোখ চিকচিক করে ওঠে। “আরে কইছে মানে, সেই কথা বলতেই তো এইখানে আসলাম রে পাগলী” “কি কইসে?” “তোকে ঐখানে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়া যাইতে বলসে” জরি অবাক হয়ে প্রশ্ন করে, “আমি যাবো??” “নয়তো কি? তোর বাপে আসবে? তোর বাপের কাজ ফালাইয়া এক চুল নড়নের টাইম নাই ঐখানে” উত্তরে জরি নিশ্চুপ থাকে। “কি রে কথা কস না ক্যান, কি চিন্তা করোস” “কিন্তু আমি যাবো ক্যামনে, ঐদেশে যাইতে গেলে শুনসি পাসপোর্ট না কি জানি লাগে?” “আরে ধুর!! পাগলী কয় কি? কিচ্ছু লাগবে না, আরে তর বাপে গেছে না, আমি যাইনা, আরে.. আমারে দেখলে ঐ বিডিআর দেখছস?, খাড়াইয়া ছ্যালুট দেয়, সব হইতেছে গিয়া ট্যাকা, বুঝলি!” “আমি ট্যাকা পাবো কই?” “আমি আছি কি জন্যে, তর বাপেরে কথা দিসি। একবার যখন দায়িত্ব নিছি, তখন যাওয়ার সব দায় দায়িত্ব আমার।” “কবে যাইবেন?” “আমি যাবোনা, আমার অতি বিশ্বস্ত এক লোক আছে, সে নিয়ে যাবে! পরশু রাইত ১২টার পর রেডি থাকবি” “রাইতে?” “হ, রাইতে। আরে বিনা টাকায় চুরি কইরা যাবো, রাইতে নাতো কি দিনে নাকি? তবে বিডিআররে খালি চা পান বাবদ কিছু দিতে হবে। ঐটা আমি দিয়ে দিবোনে” গল্প বলার মাঝে আচমকাই কয়েকবার দরজার খটখট্ শব্দটায় সম্বিত ফেরে আবির ও জরির। তন্ময় হয়ে গল্প শুনছিলো আবির। জরির গল্প বলায় বাধা পড়ে। আবির খানিকটা চমকে ওঠে। “কে এলো দরজায় এতো রাতে” জরি বিরক্ত হয়ে উত্তর দেয়, “আমার এইখানে বদমাইশ মানুষ ছাড়া আর কে আসতে পারে” আবির মৃদু হেসে জিজ্ঞাসা করে,”আমাকেও কি আপনার বদমায়েশ মনে হয়” জরি মুচকি হেসে বলে,”এখন তক তো কোনো বদমাইশি দেখি নাই, হিহিহি দেখি কতক্ষন ভদ্রলোক থাকেন?” “আপনার হাসি টা না বেশ রহস্যময়” “তাই বুঝি?” “হুমমম!” এই কে রে দরজায়? এত রাইতে কে?, হাঁক ছাড়ে জরি। “আমি!”, দরকার ওপারে পুরুষের কন্ঠস্বর। “সকালের আগে দরজা খোলা যাবে না, নিষেধ আছে, রুমে লোক আছে” কিছুক্ষণ পরে আর কোনো শব্দ পাওয়া যায় না। হঠাৎই আবির বলে, “বেশ ডুবে গিয়েছিলাম আপনার জীবনের ভেতরে, আপনার কষ্টটা অনুভব করতে পারছি” “চা খাবেন!” “যদি বিষটিষ বা ঔষধ না মিশিয়ে দেন তবে চলতে পারে এক কাপ, অবশ্যই চিনি ছাড়া” “মানে?” উত্তরে আবির খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে। জরি খানিকটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “হাসতেছেন ক্যান? আর বিষ আসলো কোত্থেকে” “না হাসছি ভেতরের কষ্টটাকে চাপা দিতে আর বিষের কথা বলছি এজন্য যে শুনেছি আপনার এখানে রাত কাটাতে এসে নাকি কয়েকবার লোক মরেছিলো? কেউ দোতলা থেকে পড়ে, কেউ নিখোঁজ, কাউকে সাপে কেটেছিলো! আমি ভাবছি কি জানেন? আমি ভাবছি আমি কি করে মরবো? আমি মরে গেলেও বোধ হয় কারো তেমন একটা ক্ষতি হবেনা। হাহাহাহাহা!” “এইসব কথা আপনারে কে বলসে, কেন যে আজেবাজে কথায় কান লাগান, সব ভুয়া” “আচ্ছা, আপনাকে বিশ্বাস করলাম। কোথায় আপনার চা?” “আঙুলে কড় গোনেন, ১ থেকে ১০০, এরমধ্যে চা চলে আসবে” “হাহাহাহাহা! তাই নাকি। স্ট্রেঞ্জ, আপনার কথামতো এই আঙ্গুলে কড় গুনতে শুরু করলাম .. এক, দুই, তিন, চার,পাঁচ” “উফফফ!” “কি হলো?” “এতো তাড়াতাড়ি না তো, আস্তে” “এগারো, বারো, তেরো” “আরেকটু ধীরে” “আরো ধীর গতিতে? ওকে, উনিশশ, বিশ একুশ” “এবার কিন্তু বেশী আস্তে হয়ে যাচ্ছে” “হাহাহাহা, আচ্ছা দেখুন তো এবার, ছত্রিশ, সাইত্রিশ, আটত্রিশ, উনচল্লিশ” জরি হাসি মুখে বললো, “হ্যাঁ, এইবার ঠিক আছে” আবিরও একটা হাসি দিয়ে বললো “ওকে” কয়েক সেকেন্ড পর… “ঠিক আছে, হইসে এখন আর আপনাকে কস্ট করে গোণা লাগবে না, চা তৈরি” “ওকে” চা দিতে দিতে জরি বললো, “আপনি কিন্তু এতক্ষনেও আপনার নাম বলেন নাই” “ওওওহহ্, তাই তো, ভেরি সরি, আমার নাম আবির, নাম ধরেই ডাকতে পারেন সমস্যা নেই” “হুমমম” চায়ে চুমুক দিতে দিতে আবির বলে, “তারপর আপনার কি হলো সে তো বললেন না, কি করে ভারতে গেলেন? পাচারকারীদের খপ্পরে পড়লেন, উদ্ধার পেলেন? ওরা তো পাচারকারীই ছিলো তাইনা?” “হুমমম, ঠিকই ধরসেন ওরা পাচারকারীই ছিলো, আমি বুঝতে পারসিলাম না কিন্তু আমি ভারতে যাই নাই, কপালজোরে ফিরছি” আবির ভ্রু কুঁচকে বলে, “যান নি! মানে, তাহলে..” “তাহলে ..কি?” “না, কিছুনা! আপনি বলুন” “আমাকে এরপরে একদিন রাত্রে এসে ওরা বললো সেদিন রাইতে যাবে, আমি রেডি হইয়া নিলাম, দেখলাম আমার মতো আরো অনেক মেয়ে ওইখানে। আমি আর আরেকটা মেয়ে, যাকে আমি এখন রুবী বুবু বলে ডাকি। আমরা হঠাত কয়েকজনের ফিসফিস শুনলাম। বুবু আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়। আজকে আমি এই জায়গায় এইখানে শুধু বুবুর জন্যেই! সেইদিন বুবু আমি আর কয়টা মেয়ে কে জানাইয়া দেয় আমাদের পাচার করা হইতেছে। আমি কান্না জুইড়া দিলাম, আব্বার কাছে যাবো, রুবি বুবু ধমক দিয়া বুঝাইলো সে নিজের কানে শুনছে আমাদের পাচার করা হইতেছে। আমরা সক্কলে মিলে একটা বুদ্ধি করলাম। আমরা সীমান্তের কাছে যাইয়া চিৎকার দিলাম, আমাদের পাচার করা হইতেসে। ওইপারে বিএসএফ ফাকাঁ গুলি শুরু করলে, এইপাশের বিডিআর ধাওয়া দেয় আর আমাদের সবাইকে ধইরা ফেলে। পরে নারী মানবধিকার না কি জানি একটা জায়গা আছে, সেইখানকার মহিলারা আইসা আমাদের নিয়া যায়। আমাদের কিছু টাকা পয়সা আরো নানান সাহায্যও দিলো। কিন্তু সেই সাহায্য দিয়ে আর কয়দিন! আমি রুবি বুবুর সাথে গ্রামে গেলাম। “এক মিনিট!”, কথার মাঝে আবির জরিকে থামায়। “কি?” “তাহলে এরপর আপনি আবারো গ্রামে গেলেন!” জরি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, “হুমম, গেলাম। কিন্তু সবাই আমাদের দেখে ছিঃছিঃ করলো। আমরা নাকি ভারত থেকে এইসব কাজ করে ফিরছি। কেউ আমাদের কথা শুনলো না। আমরা ৭জন মিলে ট্রেনে ঢাকায় চলে আসলাম! “আচ্ছা আপনি যে গ্রামে গিয়েছিলেন সেখানে আপনার সৎ মাও কি আপনাকে তাড়িয়ে দিলো?” “হুমমম! সেও আরেক লোকের সাথে বিয়ে বসছিলো পরে” “তারপর ঢাকায় এসে কি করলেন?” জরি হতাশ মুখে বলে,”ঢাকায় আর কি করবো? একদিন পেটের দায়ে এইসব শুরু করলাম। কিন্তু আমার একটা সত্য কথা বিশ্বাস করবেন? আবির মৃদু হেসে বলে, “আমি তো আপনার সত্য টা শোনার জন্যই মুখিয়ে আছি। বলে ফেলুন।” “আমি এইসব বেশ্যাবৃত্তি কখনোই করি নি কোনোদিন” “জরি, সত্যটা বলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি এটা শোনার অপেক্ষাতেই ছিলাম। আমি কিন্তু একদম শুরুতেই ধরে ফেলেছিলাম, আপনি প্রস্টিটিউট নন, আসলে এখানে আসার আগে অনেক কিছু জেনে তবেই এসেছিলাম। এমনকি আপনি যে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করে গেছেন, এটাও আপনার অভিনয়েরই অংশ ছিলো এবং নিজেকে খানিকটা প্রস্টিটিউট প্রমানেরই চেষ্টা ছিলো, এ্যাম আই রাইট? জরি মাথা নিচু করে বললো, “হুমমম” “এবং আপনি নিশ্চয়ই শুধুমাত্র অস্টম শ্রেণী পড়ুয়া নন” “হুমমম, আমি এখনো পড়াশোনা করছি, একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে। আমাকে রুবী বুবু কখনোই তার ঐ জীবনের সাথে আমাকে জড়ান নি, পাখা দিয়ে নিজ সন্তানের মতো আগলে রেখেছিলেন, তবে আমার জীবনের চড়াই উৎরাইয়ের যে গল্প বলেছি তার পুরোটাই সত্য, একবিন্দুও মিথ্যে নয়” “আমিই সম্ভবত প্রথম কোনো ব্যাক্তি তাইনা যে জানতে পারলো আপনার আসল পরিচয়” “হুমমম” “ঝাপসা ব্যাপারটা এখন আমার কাছে পুরোপুরি পরিষ্কার! আপনি প্রস্টিটিউট নন কিন্তু আপনি এ ঘরে একলা বসে কেন? কার অপেক্ষায়? এ ঘরে যে মেয়েটা থাকে সে কোথায়? “ও প্রতিমাসে বাইরে যায়, তখন আমি মাঝেমাঝে এভাবে বসি” “কেন?” “শাস্তি দিতে” “কিন্তু কেন?” “প্রতিষোধ” “কিসের?” জরি গম্ভীর গলায় বলে,”এ পুরুষ সমাজের প্রতি, কিছু পশুর প্রতি” “আচ্ছা আমি যে আপনার সবকিছু জেনে গেলাম আমি যদি কাউকে বলে দিই” “আমি জানি আপনি বলবেন না, এও জানি আপনি আগে থেকেই অনেককিছু জানতেন, এবং কিছু না কিছু জেনে তবেই এসেছেন!” “আমি শুরুতেই আপনার চোখে বহুকালের ক্ষোভের আগুন দেখেছিলাম। বুঝতে পারছি অনেক ঘৃনা, অনেক ক্ষোভ জমেছিলো আপনার মনে। ভোরের আলো পুরোপুরি ফুটে গেছে আমাকে হয়তো আজকে যেতে হবে। তবে আপনার সঙ্গে কথা বলে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো, ঝাপসা জীবনকে নতুন করে দেখার সুযোগ পেলাম। নিতুদের চাইতে আপনার মতো অসংখ্য জরি কিংবা রুবীদের জন্য মনের ভেতরে অনেকখানি শ্রদ্ধা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। এবং এও জেনে যাচ্ছি যে, সভ্য সমাজের শতশত ছল চাতুরে নিতুগুলোর চাইতে ব্রোথেলের জরি, রুবী রা অনেক বেশি সভ্য ও উঁচু স্তরের। জরি বা রুবীদের পেছনে কঠিন বাস্তবতার কোনো না কোনো সমীকরণ থাকে বলেই তারা পেটের তাগিদে ব্রোথেলে, নিতুদের কোনো তাগিদ নেই তারপরও তারা হাতের আঙ্গুল, স্বপ্ন কিংবা বিছানা বদলায় বারবার। আপনার সাথে আমার আজকে রাতের এতোসব কথোপকথন হয়তো আমার কাছে সবসময় রাতগল্প হয়েই রবে। হয়তো আবার কোনো এক বিষন্নরাতে আসবো আপনার সঙ্গে মশগুল হতে রাতগল্পে। আমি মায়া কাটাতে এসে দ্বিগুন মায়ায় পড়ে গেলাম, সে গল্প শোনানোর জন্য হলেও কথা দিচ্ছি অবশ্যই আসবো।” উত্তরে জরি শুধুই নিস্পৃহ দৃষ্টিতে পেছন ফিরে বিছানার দিকে তাকিয়ে থাকে, হয়তো ঝরে পড়া কান্না লুকোনোর চেষ্টায়। অতীত স্মৃতির পর্দায় আজ বহুদিন পরে কেউ টোকা মেরেছে, তাই ভেতরে ভেতরে বেশ থমকে গেছে সে! ঢেউয়ের আলোড়ন থামতে চাইছে না, এখনো চোখ বেয়ে জল ঝরছে। এদিকে কখন আবির দরজা পেরিয়ে বাইরে চলে গেছে, সে খেয়ালই করে নি। ঘণ্টাখানেক হয়েছে ভোরের আলো ফুটেছে। কালো জীপটায় বসে, দরজা দিয়ে ততক্ষণে গাড়িতে চাবি ঘুরিয়ে দিয়েছে আবির। ঘরের ভেতরে স্থির বসে জরি, পাশ ফিরে আবিরকে না দেখে সে হঠাৎই অস্থির হয়ে উঠলো…হঠাৎই মুখ থেকে আপনা আপনিই বেরিয়ে আসে, “ওহ্ নো, সর্বনাশ হয়ে গেছে”, এমন সময় নিচ থেকে গাড়ি স্টার্টের শব্দ..অমনি চটজলদি শাড়িটা টেনে, একলাফে হুড়মুড়িয়ে বিছানা ছেড়ে, বাড়ির মূল ফটকের দিকে দ্রুত পা বাড়ায়। এমন সময়ই বাইরের ধম করে হওয়া শব্দটা কানে আসে। দরজা পেরিয়ে আতঙ্কিত চোখে পুরোপুরি বাইরে বেরোয়। চারপাশে খানিকটা চোখ ঘোরাতেই দেখে একটা কালো জীপ পথের ওপাশের গাছটায় সজোরে ধাক্কা মেরেছে, সামনেটা প্রায় দুমড়ে মুচড়ে একাকার বা পাশের চাকা খুলে এসেছে প্রায়। এক অজানা উৎকন্ঠা নিয়ে দ্রুতপদে সেদিকে ছুটে যায় জরি। বিস্ময়ে তার মুখ হা হয়ে গেছে। জানালার দিকটাতে মাথা বাড়িয়ে ভেতরটায় দৃষ্টি দিতেই রক্তাক্ত আধবোজা চোখ এক ছেলেকে চোখে পড়ে তার, ভয় আর উৎকন্ঠায় ঠান্ডা হয়ে আসে সমস্ত শরীর, তার আশংকাই সত্য। বিস্ময়ে, আবেগে হাতের তালুতে নিজের মুখ চেপে ধরে সে। ঠিক এমন সময় হঠাৎই তার কানে পড়ে গোঙানির শব্দ, “পাপ..প্পা.নি” জরি দৌড়ে বাড়ির ভেতরে চলে যায়, প্লাস্টিকের বোতলে পানি নিয়ে আসে.. জরি উতকন্ঠিত গলায় বলে,”আপনি বেঁচে আছেন?” “আপনি অবাক হয়েছেন?”, গোঙায় আবির। জরি উত্তেজিতভাবে বলে, “কিন্তু, আপনাকে তো যত দ্রুত সম্ভব হসপিটালে নিতে হবে, সমস্ত শরীর বেয়ে রক্ত ঝরছে” আবির খানিকটা হাপিয়ে ও ককিয়ে উঠে বলে, “ভয় পাচ্ছেন? গাড়ির ব্রেকের তারটা আপনি কি করে ছিড়লেন বলবেন?” “প্লীজ আমায় বিশ্বাস করুন, আমি আপনাকে বলতে চেয়েছিলাম, পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি আপনি চলে গেছেন” “বিশ্বাস করলাম, কিন্তু এটা করলেন কখন? “আমি করিনি, করতে বলেছিলাম, আপনি টাকা দেয়ার পর উঠে বাইরে গেছিলাম তখন, কিন্তু এখন এসব বলার সময় নেই” “আমার প্যান্টের বা পকেটের ফোনটা বের করুন ডি.এ.ডি(Dad)নামে একটা নাম্বার আছে, ওটায় ডায়াল করুন। ৫ মিনিটে বাবা চলে আসবে, ফাঁকা রাস্তায় বেশিক্ষণ লাগবে না, আর তার আগে মরে গেলে গেলাম, এর আগে অবশ্য একবার মরার চেষ্টা করেও মরিনি, এবারও বোধহয় মরবোনা! কই মাছের প্রাণ।” “ওকে” “আচ্ছা, তারমানে এর আগে এখানে এসে যারাই মারা গেছে এখানে তার পেছনেও তাহলে আপনিই ছিলেন! আজকের প্ল্যানটাও কিন্তু খারাপ ছিলো না খুন করে গাড়ি তে চড়িয়ে এক্সিডেন্ট বলে চালিয়ে দেয়া।” “এখন, এই অবস্থায়ও মজা করছেন” “মজা? গোটা জীবনটাই তো আমার আর আপনার সাথে মজা করেছে, তবে রাতটাও বেশ মজারই ছিলো, আপনি একদম ভয় পাবেন না, কয়েকদিনেই সেরে উঠবো। আপনাকে কথা দিয়েছি না, আমি ফিরবো, অবশ্যই ফিরবো” জরি কাপাকাপা হাতে দ্রুত আবিরের বাবাকে ফোন দেয়। ১০ মিনিটেরও কম সময়ে, তিনটি গাড়ি এসে থামে। একটি এ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়ি, ও একটি সাদা কার। এ্যাম্বুলেন্সের থেকে স্ট্রেচার সমেত দ্রুত দুজন বেরিয়ে আসে। লাল গাড়িটা থেকে কালো পাঞ্জাবী চোখে চশমা পরিহিত এক লোক বেরিয়ে তড়িৎ গতিতে এক্সিডেন্ট স্পটের দিকে দ্রুত পা চালালেন, একরকম দৌড়েই গেলেন তিনি। চশমা খুলে কান্না বোধহয আর় সংবরণ করতে পারলেন না। ইনিই আবিরের বাবা। একসময় পাশ থেকে কাধে শান্তনার হাত রাখলো পুলিশ অফিসার। ভয় আর শরীরের শিহরণ ক্রমশঃ বেড়ে চলেছে জরির, এক অজানা ভয়। স্ট্রেচারে নিয়ে যাওয়ার সময় আধবোজা চোখে রক্তাক্ত হাতে জরির শাড়ি চেপে রইলো আবির, জরির কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো, “আপনাকে আমার আসল গল্প না বলেই চলে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম বলে দিয়েই যাই, যে ছেলেটিকে আপনি ধাক্কা মেরে পুকুরের পানিতে ফেলেছিলেন সেই ছেলেটি সেদিনও মরেনি আর আজও মরেনি, দু দুবারই বেচে গেলো আর ওটাই আমার মায়ার পড়ে যাওয়ার গল্প, যেজন্য আমার এখানে আসা”..। জরি আবিরের কানে কানে বললো, “আপনি তখনো পাগল ছিলেন, এখনো তাই আছেন”। আবির রক্তাক্ত হাত নেড়ে বিদায় নিলো। আবিরকে দ্রুতই এ্যাম্বুলেন্সে তুলে গাড়ি ছেড়ে দিলো। যতদূর চোখ যায় জরি সে পথের পানে তাকিয়ে রইলো। এক সপ্তাহ পরের ঘটনা । জরির গ্রামের সেই পুকুরটায় একটা মেয়ের লাশ ভাসছে । লোকজন তাকে তীরে উঠিয়ে দ্দেখল চেহারা বুঝা যাচ্ছে না। কেউ একজন খুব ভয়ঙ্কর ভাবে মুখটা থেতলে দিয়েছে । পাজরের হার বের হয়ে আছে । মনে হচ্ছে খুব্লে নিয়েছে কেউ । সারা শরীর নীল হয়ে আছে । মনে হচ্ছে নীল রঙ দিয়ে রাঙ্গিয়ে দিয়েছে কেউ । মেয়েটা কে কেউ না বোঝায় সবাই আতঙ্কিত । পরিবারের কেউ নেই বলে কান্নাকাটি করছে কেউ তার মৃত্যুতে তবে একটু দূরে দাড়িয়ে আছে একটি ছেলে , আর তার মুখে একটু অদ্ভুত ধরনের হাসি দেখা যাচ্ছে। এদিকে রুবু বুবু খুজছে জরিকে তিন্দিন ধরে । কারন তিন দিন হল মেয়েটি লাপাত্তা।


via Facebook http://bit.ly/2UXAnR2

#৪৯কবিতা তুমি তাকাও, না তাকাও ! বিরক্ত হয়ে,যতই মুখ বাঁকাও ! ছায়া হয়ে আছি,তোমার পাশাপাশি । তুমি শোনো, না শোনো ! অতিষ্ট হয়ে,যতই দিন গোন ! চুপি চুপি আছি,তোমার কাছাকাছি । তুমি দেখ, না দেখ ! মনের মাঝে রাখ, নাইবা রাখ ! তবু ও বলব আমি,তোমায় ভালবাসি । তুমি কাছে নাও, না নাও ! রাগ করে,যতই সরে সরে যাও ! গোলাপ হাতে আছি,বলতে তোমায় ভালবাসি । তুমি বল না বল ! মুখ ঘুরিয়ে,যতই এড়িয়ে চল ! আমি তবু বলি ,বলব , বলছি, শোনো, ভালোবাসি ভালোবাসি ! #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2LhNuwG

Sunday, 28 April 2019

#৪৮কবিতা “নীল শাড়ি তে খোলা চুলে আমার হাত ধরে হাটবে তুমি, অনেক বাতাসে যখন তোমার চুল তোমার মুখে এসে পরবে, তখন পরম মমতায় মুখ থেকে চুল গুলো সরিয়ে দিব আমি। তোমার সুন্দর নিষ্পাপ মুখ টা আলতো করে ছুঁয়ে দিব লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখের পানে । মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকব । আর তুমি আমাকে তোমার অদ্ভুত সুন্দর নিষ্পাপ হাসি উপহার দিবে। যে হাসিতে ফুটবে ফুল আর মুক্তো ঝড়বে । হারিয়ে যাব আমি সেই হাসি তে... আর পরম আদরে নুপুর পড়িয়ে দিব আমি তোমার পায়েতে । তুমি হাঁটবে আর আমি শুনবো তোমার নূপুরের ধ্বনি কান পেতে ! তোমার সুন্দর পা গুলোতে সুন্দর নুপুর বাজবে, আনমনে তাকিয়ে থাকবো আমি। হঠাৎ করেই তুমি জড়িয়ে ধরবে আমায়। আমি বলব এই দেখে ফেলবে তো কেউ করছ এ কেমন পাগলামি ! তোমার শরীরের মিষ্টি গন্ধ আমার নাকে আসবে। আদরে আদরে শিহরিত হবে তুমি... এলোমেলো বাতাসে কোন এক রাজকন্যার শাড়ির আচল উড়ছে, তা দেখে চাঁদ মামা লজ্জায় পালাবে!! পুরো দুনিয়া অন্ধকার হওয়ার আগেই আরো একটা সুন্দর আলো আমার চোখে ভাসবে, তোমার আলোয় আলোকিত হবে পৃথিবী। ফুল ফুটবে, গান গাইবে পাখি, আকাশে সাত রঙা প্রজাপতির মেলা বসবে।!! অবাক পৃথিবী আশ্চর্য হয়ে তোমার পানে তাকিয়ে থাকবে।... গভীর আবেশে তোমার কোলেই ঘুমিয়ে পরবো আমি। হঠাৎ ঘুম ভাঙবে আমার। আমার রাজকন্যা টাও ঘুমিয়ে গেছে তাকিয়ে দেখবো, । তোমার চুল গুলো নেড়ে দিব এই আমি। তখনই তুমি জেগে উঠবে । ঘুম থেকে উঠেই দেখবে তোমার পাশে একটি লাল গোলাপ!! আমার পক্ষ থেকে গোলাপ টা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাবে। অবাক হয়ে তাকাবে তুমি। গোলাপ টাকে বলবে, কিগো ফুল, সুগন্ধ নেই কেন তোমার? এই অবস্থা হল কি করে? গোলাপ বলবে, কি করে থাকবে সুবাস এক দেশে কি দুই রানী বাস করে???? #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2L85sl8

Saturday, 27 April 2019

#৪৭কবিতা এই যে তোকে যখন বলি, 'জানপাখিটা' আলতো করে অমনি কেন মুখটি লুকাস , বুকের উপড় আছড়ে পরে। বুকের সাথে বুক মিলিয়ে, জাপটে থাকিস শরীর জুড়ে, জানপাখিটা বলতো দেখি তোর কি আমার মতই পরাণ পোড়ে? তুইও কি আমার মতন? ওমন ভাবিস, যেমন আমি? হঠাৎ করে পড়লে মনে বাড়ে বুকের ধুকধুকানি হাজার প্রজাপতি উড়ে, তোরও কি পেটের উপর? জানপাখিটা বলতো দেখি তোরও কি শুন্য লাগে বুকের ভিতর? ঝুম বর্ষার বিকেল বেলায়, দাড়াস কি তুই গ্রীল ধরে? আমায় ভেবে দিস ছুঁয়ে কি , বৃষ্টি ফোটা হাত বাড়িয়ে? জল জমে কি কারন ছাড়াই , আমার মতই চোখের আঁড়ে? রাগবি কি তুই জানপাখিটা ডাকি যদি জনম ভরে। #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2GNTBEI

Friday, 26 April 2019

#৪৬কবিতা কাকে ম্যাসেজ দিব । কার কাছে জানতে চাইবো কেমন আছ? সবাই তো ব্যস্ত ।ভিষন ব্যস্ত । ম্যাসেজ দেখার ই সময় পায়না । আনসীন ই থেকে যায় প্রতিটি ম্যাসেজ । শুধু শুধু তাদেরকে বিরক্ত করা হয়ত । কাকে বলবোঃ কয়েক সেকেন্ড কথা বলতে চাই । ফোনটা একটু খোলারেখো ! সবাই যে আমার উপর বিরক্ত। তবে তাদের ফোনটা খোলাই থাকে শুধু কল দিলেই ডিসপ্লেতে ভেসে আসে ওয়েটিং বা শুনতে হয় সে এখন ব্যস্ত । এখন আর কেউ ফ্রী থাকতে চায় না । সবাই একটু কথা বলতে চায় । জমিয়ে আলাপ করতে চায় কিম্বা আড্ডায় অভ্যস্ত । তাই একাকি একরুমে আবদ্ধ পড়ে থাকি । এমন তো কেউ নেই!! কার নরম হাত ধরে একটু ঘুরতে চাইবো ?? #সাইকো


via Facebook http://bit.ly/2VvpDNZ

#৪৬কবিতা কাকে ম্যাসেজ দিব । কার কাছে জানতে চাইবো কেমন আছ? সবাই তো ব্যস্ত ।ভিষন ব্যস্ত । ম্যাসেজ দেখার ই সময় পায়না । আনসীন ই থেকে যায় প্রতিটি ম্যাসেজ । শুধু শুধু তাদেরকে বিরক্ত করা হয়ত । কাকে বলবোঃ কয়েক সেকেন্ড কথা বলতে চাই । ফোনটা একটু খোলারেখো ! সবাই যে আমার উপর বিরক্ত। তবে তাদের ফোনটা খোলাই থাকে শুধু কল দিলেই ডিসপ্লেতে ভেসে আসে ওয়েটিং বা শুনতে হয় সে এখন ব্যস্ত । এখন আর কেউ ফ্রী থাকতে চায় না । সবাই একটু কথা বলতে চায় । জমিয়ে আলাপ করতে চায় কিম্বা আড্ডায় অভ্যস্ত । তাই একাকি একরুমে আবদ্ধ পড়ে থাকি । এমন তো কেউ নেই!! কার নরম হাত ধরে একটু ঘুরতে চাইবো ???


via Facebook http://bit.ly/2Vs82X8

Thursday, 25 April 2019

#৪৬কবিতা ছেলেটা কথা দিয়েছিলো বিয়ের সময় তোমায় নীল শাড়ী পরিয়ে বিয়ে করব। লাল আমার কেমন যেন লাগে...! অফিস থেকে আসার সময় তোমার জন্য প্রতিদিন বেলি ফুলের মালা নিয়ে আসব। মেয়েটা বলেছিলো, নীল শাড়ীর সাথে কানের দুল গুলাও থাকবে নীল সে আর কখনো চুল ছোট করবে না… লম্বা চুলে খোপা করবে… সেই খোপাতে অফিস ফেরত ছেলেটা ফুলের মালা গুঁজে দিবে, ভালোবাসায় সংসারটা হয়ে উঠবে স্বপ্নিল । মেয়েটা ঠিক করে রেখেছিলো তাদের একটা ফুটফুটে কন্যা সন্তান হলে তার নাম কি রাখবে। সপ্তাহের কোন দিন কে মশারি টানাবে আর কে মশারি গুজবে! বসন্তের কোন এক বিকেলে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে শক্ত করে হাতটা ধরে তারা ঠিক করেছিলো, জোছনা রাতে তাদের বিয়ে হবে। চোখ বুজে ছেলেটা ভাবতোঃ বিয়ের রাতে জানালা দিয়ে চাঁদের আলো যখন মুখে এসে পড়বে, নীল টুকটুকে শাড়িতে মেয়েটাকে তখন নীল পরীর মত লাগবে!! অতঃপর, জোছনা রাতেই মেয়েটার বিয়ে হয়েছিলো… তবে নীল শাড়ী নয়, সে লাল শাড়ী পরেছিল তবে সেই শারিতেও তাকে সেদিন পরীর মত লাগছিল। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি, নিজের বাড়ি আছে, অমুক ভার্সিটি থেকে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হ্যান্ডসাম, , হাই ফাই ফ্যামিলি” – নামক কয়েকটা শব্দের সাথে মেয়েটার সেদিন বিয়ে হয়েছিলো মেয়েটা এখন বেঁচে আছে… হয়তো ভালোই আছে… তবে লম্বা চুলে খোপা করার সময় তার হাত কাঁপতে থাকে … রাস্তার পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখলে তার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসে কেন জানি… বেলি ফুলটা এখন ঘৃণার কাতারেই আছে । ছেলেটা এখন কোথায় আছে, কেমন আছে – কেউ জানে না। হয়তো ভালোই আছে! বসন্তের বিকেলে তার বুকের ভেতরটায় খুব যন্ত্রণা হয় … জোছনা রাতে তার চোখে অমাবস্যা নামে। কেউ জানেনা বুকের ভেতর কতখানি জমিন ফাকা হয়ে গেছে। #from Nil Dairy march18


via Facebook http://bit.ly/2IXanTx

Wednesday, 24 April 2019

[ইনবক্স_ থেকে ] আজকাল আর বেলা করে ঘুম ছাড়িনা, ঘুম জড়ানো চোঁখ দুটো আজকাল কাউকে দেখাই না ৷ এখন আর একলা বসে গান শুনিনা, কাল-পরশুর জন্য আর জমিয়ে রাখিনা কিছু ৷ আজকাল নিজের সাথে খুব একটা থাকিনা ৷ একলা বসে নিবিড়ভাবে বই পড়িনা ৷ ক'যুগ হলো, এখন আর রংধনুটা রং করি না ৷ বসার ঘরে কেউ আসলে একটু কড়া চা করে দিই ৷ এখন আর আগের মতো চুপ থাকিনা ৷ ইদানীং সবার মাঝে আসন পেতে মুভি দেখি, ক্যানভাসটা খালিই থাকে, এখন আর রঙ করি না ৷ এখন আমি সময় নিয়ে পেপার বিলের হিসেব কষি, হেডফোন জুড়ে মাতাল হয়ে গান শুনি না ৷ পড়ার মধ্যে আজকাল শাড়ীটাই বেশ গুছিয়ে পড়ি , এখন আর বই পড়ি না ৷


via Facebook http://bit.ly/2GCzxEe